পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o ২য় সংখ্যা ) । এই যুবক অর্থাভাবে আত্মহত্যা করতে চায়, তবু তার অযাচিত দান গ্রহণে তার আপত্তি ! আত্মীয়ের কাছে হাত পাত তেও এ নারাজ ! ইঁ, একেই বলি মানুষ !-- * * * * * * কিন্তু কথায় নিজের মনের ভাব প্রকাশ না ক’রেই বিনয়-বাৰু বললেন, “বেশ, আমার টাকা তুমি নিও না। কিন্তু আমার বিশেষ অনুরোধ, এখন দিন-কয়েক তুমি বিছানা ছেড়ে উঠে না আমার জন্তেই তোমার এই দশা হয়েচে—তোমার ভাল-মন্দের জন্যে আমিই এখন দায়ী ।” রতন বললে, “আচ্ছা।” ۳ میبیسی —“আমি এখন চললুম, বেলা হোলো, রোগীর। আমার অপেক্ষায় ব’সে আছে।”—এই ব'লে বিনয়-বাবু মেয়েদের নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন । রতন বসে বসে আনমনে কি ভাবতে লাগল। ..... তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার শুয়ে পড়ল। তিন স্বমিত্রার কাছে রতন একটি নতুন মানুষের মতন দেখা দিলে । জীবনে আমরা নতুন মানুষ হয়তে রোজই দেখি । কিন্তু তারা শুধু নামেই নতুন । বিশগজ থান থেকে কেটে-নেওয়া একইঞ্চি নমুনা দেখলেই যেমন সমস্ত থানটা দেখা হয়, আমাদের এই নিত্য-দৃষ্ট নতুন লোকগুলিও অনেকটা সেইরকম--তারা প্রত্যেকেই সাধারণ ও বৃহৎ মনুষ্য-জাতির এক-একটি টুকরো নমুনামাত্র ; কারণ অধিকাংশ স্থলে তাদের একজনকে দেখলেই আর-সকলকে দেখা হয় । বয়সে তরুণী হলেও সুমিত্রা বেশ বুঝলে যে, তার-দেখা আর আর নতুন লোকের সঙ্গে রতনের ঠিক তুলনা চলে না, এই লোকটি বাস্তবিকই একটু নতুন ধরণের । এ লোকটি খেতে না পেয়ে জলে ডুবে মরুতে যায়, তবু নিজের মামার সাহায্যও নেয় না ! এর এই গরিবান চালে বীরত্ব আছে, গৰ্ব্ব আছে, শক্তি আছে—আরপাৰ্চজনের চরিত্রে যার অত্যন্ত অভাব ! তারপর, রতনের কথাবার্তা কইবার ভঙ্গী, তার c१ेर्ने-छंल ՀՀ:s AMA AMAAAMMMMA SAMMMMMAMAMMMAAAS হতাশ দুঃখের স্বর, এত বিপদেও তার স্থির প্রশান্ত नृ8ि, এগুলিও স্বমিত্রার মনের ভিতরে গিয়ে স্পর্শ করেছিল। পরের দিন সুমিত্রার সামান্ত একটু জর-ভাব হ'ল। তাই সেদিন সে মা আর দিদির সঙ্গে বেড়াতে বেরুল না। বিকাল-বেলায় একলাটি বসে থাকতে থাকৃতে হঠাৎ তার মনে একটা আগ্রহ হ’ল, রতন কেমন আছে দেখে আস্বার জন্তে । স্বমিত্র রতনের ঘরে ঢুকে দেখলে, সে চুপ ক’রে চোখ মুদে শুয়ে রয়েছে, তার বুকের উপরে একখানা খোলা বই ....সুমিত্রার পায়ের শব্দে রতন চোখ খুললে । সুমিত্র বললে, “এই অবেলায় ঘুমোবার চেষ্ট করচেন ?” রতন লজ্জিতভাবে তাড়াতাড়ি উঠে ব’সে বললে, “ন, আমি একটানা বই পড়তে পারি না, মাঝে মাঝে পড়ি আর মাঝে মাঝে চোখ মুদে ভাবি।” —“ওখানা কি বই ?” —"Russia: From the Vasangians to the Bolsheviks.—আপনার বাবার কাছে থেকে চেয়ে নিয়েচি ।” সুমিত্রা বললে, “আপনার ও-সব বই ভালো লাগে?” রতন বললে, “হ্যা, খুব ভাল লাগে । এখন এই-সব বইই তো আমাদের পড়া উচিত। রুসদেশের সঙ্গে আমাদের ভারতবর্ষের ভারি একটা মিল আছে। দুই-ই কৃষিপ্রধান দেশ, আর দুই দেশই উচ্চ সম্প্রদায়ের অত্যাচারে জর্জরিত। আমার বিশ্বাস, এসিয়ার মধ্যে সব-চেয়ে আগে ভারতের লোকরাই বোলশেভিক হয়ে উঠবে।” * সুমিত্রা বললে, “আমার কিন্তু ও-সব বই ভালো লাগে না । আমার খালি কবিতা গল্প আর উপন্যাস পড়তে ভালো লাগে। বাঙলা বই তো সব শেষ ক’রে ফেলেচি বললেই চলে, ইংরিজী গল্পের বইও অনেক পড়েচি * —“কার লেখা আপনার বেশী ভালো লাগে?”