পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করে, কাজেই মানসিক দারিদ্র্য অনেক সময় বাহাবস্তুর প্রাচুর্ঘ্যকে চাপা দিয়ে কোন কোন জাতির বা সংঘের স্থখস্বাচ্ছন্দ্য কমিয়ে দিতে পারে ;–পরিমেয় স্বচ্ছন্দ্য অপরিমেয় স্বাচ্ছন্দ্যকে নানাভাবে কমাতে বা বাড়াতে পারে । প্রথমতঃ, পরিমেয়ু স্বাচ্ছন্দ্য কি ভাবে উপার্জিত হচ্ছে তার উপর অপরিমেয় স্বাচ্ছন্দা অনেকটা নির্ভর করে । কেন না, পারিপাশ্বিক অবস্থার উপর মানুষের জীবনের উৎকর্ষ বিশেষরূপে নির্ভর করে । মানুষ কি কাৰ্য্য করছে, অনেকটা তার উপর মনের উৎকর্ষ নির্ভর করে। ভৃত্য, কৃষক, সৈনিক, সঙ্গীতাচাৰ্য্য, অধ্যাপক ও স্বদখোর মহাজন, এদের সকলেরই মনের অবস্থা এদের জীবিকার দ্বারা অনেকটা স্থিরীকৃত হয়ে থাকে। যে সমাজের সকল লোকেরই মনের অবস্থা দাসব্যবসায়ী অথব। জহলাদের মত, সে সমাজের উৎকর্ষ সম্বন্ধে কিছু না বলাই stø 1. vitāt; HING HỌsig (Industrial revolution) গোড়ার থেকে শ্রমজীবীকে অনেক সময় তার পরিবার ছেড়ে কারখানায় থাকৃতে হচ্ছে। এতে তার পরিমেয় স্বাচ্ছন্দ্য ( মাহিনী বা উপার্জিত বস্তুর পরিমাণ ) বেড়ে থাকলেও, নিজের পরিবারের সঙ্গচু্যত হওয়ায় বা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও খোলা হাওয়ার অভাব অনুভব করায়, তার অপরিমেয় স্বাচ্ছন্দ্য অনেকটা কমে এসেছে। অবশু্য অনেক দেশে শ্রমজীবীদের জন্য বিদ্যালয়, চিত্রশালা, ক্রীড়াক্ষেত্র প্রভৃতি করা হয়েছে এবং তাদের কাজ করবার নির্দিষ্ট সময় বেশ কম বলে’ অনেক ক্ষেত্রে এতে তারা অনেক বেশী স্বাচ্ছন্দ্য লাভ করেছে। কিন্তু আমাদের দেশের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। মনের উৎকৰ্ষ সাধনের বন্দোবস্ত থাকা ত দূরের কথা, শ্রমজীবীদের অবস্থা সবদিক দিয়েই এদেশে অত্যন্ত শোচনীয়। এসব ছেড়ে দিলেও আরো দেখবার আছে। মানুষ যদি একটা বিশাল যন্ত্রের অংশরূপে কাজ করে অর্থাৎ তার ব্যক্তিত্ব যদি একটা যন্ত্রের আড়ালে একেবারে চাপা পড়ে যায়, তা হ’লে তার মানসিক অবনতি হয়। কাজেই বৰ্ত্তমান যুগে সৰ্ব্বত্রই শ্রমজীবীদের যতদূর সম্ভব বড় বড় কারখানার বাইরে রেখে কাজ চালাবার চেষ্টা হচ্চে । মানুষ ছো শুধু হস্ত উৎপাদলের উপাঙ্ক মাত্র লক্ষ্ম, বরং ভাল উদ্দেশ্যই, এ কথাটা আজ চিন্তাশীল জগৎ বুঝেছে। ফুলের বাগান করতে গিয়ে যদি নিজেই অন্ধ ও ভ্রাণশক্তিরহিত হয়ে যেতে হয়, তা হ’লে বাগান করে’ লাভটা কোন খানে ? বস্তু উৎপাদনার্থে মামুষে মামুষে কি প্রকার সম্বন্ধ স্বট হয়, তাও সামাজিক স্বাচ্ছন্দ্যের দিক্‌ থেকে জানা প্রয়োজন। উৎপাদনের যে প্রণালী অবলম্বনের ফলে দারুণ প্রতিযোগিতা জন্মে, তাতে বস্তু উৎপাদন বেশী হ'লেও সামাজিক সম্ভাব কমে যাওয়ায় সামাজিক স্বাচ্ছদ্যও কমে' যায়। এ স্থলে সে প্রণালীর পরিবর্তে সমবায় (Cooperation ) অবলম্বনে অনেক লাভ আছে । সামাজিক জীবনের উৎকর্ষ ব্যক্তির হৃদয়বৃত্তিগুলির উপর বিশেষভাবে নির্ভর করে। কোন একটা স্বরের সৌন্দৰ্য্য বা তাহার অভাব যেমন স্বরের অংশগুলির পরস্পরের স্বনিয়ন্ত্রিত সম্বন্ধের বা তার অভাবের উপর নির্ভর করে, তেমনই মামুষের সামাজিক জীবনের সৌন্দৰ্য্য বা কদৰ্য্যতা সমাজমধ্যস্থ ব্যক্তিদিগের পরস্পরের সম্বন্ধের উপর নির্ভর করে । এদিক থেকে দেখলে ধনিক ( capitalist ) ও শ্রমিকে (labourer ) ঝগড়া একটি বিশাল সমস্তা। দ্বিতীয়তঃ, উপার্জিত পরিমেয় স্বাচ্ছন্দ্য লাভের উপকরণ কিভাবে ভোগ করা হয়, তার উপরও অপরিমেয় ও তৎসঙ্গে সামাজিক স্বাচ্ছন্দ্য অনেকটা নির্ভর করে। অত্যধিক মদ খাবার জন্য যদি কিছু ব্যয় করা যায়, তা হ’লে তার ফল, লেখা পড়া শেখার জষ্ঠ্য বা পুস্তক ক্রয় করার জন্য ব্যয় করার ফলের চেয়ে অনেক খারাপ হবে । দুষ্ট আমোদ-প্রমোদে কিছু ব্যয় করা এবং উচ্চশ্রেণীর সঙ্গীত শ্রবণে সেটুকু ব্যয় করায় অনেক প্রভেদ । রাজস্ব যদি চিত্রশাল, বিদ্যালয়, প্রদর্শনী প্রভৃতি রক্ষার্থে ব্যয়িত হয়, তবে তাতে সামাজিক জীবনের উপর এক প্রকার ফল হয় ; আর যদি তা ঘোড়-দৌড়ের মাঠ বা জুয়া-খেলার কাসিনো নিৰ্ম্মাণার্থে অথবা নীচ ও অসভ্য লোককে সৈনিকের পোষাক পরিয়ে নিরপরাধীকে উত্যক্ত করে' ব্যয়িত হয়, তবে তার ফল হয় অপর ও নিকৃষ্ট প্রকারের। শরীর সুস্থ সবল ও মন উন্নত প্রফুল্ল এবং