পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মনসবদারের পাগড়ি তুলিয়া লইয়া কহিল, "সাহেব, বানরের লেজ দেখিয়াছ ?” মনসবদার পুণ্ডরীকের স্কন্ধ লক্ষ্য করিয়৷ আঘাত করিলেন । তরবারি তাহার নিজের পাগড়িতে জডাইয়া গেল। পুণ্ডরীক কহিল, “আগে লেজ গুটাইয়। লও, তাহার পর যুদ্ধ।” যুদ্ধ অল্পক্ষণ হইল। দুই চারিবার অসি চালনা হইতেই পুণ্ডরীক মনসবদারের মাথ। কাটিয়া ফেলিল । মনসবদার নিহত হইয়াছেন দেখিয় তাহার সৈন্য রণে ভঙ্গ দিয়া পলায়ন করিল। দ্বাত্রিংশ পরিচ্ছেদ মুক্তি ও বন্ধন বিহারীলালের বাগানবাড়ীতে একটি ঘরে এক। বসিয়া গৌরীশঙ্কর ৷ জয়ন্তী আসিয়া তাহু!র সম্মুখে দাড়াইল । গৌরীশঙ্কর কহিলেন, “এই যে জয়ন্তী । কিছু বলিবার আছে ?” “আজ্ঞে, হা। এখন ত নুতন বাদশাহ হইলেন, সুবাদার ও মনসবদার ও নূতন । আমরা যে 2 করিয়াছিলাম তুহে। কি উদ্যাপিত হইয়াছে ?" “আমাদের আর কোন কৰ্ম্ম নাই, সকলকে ইচ্ছামত ংসার-আশ্ৰমে ফিরিয়া যাইতে অল্পমতি দিয়াছি।” “আমার সম্বন্ধে কি স্থির কুরিলেন ?" “কেন, তুমি যেমন আমার কন্যার মত আছ সেই রকম থাকিবে । আর তোমাকে বনে বনে প্রমণ করিতে হইবে না।” জয়ন্তীর হস্তে একটা গোলাপ-ফুল ছিল, সে তাহার পাপড়ী ছিড়িতে লাগিল, মুখে আর কথা নাই । গৌরীশঙ্কর কহিলেন, “দাড়াইয়া রহিলে নে ? আর কিছু বলিবার থাকে ত বল না কেন ?” জয়ন্তী কহিল, "যেমন আছি তেমনি থাকিব ? সংসার-আশ্রম কি আমার পক্ষে নিযিদ্ধ ?" “কে বলিল ?” "না, তাহাই বলিতেছিলাম.।” 3ー প্রবাসী-- আধাঢ়, 〉○○● [ ২৩শ ভাগ, ১ম খণ্ড, “তোমার মনে কি আছে স্পষ্ট করিয়া বল না কেন ? গোপন করিবার প্রয়োজন কি ?” জয়ন্তী নীরব। সে ফুলের পাপূড়ী ছিড়িতেই নিযুক্ত। গৌরীশঙ্করের মুখে হাসি দেখা দিল। কহিলেন, "বিহারীলাল বাহিরে আছেন ?" “আছেন।” “র্তাহাকে ডাক ৷” জয়ন্তী বিহারীলালকে ডাকিয়া আনিল। দুইজনে পাশাপাশি গৌরীশঙ্করের সম্মুখে দাড়াইল । গৌরীশঙ্কর কছিলেন, “বিহারীলাল, তুমি জয়ন্তীর পাণিগ্রহণ করিতে চাও ?” “আপনার অল্পমতির অপেক্ষা ।” “তোমরা দুইজনে পরস্পরের প্রতি অতুরক্ত, অল্পমতির অপেক্ষা কেন ?” “আপনি জয়ম্বীর পিতৃস্থানীয় ।” “সত্য কথ} শুন বিহারীলাল । আমার ইচ্ছাতেই তোমাদের দুইজনের সাক্ষাং হয় । জয়ন্তী সৰ্ব্বাংশে তোমার উপযুক্ত ভাৰ্য্যা । জাতিতে, কুলে, শীলে তোমার সমান । তুমি বীর, জয়ন্ত্রী বীররমণী, আশীৰ্ব্বাদ করি দুই জনে চিরস্বর্থী হও ।” ত্রয়স্ত্রিংশ পরিচ্ছেদ কালচক্র গিরনার পর্বতে একটি গুহার সম্মুখে বসিয়া দুই ব্যক্তি—বালানন্দজী ও গৌরীশঙ্কর ৷ পূৰ্ব্বাকাশে অরুণোদয় হইয়াছে । : গৌরীশঙ্করকে স্বাগত জিজ্ঞাসা করিয়া বালানন্দঞ্জী কহিলেন, “প্রজার সেবা কি পূর্ণ হইল ?” “এ কাৰ্য্যের পূর্ণতা নাই, তবে আপাততঃ ত আর কিছু করিবার নাই, অনুমতি হয় ত আমিও নিকটে কোথাও কুটীর নিৰ্ম্মাণ করিয়া বাস করি।” “অতি উত্তম কথা । কৰ্ম্মক্ষেত্র হইতে অবসর লইয়া পরমার্থ চিন্তা কর।” - “আপনার যেরূপ আদেশ আমার নিজেরও সেইরূপ অভিরুচি । এই পুণ্যভূমির ভবিষ্যতে কি হইবে, কবে