পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] একটু পীড়াপীড়ি করিলে বিমলা কি করিত বলা যায় ন, কিন্তু তাহার অবসর পাওয়া গেল না। স্বরের পথে সৰn ঘনাইয়া আসিবার পূর্বেই স্বরকির পথে অন্বরের মত এক মূৰ্ত্তি সহসা কোথা হইতে তাহাদের সম্মুখে উপস্থিত হুইল এবং আনত হইয়। সকলকে দীর্ঘ সেলাম করিয়৷ বিমানকে বলিল, “বাবুজী কুছ চন্দা দিন ।” পরীর রাজ্যে প্রেতের মত সহসা এই মূৰ্ত্তির আধিভাবে মোহাবেশটা এক মুহূৰ্ত্তেই ছিন্ন হইয় গেল ! প্রথমট চারিজনেই ভীতিবিহ্বল হইয়। নিৰ্ব্বাক্-বিস্ময়ে ক্ষণকাল চাতিয়া রহিল ; তাহার পর বিমানবিহারী একটু সংযত হইয়া কহিল, “কিসের চাদ। " সেই যমদূতের মত মূৰ্ত্তি একবার ইতস্ততঃ দৃষ্টিক্ষেপ করিয়া কহিল, “হিন্দুস্থানের জন্য ; স্বরাজের জন্য ।” হিন্দুস্থানের বেদনায় বিদ্ধ কোন স্বদেশসেবক সন্ধ্যাসমাগমে হঠাৎ বোটানিকাল গার্ডেনের নিভৃত প্রদেশে উপস্থিত হইল এবং কি অধিকারে কোন সমিতির পক্ষ হইতে সে চাদ। চাহে, এই প্রকার বহুবিধ কৈফিয়ত তলব করা যাইতে পারিত । তাহ ছাড়া, সন্তোষজনক কৈফিয়ত থাকিলেও, যেখানে-সেখানে যখন-তখন স্বদেশসেবার জন্য চাদ দিবার প্রকৃতি বা প্রবৃত্তি বিমানৰিহারীর ছিল না । তথাপি চাদাসংগ্রহকারীর নিকষরুষঃ দীর্ঘ বলিষ্ঠ দেহের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়৷ সে-সকল বিষয়ে বাদানুবাদ করিতে তাহার প্রবৃত্তিান হুইয়। সহজে তাহার হস্ত হইতে উদ্ধার পাইবার ইচ্ছা হইল। ভাই আর কোন ও বিতণ্ড ন৷ করিয়া পকেট হইতে মনিবাগ বাড়ির করিয়া বিমান একটি টাকা দিতে গেল । “আপনি রাজা মানুষ, একটাক কি দিবেন ? বলিয়া নিমেষের মধ্যে সেই ব্যক্তি বিমানের হস্ত হইতে মনিব্যাগট কাড়িয়া লইয়। নিজের বুক-পকেটে নিক্ষেপ করিল। তাহার পর মুমিত্রার দিকে ফিরিয়া কহিল, “মায়ী তুমি কিছু দান করবে না ? তোমার হারটি খুলিয়া দাও মায়ী, তোমার বহুত বহুত পুন্‌ হোবে। • : স্বমিত্রার কণ্ঠে একটি বহুমূল্য জড়োয় কষ্ট ছিল অবস্থাষে অতিশয় বিপজ্জনক তাহা বুঝিতে কাহারও বিলম্ব হইল না। স্থমিত্ৰ ভয়ে বিবর্ণ হইয়া অন্ধুটোক্তি রাজাখ: ుల করিয়া উঠিল, এবং बियन डशक्कर कै-**निर्भ পুলিশ বলিয়া চিৎকার করিতে লাগিল । - তখন সেই গুগু বিমানের দিকে ফিরিয়া কহিল, “কেন বাবুসাহেব, ঝুটফুল হুজোং কৰ্বছ ? হামি সিটি দিয়ে দিলে তুরন্ত হামার তহশীলদার খজাঞ্চি সব হাজির হোয়ে যাবে, তখন তোমাদের বহুত তথলিফ, ছোবে । পুলিস বাগিচায় আজ আছে না।” বলিয়। দুবৃত্ত উচ্চস্বরে হাস্য করিয়া উঠিল । সেই বিকট হাস্যরবে স্তন্ধ বাগান চকিত হুইয়া উঠিল এবং দুৰ্ব্বহু আশঙ্ক ও চিন্তায় বিমান ও তাহার সঙ্গিনীগণের কণ্ঠ রুদ্ধ ৪ হৃদয় অবগল্প হইয়৷ আসিল । - , “তুমি যদি খুসিসে'ন দিবে মায়ী, হামি আপনি উৎরিয়ে লেবে ।" বলিয়া দস্থ্য স্বমিত্রার কণ্ঠ হইতে স্থার উন্মোচিত করিতে উষ্ঠত হইল। কিন্তু ঠিক সেই সময় তথায় আর-এক ব্যক্তি দ্রুতপদে উপস্থিত হইল ; যে পুলিশও নহে অথবা গুণ্ডার খাজাঞ্চি তহশীলদ্বারও নহে; অল্পবয়স্ক একটি বাঙ্গালী যুবক । , * , . সে আসিয়া একেবারে গুগু ও মুমিত্রার মধ্যবর্তী হইয়া গর্জন করিয়া উঠিল, “খবরদার শয়তান ! স্ত্রীলোকের গায়ে হাত দিয়ে না।” • • এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় দক্ষ্য ক্ষণেকের জন্য বিহ্বল হইয় পড়িল, কিন্তু পরক্ষণেই মহুস বম্বমধ্য হইতে বৃহৎ শাণিত ছুরিক বাহির করিয়া নবাগতকে আঘাত করিতে উষ্ঠত হইল। কিন্তু সেই যুবক অদ্ভুত কৌশলে ছুরিকাঘাত হইতে নিজেকে রক্ষা করিয়৷ ক্ষিপ্রবেগে গুগুর পশ্চাৎদিকে সরিয়া গিয় তাহাকেই আক্রমণ করিল । তাহার. পর ক্ষণকালের জন্য কাড়াকড়ি মারামারি একটা ভীষণ ব্ল্যাপার চলিল। অবশেষে উভয়ে পরস্পর দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ হইয় সশব্দে ভূমিতে পড়িয়া গেল। প্রথমটা সন্ধ্যার অস্পষ্ট আলোকে কিছুই বুঝা গেল না। কিন্তু ক্ষণকাল পরে সহসা নবাগত যুবক গুণ্ডার হস্ত হইতে ছুরি কড়িয়া লইয়া দূরে নিক্ষেপ করিয়া তাহার বুকের উপর উঠিয়া বসিল এবং তাহার গ্রীবা সবলে চাপিয়া ধরিয়া কহিল, “সাবধান ! জোর করলেই গল টিপে মেরে ফেল্ব।” তৎপরে গুণ্ডার গাত্রাবরণের কিয়দংশ তাহার মুখগহ্বরে পূরিয়া দিয়া