পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] v یح۹* পদক্ষেপে ভৈরব ঘরটাতে প্রবেশ করিল। প্রিয়নাথ চাপ গলায় বলিয়া দিল, “খবরদার, ও বেটাকে বলিস নি যেন ষে তোর ঘরে দোরে ঢোকা মান ।” মৰ্ম্মস্থলে আহত হইয়া---কি-একরকম হইয়া গিয়া ভৈরব বলিল “ও জানে।" . (*) ভৈরব যে তাহার অনুমতির বিরুদ্ধেও আসিয়াছে প্রিয়নাথ ইহার জন্ত তাহাকে কিছু বলিল না। দূরবিদেশে অবসর সময়ে দু'টো কথা কহিবার লোক জুটিল, ইহাতে সে বেশ নিশ্চিন্ত হইল। পূর্বেই ভাবিয়াছিল একটু পসার জমাইয়া বসিতে পারিলে ভৈরবে কি অন্ত কাহাকেও তাহার পেয়াদা করিয়া কেতা-দুরপ্তভাবে থাকিবে । এখন ভাবিল-এই ঠিক হইয়াছে ; ডাক্তার, উকিল প্রভৃতির কায়দাটাই আগে, না ইলে পসার জমে না। সমস্তদিন উর্দি চাপরাস্ জড়াইয়া বসিয়া থাকিলেও ভৈরবকে কাজ বেশি করিতে হইত না । প্রিয়নাথের সহিত যথাসময়ে আফিসে যাইত, ঘরের চৌকাঠে ঠেস দিয়া বসিয়া বসিয় ঝিমাইত— এবং কালে ভদ্রে প্রিয়নাথের দু’একটা ডাক পড়িলে বিশেষ উৎসাহের সহিত ব্যাগট হাতে করিয়া ও ছাতাটা ডাক্তার-বাবুর মাথায় ধরিয়া চাকরীর ও ফলতঃ নিজের জীবনটার সফলতা অতুভব করিত । সেরূপ দিন গুল তাহার দেমাকে কাটিত । কয়েকট মাস এইরূপে কাটিল । ইহার মধ্যে প্রিয়নাথ একবার ছুটি লইধ দেশে আসিয়াছিল। তাহাতে ভৈরবের গ্রাম-সমক্ষে নিজের পদগৌরব ও রোগমুক্ত সবল স্বস্থ দেহটা দেখাইবার অনেক দিনের সাধটা পূর্ণ হইয়াছিল। ফিরিবার সময় বিষয়-সম্পর্কে তাহার কিছু বিলম্ব হওয়ায় প্রিয়নাথ একৃলাই ফিরিয়াছিল। মাস খানেক পরে ভৈরব যখন ফিরিল, দেখিল তাহার কৰ্ত্তব্যের একটু বৃদ্ধি হইয়াছে। প্রতি ২৩ দিন অন্তর তাহাকে সদরে যাইতে হইবে । সিভিল সার্জন মিঃ রয়ের বাঙলাতে যাইয়া তাহাকে প্রিয়নাথের সেলাম দিতে হইবে এবং মিস্ রয়ের নিকট ফুলের তোড়া পহু চাইতে হইবে । রবিবারে রবিবারে প্রিয়নাথ স্বয়ংই হাজরী দেয় এবং সমস্ত সপ্তাহ ধরিয়া এই দিনটির জন্য বিশেষ আয়োজন চলিতে থাকে। ভৈরবে AMAMeA AeMAMeAMAMeMMAMAMMAMAMA SAeAMAMS MMAMA MAMAMAM MAMAMAMAMAMAMAeAAA AAAA AAAASASASS ❖&ፃ ভৈরব আন্দাজে আবছাওয়া আবছাওয়া যাহা একটু বুঝিল, চাকর-খানসামার সঙ্গে মিশিয়া তাহা বেশ স্বম্পষ্ট করিয়া লইল । প্রথম একট। তীব্র চোট খাইল ; এবারে বাড়ীতে বিবাহের কথা উঠিলে প্রিয়নাথ গুছাইয়া উঠবার অছিলায় তাহা স্থগিত রাখিয়া আসিয়াছে, আর এখানে এই বিজাতীয় ব্যাপার! একেবারে ক্রিশচীনের সহিত বিবাহ ! মাথাভার, বুকব্যথা প্রভৃতির ভাণ করিয়া সে, ৩.৪ দিন ফুল পহু ছান বন্ধ দিল, কিন্তু দেখিল যে এরূপ করায় সে যাহা ভোগ করিতেছে তদপেক্ষ চতুগুণ যন্ত্রণায় ‘বামুনদ’ অস্থির হইয় পড়ে। সমস্ত দিনে আহার একরূপ করেই না, কল আসিলে “বাবুর অসুখ" বলিয়া ফিরাইয়৷ দিবার আদেশ ভৈরবের উপর থাকে ; শুধু মিস্ সাহেবের জন্য কেন। পুষ্পরাশি ও মিস্-সাহেব-প্রদত্ত কুকুরটার সহিত সমস্ত দিনটা কাটাইয়া দেয় । ভৈরব ধৰ্ম্ম ও সমাজের দিক্ দিয়া ব্যাপারটা আলোচনা করিয়া দেখুক্ত আর নাই দেখুক, বামুনদাদার মলিন মুখ দেখা তাহার অসহ্য হইয়া পড়ায় ৩/৪ দিন বাদে আর অনিচ্ছার কোন লক্ষণই প্রকাশ করিল না, পরস্তু পরম আগ্রহসহকারেই এই পুষ্প-উপহার পছছাইবার কৰ্ত্তব্যটা নিজের হাতে উঠাইয়। লইল । ক্রমে তাহার সংস্কার-জাত বিদ্বেষটাও তিরোহিত হইয় গেল। ‘ডাক্তার-দাদার’ প্রেমের পাত্রীর উপর তাহার একটা সহজ সরল ভক্তি ও আত্মীয়ত৷ দিন দিন পরিস্ফুট হইয়। উঠিতে লাগিল। তাহার বৈচিত্র্যহীন জীবনে একজনকে মাত্র সে ভালবাসিয়াছিল—সে প্রিয়নাথ ; এখন তাহার অজ্ঞাতসারে সেই প্রেমপ্রবাহিণীর আর-একটি ধারা এই নারীটির চরণ-প্রাস্তে আসিয়া উচ্ছসিত হইয়! উঠিল । প্রিয়নাথের প্রণয়-ব্যাপারটা যতই ঘোরাল হইয়া আসিতেছিল, স্বদেশবাসী, অল্পভাষী এই ভৃত্যঅভিভাবকটির নিকট প্রিয়নাথ ততই যেন সঙ্কুচিত হইয়া আসিতেছিল । ভৈরব একটু-আধটু লিখিতে পড়িতে পারিত ; কিন্তু সে যে এই কথাট। চিঠির সাহায্যে বাড়ী পহুছিয়া দিবে এরূপ কোন ভয় প্রিয়নাথের ছিল না, ভয় ছিল তাহার ব্যক্তিত্বকে। মুখে রা নাই,