পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্রসঙ্গ বিদ্যাসাগর-ভবন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একমাত্র পুত্র অনেক হাজার টাকা দেন। রাপিয়া পরলোক গমন করেন । তাহার জীবিতকালেই তিনি এই ইচ্ছ। প্রকাশ করেন, যে, দেন। পরিশোধের কোন উপায় হইলে তাহার পিতার বাসবটটিতে লোকচিতকর কোন প্রতিষ্ঠান স্থাপিত এবং বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নামে তাহ উংসর্গীকৃত হয় । তনি বাচিয়া থাকিতে সেরূপ কোন চেষ্টা হয় নাই । তাহার মৃত্যুর পর তাহার একমাত্র পুত্র ও বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পৌত্র ঐরূপ ইচ্ছা প্রকাশ করেন ; কিন্তু সৰ্ব্বসাধারণের পক্ষ হইতে তদ্রুপ কোন চেষ্ট হয় নাই । স্বতরাং বিদ্যাসাগরভবন নীলামে উঠে । নীলামের ডাকে ৭২,০০০ টাকায় হিন্দুস্থান বে অপারেটিভ ইনসিওরেন্স, কোম্পানী ঐ বট ক্রয় করিয়া রাপিয়াছেন। এক্ষণে সৰ্ব্বসাধারণের পক্ষ হইতে চাদ তুলিয়া বাড়ীটি কোম্পানীর নিকট হইতে কিনিয়া লইয়া উহাতে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রিয় কোন লোকহিতকর প্রতিষ্ঠান স্থাপন করিলে তাহার প্রতি শ্রদ্ধ প্রদর্শনের প্রক্লষ্ট উপায় হয় । কোম্পানী বাড়ীটি কিনিয়া রাখিয় সৰ্ব্বসাধারণকে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রতি কাজের দ্বারা শ্রদ্ধা প্রকাশের স্বযোগ ও সময় দিয়া দেশের সমুদয় অধিবাসীর কতজ্ঞতাভাজন হইয়াছেন । দেশে এমন ধনী আছেন, যাহারা প্রত্যেকে লক্ষ টাকা দিতে পারেন । তাহাদেব কেহ দিবেন কি না, তাহীদের বিবেচনার উপর নির্ভর করে । কিন্তু ভাল কাজে টাকা দিবার ভর ধনীদের উপর অর্পণ করিয়া এবং তাছাদের কৰ্ত্তব্য সম্বন্ধে তাহাদিগকে উপদেশ দিয়া, ও, আবশ্বক মত, কৰ্ত্তব্যে অবহেলা উপলক্ষ্য করিয়া তাহাদিগকে তিরস্কার করিয়া, আমরা কেহই নিজের নিজের কৰ্ত্তব্য হইতে নিস্কৃতি পাইতে পারি না। আগামী ১৩ই শ্রাবণ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য দেশের ছোট বড় শহু গ্রামে নগরে অনেক সভা হইবে । সমুদয় সভার শ্রোতার ংখ্যা মোট এক লক্ষের কম হইবে না । শ্রোতারা বিদ্যাসাগর মহাশয়কে ভক্তি করেন, তাহাতে সন্দেহ নাই—যদিও ঠিক কিসের জন্য করেন, তাহা সকলে হয়ত বলিতে পারিবেন না । তাহীদের মধ্যে প্রত্যেকে যদি গড়ে এক টাকা করিয়া দান করেন, তাহা হইলে এক লক্ষ টাকা অনায়াসে উঠিতে পারে । তা ছাড়া, র্যাহার কোন সভায় যাইবেন না, এমন বহু লক্ষ নারী ও পুরুষ বিদ্যাসাগর মহাশয়কে ভক্তি করেন । র্তাহারাও টাকা দিবেন, আশা করা যায় । আদায় করিবার মানুষ জুটিলে টাকা নিশ্চয়ই উঠিবে। বাড়ীটি বহু বৎসর বেমেরামত অবস্থায় থাকায় ভাল করিয়া মেরামত করা আবশ্যক হইবে ; কোন কোন অংশ ভাঙিয়া গড়া দরকার হইতে পারে। এইজন্য বাড়ীটির মূল্য ৭২,০০০ ছাড়া আরও অনেক হাজার টাকা—মোট এক লক্ষ টাকা আবশ্যক হইবে বোধ হয়। তা ছাড়া, উহাতে যে প্রতিষ্ঠানটি রক্ষিত হইবে, তাহারও ব্যয় নির্বাহের জন্য এমন কিছু মূলধন দরকার যাহার আয় হইতে ঐ খরচ চলিতে পারে। মূলধন কত চাই, তাহা প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃতি এবং ক্ষুদ্রতা বা বিশালতার উপর নির্ভর করবে। বিধবাদের য’হাতে কল্যাণ হয়, এরূপ কোন প্রতিষ্ঠানই বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রতি শ্রদ্ধ প্রদর্শনের জন্য সৰ্ব্বাপেক্ষ উপযোগী । এই বৎসরের বিদ্যাসাগর স্মৃতিসভাগুলির প্রধান কাজ হউক বিদ্যাসাগরভবনটি লোকহিতকর কাৰ্য্যের জন্য ক্রয় করিবার নিমিত্ত অর্থসংগ্রহ। বিদ্যাসাগরভবন বাদুড়বাগানে একটি সংকীর্ণ গলিতে অবস্থিত। তা ছাড়া উহার হাতায় গাছ পালা অনেক । এই কারণে আমাদের জন্য বিশেষভাবে তোলা ছবিদুটিতে বাড়ীটির অল্প অংশই দেখা যাইতেছে।