পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা । ডঙ্কা-নিশান 88) ডঙ্কণ-নিশান তৃতীয় পরিচ্ছেদ --- - সস্তাগার শত্ৰু-সৈন্তের বেড়া জালে ঘেরা রিক্ত সঞ্চয় ক্ষুধাৰ্ত্ত বৈশালীর ইতিকৰ্ত্তব্যতা নিৰ্দ্ধারণের জন্যে সে-দিন ভোর না হ’তেই সস্তাগারের আসন-শাল সস্তু বা সভ্যের দলে প্রায় ভরে উঠেছিল। সূর্য্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাত হাজার সাত শো আসনই প্রায় পুর্ণ হ’য়ে গেল । মুখ্য আসনে মহাসম্মত ধনুগ্রহ, ডান পায়ের হাটুর মাথায় ডান হাতের কচুই রেখে মৃদুস্বরে সন্ত প্রভাস্বরের সঙ্গে কথা কইছিলেন। স্ব ভদ্র, ভদ্রিয়, অন্তরাধ, সহালীন প্রভৃতি প্রধান সন্তের উৎকৰ্ণ হ’য়ে তাদের কথা শুনতে ব্যস্ত। সকলের মুখেই উদ্বেগের চিহ্ন। ধন্থ গ্রহের দক্ষিণে একটি তরুণী সংবহুল-করণ্ডিকা থেকে মান রঙের নাম-গুটিকা বা'র ক’রে রং হিসাবে সেগুলো আলাদ ক’রে রাথ ছিল ; আর র্তার লীয়ে একজন প্রৌঢ়, ভাণ্ডাগরিকের লেখা প্রাত্যহিক খরচের অহোরূপ নামক খাতায় ঠিক্‌ দিয়ে, কোন সামগ্রীর ব্যয় কি পরিমাণে কমানে ধেতে পারে, তারই একটা আঁচ ক’রে দেখছিলেন । সহসা শস্থের সঙ্গে ঢঙ্কা বেজে উঠল। মহাসম্মত ধনুগ্রহ দেখলেন সমস্ত আসন পূর্ণ। কেবল বলগুপ্ত অমুপস্থিত। ভাণ্ডাগারের অবস্থা রিক্তপ্রায় ব’লে সেদিন আসনশালায় গন্ধমাল্য বা কপূরের মালা কিছুই টাঙানো হয় নি। সাত হাজারের মহ-সভায় ধূপ জলছিল মাত্র দুটি । সভার আরম্ভে মহাসম্মত নগর-দেবতা বৈশ্রবণ ও মহাশ্ৰীকে যুক্তকরে প্রণাম করলেন, সঙ্গে সঙ্গে সাত হাজার মাথা অবনত হ’ল । নমস্কার শেষ ক'রে মহাসম্মত সন্ত-মণ্ডলীকে সম্বোধন • ক’রে বললেন, “কুলপুত্ৰগণ । বৈশালীর দুর্জয় কুলসজেঘর আজ ছুর্দিন। অল্পের জন্তে আজ আমাদের শক্রর শরণা পন্ন হ’তে হবে। ইন্ধন এবং খাদ্যের অভাবে আমরা ج - است و S 2) দিন দিন দুৰ্ব্বল হয়ে পড়ছি। নগরে অকাল-মৃত্যু দেখা দিয়েছে, অনাহারে লোকক্ষয় হ'তে স্বরু হয়েছে। তিন মাসের অবরোধে আমাদের সঞ্চিত শস্য ফুরিয়ে এসেছে। বাইরে নগর বেষ্টন ক'রে মগধের সৈন্ত ঘাটি বসিয়েছে। স্বতরাং বাইরে থেকেও খাদ্য পাবার আশা নেই। মগধের পণ্টন মগধ থেকে রসদ পাবে, চার দিকের ক্ষেত লুট ক’রে সেনাভক্ত সংগ্রহ করবে, সুতরাং তিন মাস কেন তিন বৎসরও এখানে ব'সে থাকৃতে ওদের আপত্তি হবে না। আমরা আজ দশদিন কাল একাহারে আছি । অহোরূপের খাতায় প্রত্যহিক খরচের রূপ যা দেখছি তাতে বোধ হয় যে একবেলা অfহারও অীর অধিক দিন জুটুবে না। অন্তপ্রিয়-রাজ্য থেকে শস্ত আসবার কথা ছিল, তাও এল না। পায়রার মুখে খবর পাওয়া গেছে, সে শস্ত্য মাঝ-রাস্তায় মগধের কবলে পড়েছে । আমাদের বড় আশায় ছাই পড়েছে। এদিকে ক্ষুধাৰ্ত্ত শিশুদের চীংকার । দুর্গদ্বার আমাদের এ অবস্থায় আর বেশী দিন বন্ধ রথে চলবে ব'লে বোধ হচ্ছে না । অজাতশত্রুর ধুষ্ট-প্রবেশের দিন থেকে, আজ প্রায় দু’শো আড়াই শো বছর, আমরা স্বাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবার জন্যে যে চেষ্ট বারম্বার করেছি, ক্ষুধাৰ্বের আৰ্ত্তনাদে আমাদের সে চেষ্ট এবারও বোধ হয় ব্যর্থই হবে । --মগধের বিরুদ্ধে বনচরদের উত্তেজিত করবার পূর্ণে। আমাদের খাদ্য-সংগ্রহের দিকে আর-একটু বেশী ক’রে মন দেওয়া উচিত ছিল । আমি গোড়াতেই সে কথা বলেছিলুম। কিন্তু বহুলোকের মতের কাছে আমাদের অল্প ক'জনের মত টিকল না। সংবস্থল ক’রে বৈশালী উপযুক্ত শক্তিসঞ্চয়ের পূর্বেই বিশাল মগধ-সাম্রাজ্যের যন্ত্র-হস্তীর সঙ্গে নিজের বল-পরীক্ষণ করাটাই যুক্তিসঙ্গত ব'লে ঠিক করলে। তার ফল যা হয়েছে তা আমরা সকলেই দেখতে পাচ্ছি। সে ধা’ হোক তা নিয়ে অস্থশোচন করা আমার উদ্দেশ্য নয়। বর্তমানে আমাদের যে অবস্থা, সে অবস্থায় আমাদের কোন পথ অবলম্বন করলে