পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা : - স্ক্যাণ্ডিনেভিয়ার পুরাণের কৃথা ‘LL স্ক্যাণ্ডিনেভিয়ার পুরাণের কথা . অ্যাণ্ডিনেভিয়ার কথা আমাদের বিশেষ জান মাই। জানিবার ততটা আৰশুষ্কৃঙ হয় মাই আমরা জামেরিকা এবং ইউরোপের সভ্যতা লইয়া ব্যস্ত, অহরহ তাহাদের কথা শুনিয়াও থাকি ; কিন্তু তার মধ্যে স্ক্যাত্তিনেভিয়ার কথা বড় একটা উঠে না । কিন্তু হিসাব খতাইয়া দেখিলে স্পষ্টই বুঝিতে পারি যে বিশ্বসভ্যতার ক্ষেত্রে স্ক্যাণ্ডিনেভিয়াও সকলের সঙ্গে একজন হইয়া উঠিয়াছে ; স্কুইডেনের দিয়াশলাই আমরা সকলেই ব্যবহার করিয়াছি, ষ্টকহল্ম্ আমাদের অজানা নয়, যে কড লিভার-অয়েল সেবন করিয়া অবস্থাবিশেষে আমাদের জীবনীশক্তি রক্ষা করিতে হয় তাহাও প্রধানতঃ স্ক্যাণ্ডিনেভিয়ারই সামগ্রী । আমরা ইবসেন, বিয়নর্সন প্রভৃতির সাহিত্যের পরিচয় পাইয়াছি, নোবেলের দান বিশ্বময় ছড়াইয়া পড়িতেছে—তাহার এক কণিকা আমাদের দুয়ারেও আসিয়া পৌঁছিয়াছে, স্বেন হেডিনের মত বিশ্বপৰ্য্যটক স্ক্যাণ্ডিনেভিয়া হইতেই বাহির হইয়াছেন। তার পরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্ঘ্যের কথা। আমরা কাশ্মীরকে ভূস্বৰ্গ বলিয়া গৌরব করি। বাস্তবিক কাশ্মীরে গিরিনদীবনের অপূৰ্ব্ব সন্মিলন এবং ফলপুষ্পের সম্পদবৈচিত্র্য দেশটাকে নন্দনকানন করিয়া রাখিয়াছে ; কিন্তু তার উপরেও যদি এইরূপ দৃশ্বপটের পশ্চাতে জলধির উন্মুক্ত বিস্তার দেখিতে হয়, তবে স্ক্যাণ্ডিনেভিয়াই তাহার স্থান। এদেশের পার্থিব দৃশ্নের উপরে ঋতুভেদে চন্দ্রস্বৰ্য্য-কিরণের বিচিত্রতায় এবং অরোরা-বোরিয়েলিসের এক অপার্থিব দীপ্তিতে যে দৃশ্বের অবতারণা হয় জগতে তাহার তুলনা নাই—যেন মামুষের চক্ষে সৌন্দর্ঘ্যের পরম অভিব্যক্তি। এমন দেশে বাস করিয়া ষে জাতি গড়িয়া উঠে তাহারা সৌন্দৰ্য্যবিষয়ে নির্লিপ্ত থাকিতে পারে না। সকল দেশেই মানুষ, জাতীয়-শৈশবকালে তাহার চারিদিকে গিরিনদীসাগর-বন-উপবনের পার্থিব শোভা, উপরে চত্ত-স্বৰ্য-গ্রহ-নক্ষত্রের দীপ্তি এবং বৃষ্টি বায়ু বন্ধ বিছাই প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির খেলা দেখিয়া-জাগতিক ব্যাপার সঙ্গে ফুেণে করে, তাহার স্বনে সংজৰিতে যে-সৰল ভাবের উদয় হয়, তাহা হইতেই পৌরাণিক লাহিত্যের উৎপত্তি ; দেশে দেশে ঋতুভেদের বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক পদার্থের অসমত এবং তার উপরে বিভিন্ন প্রকৃতির লোকের কল্পনাশক্তির অব্যাহত অভিব্যক্তিতে ভিন্ন ভিন্ন প্রকার পৌরাণিক সাহিত্য গড়িয়া উঠিয়াছে। কিন্তু এই বিভিন্নতার মধ্যেও বেশ একটা সামঞ্জস্ত দেখা যায় —গ্ৰীক পুরাণের সঙ্গে এবং আরও ঘনিষ্ঠভাবে হিন্দু পুরাণের সঙ্গে স্ক্যাণ্ডিনেভিয়ার পুরাণের আশ্চর্ধ্য সাদৃশু দেখা যায়। স্ক্যাণ্ডিনেভিয়ার পুরাণে দেশের লোকের ধর্শ্ববিশ্বাসের দৃঢ় প্রতিষ্ঠা দেখা যায় না, বরং শেষের দিকে যেন প্রাঙ্কতিক আবেষ্টনের মধ্যে থাকার দরুন তাঁহাদের পৌরাঞ্জি সাহিত্য কাব্যকলা হিসাবেই অভিব্যক্ত হইতেছিল। .ঞ্চ সময় দেশে রাজার অত্যাচারে পীড়িত হইয়া কতকগুলি লোক আইসল্যাণ্ডে গিয়া উপনিবেশ স্থাপন করে। যে কাব্যপ্রতিভার বীজ দেশে অঙ্কুরিত হইতেছিল, নূতন দেশে আসিয়া তাহ আরও বিকশিত হইয়াউঠিল। ৰখন স্ক্যাণ্ডিনেভিয়াতে বৈদেশিক প্রভাবের সংমিশ্রণে দেশের ভাষা পরিবর্তিত হইতে লাগিল, আইসল্যাণ্ডে উছাঁর মূর্বধারা তখনও অব্যাহত রছিল। বস্তুতঃ স্ক্যাণ্ডিনেভিয়ার পুরাকালের অনেক কবিই আইসল্যাণ্ডের অধিৰাসী / * দেশে খৃষ্টীয় সভ্যতার স্রোত আসিয়া পড়িলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রীক এবং রোমীয় পুরাণ ও সাহিত্যের নূতন প্লাবনে দেশের পুরাণের এবং সাহিত্যের অনেকটা হতার হইতে লাগিল। একদিকে ইহাদের নিজেদের ধর্থবিশ্বাসে দৃঢ়তা ছিল না, অপরদিকে গ্রীক বা রোমীয়দিগের ষ্ঠায় ইহাদের পুরাণেও একটা স্বন্দর পরিকল্পনা এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ ও স্থচিস্তিত ধারাবাহিকতা ছিল। এইসকল কারণে ইহাদিগকে খৃষ্টীয় ধৰ্ম্ম গ্রহণের জন্ত যেন প্রস্তুত কৰিয়াই রাখিয়াছিল। অন্যদিকে ইউরোপীয় সাহিত্য এবং রীতিনীতির উপরে ইহাদের প্রভাবও বড় কম হয় নাই-- বিশেষভাবে ইংরেজী সাহিত্যের উপরে। গ্রীসের প্রভাে ক্ষায় অতটা স্পষ্ট না হইলেও, ইহার প্রভাব এৰে