পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

86 o বাহারে পাতাই গুজে গুজে রাখে । ধানের শীষের মত সবুজ পাতাগুলি খোপায় দুলিয়ে এরা যখন সারে সারে চলে তখন মনে হয় যেন হাস্যময়ী বনবালারা বেড়াতে চলেছে। এদের গহনার মধ্যে-হাতে শাখা, খড় }পীয় নূপুরের মত নিরেট ক্টাসার মল, আর গলায় পলার মালা। কানে তাদের ছেদা থাকে, কিন্তু তাতে শুধু কাঠি গুজে রাখে, কোন গয়ন। পরে না। আমাদের গয়না পরা যেমন এয়োতের লক্ষণ, এদেরও তাই, তবে সধবা অবস্থায় হাত শুধু করতেও এদের কোন আপত্তি নেই,—এদের সিন্দুর পরাও ঠিক এই ধরণের। তবে বিধবারা শুধুহাতেই থাকে। এদের বর্ণ কৃষ্ণ, কিন্তু এই কৃষ্ণ আবরণের ভিতরে অতি স্বন্দর হৃদয় আছে । এর স্নেহময়ী, অতিথিপরায়ণ, অতি সরল । কোন পুরুষের কাছে যেতে এরা সঙ্কুচিত হয় না, তাদের সঙ্গে অবাধে কথা কইতে পারে। এদের মুখে হাসিটি লেগেই আছে। শত অভাব-অভিযোগের মধ্যেও এদের সে হাসি মান হয় না। সারাদিন পরিশ্রম করে শাস্ত গোধূলি-বেলায় যখন এর পরস্পর হাত-ধরাধরি করে মিহি স্বরে গান গাইতে গাইতে ঘরে ফেরে, তখন এদের দেখলে মনে হয় না যে এরা অবসন্ন ; হাসির উচ্ছ্বসিত বস্তায় যেন সমস্ত ক্লাস্তি, সমস্ত অবসাদ কোথায় ডুবিয়ে দিয়েছে। সাঁওতাল পুরুষরাও প্রায় সদানন্দময় । মনে হয় যেন দুঃখ এদের কিছু করতে পারে না। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর এর রাস্তায় বঁশী কিম্বা একতারা বাজাতে বাজাতে ঘরে ফেরে। পুরুষদের পরিধানের মধ্যে শুধু এক কাপড়, অনেকে আবার কেীপীন এটেই থাকে। এরা গলায় পলার মালা পরে, কেউ কেউ আবার হাতে সরু বালা পরে। আগে এর মাথায় লম্বা লম্ব চুল রাখত, এখন অনেকে আমাদের মত ছআনা-দশআন চুল কার্টুতে শিখেছে । জুতা, ছাতা, জামা এদের মধ্যে চলতে স্বরু হয়েছে। পূৰ্ব্বে এদের কাপড় ছিল, নিজেদের হাতে বোন মোটা কাপড় ; এখন অনেকে মিহি বিলাতী কাপড় পৰ্য্যন্ত পৰ্বতে স্বরু করেছে । আমার মনে হয় চার পাচশ বছর পূৰ্ব্বে এরা সব উলঙ্গ অবস্থায় থাকৃত। এদের ঘরের আস্বাবের মধ্যে দু একটা কাসার বাটি প্রবাসী-শ্রাবণ, ১৩৩e [ ২৩শ ভাগ, ১ম খণ্ড আর মাটির ইাড়ি। শোবার বিছানার মধ্যে শাল-কাঠের রলার তৈরী আর বাবুই-দড়ির বোন খাটিয়া, আর পাতার চাটাই কি কাথা । বালিস এর ব্যবহার করতে জানে না । গৃহপালিত পশুর মধ্যে মহিষ, গরু, মুরগী, ছাগল, ভেড়া। মহিষ আর গরু শুধু চাষ করবার জন্য। এরা গাই-বলদে চষে । গাইএর দুধ কখনও দোয় ন—এদের ধারণা, তা হ’লে বাছুর বঁাচবে না। মুরগী এদের খুব প্রিয় খাদ্য । চা’ল থেকে এরা একরকম মদ তৈরী করে, তাকে এরা বলে ‘হাড়িয়া' । এটা হচ্ছে সাধারণ মঙ্গ—আমাদের cनcभद्र cयमन *ाष्ट्रहे भन । ईiक्लिग्न झाफ़ी, भइब cषट्क একরকম মদ হয়, তাকে এরা বলে ‘পরুয়া' । এটা হচ্ছে চোয়ান মদ । ‘পরুয়ার চেয়েও এক রকম ভাল মদ এর করে, তাকে বলে “রসি’। আরও এক রকম মদ এর করে, তাকে বলে ‘ফুলি।' মদ এদের বড় প্রিয় ভাতের চেয়েও এরা মদ বেশী ভাল বাসে । যদি কারু কাছে এর পয়সা চায় তবে বলবে না যে চা’ল কিনব, বলবে হাড়িয়া খাব। মেয়ে-পুরুষ সমানভাবেই হাড়িয়া খায়, তাতে কোন সরমে বাধে না । এদের নৃত্য, কলাকৌশলে পূর্ণ না হলেও মন্দ নয়। মেয়ের একজনের পর আর-একজন পেছনে কোমরের কাছে দুহাতে দুদিকে দুজনের হাত ধরে শ্রেণীবদ্ধ হ’য়ে দাড়িয়ে নৃত্য করে। বাজনার মধ্যে মাদল আর একটা প্রকাও নাগাচ্চি, তাকে এরা বলে ধুমসা । সেই বাজনার সঙ্গে এরা তালে তালে পা তুলে তুলে' নৃত্য করে। কি সুন্দর সে নৃত্য ! সমুদ্র-তরঙ্গের মত অলস লীলায় ধেয়ে আসে, আবার যেন তখনই বেলাপহত হয়ে ধীরে ধীরে সাগর-গর্ভে নেমে যায়। এরা সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্য্যন্ত অশ্রান্তভাবে নৃত্য করতে পারে। এই নৃত্যের মধ্যেও যেন একটা বীরত্বের ছায়া প্রতিবিম্বিত হয়। নৃত্য করে শুধু মেয়ের, আর বাজনা বাজায় পুরুষে। নৃত্যের সঙ্গে মাঝে মাঝে গানও হয়। এদের গলা খুব মিহি— একেবারে বঁশির স্বরের সঙ্গে মিশে যায় । নৃত্যের সময় মেয়েরা মদ খায়, কারণ অশ্রান্তভাবে সারারাত নৃত্যু