পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] চৌৰ্য্য-অপরাধের সন্দেহ বিদ্যমান থাকিলে একটি শালগ্রাম-শিলা দ্বারা তণ্ডুল ওজন করিয়া তাহা উহাদিগকে চৰ্ব্বণ করিতে বলা হইত। চৰ্ব্বিত হইলে, তাহার একএকটি পিপল-পত্রের উপরে উহা ফেলিত। যে ব্যক্তির মুখ হইতে শুষ্ক চাউল বাহির হইত, সে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অপর সকলে অর্যাহতি পাইত । (৭) উত্তপ্ততৈল-পরীক্ষা। উত্তপ্ত তৈলের দ্বারা অভিযুক্ত ব্যক্তির অপরাধ নির্ণয় করিতে হইলে তন্মধ্যে তাহাকে একখানি হস্ত নিমজ্জিত করিতে বলা হইত। যদি তাহাতে তাহার হস্ত দগ্ধ না হইত, তাহা হইলে সে নির্দোষী, দগ্ধ হইলে অপরাধী সাব্যস্ত হইত। (৮) উত্তপ্তলোঁহ-পরীক্ষা। একটি লৌহনিশ্বিত বর্ভূল অগ্নিতে লাল করিয়া অভিযুক্ত ব্যক্তির হস্তে দেওয়৷ হইত। যদি তাহাতে তাহার হস্ত দগ্ধ হইত, তাহা হইলে সে দোষী, দগ্ধ না হইলে নির্দোষী বিবেচিত হইত। (৯) মূৰ্ত্তি-পরীক্ষা। এই উপায়ে অপরাধ অথবা নির্দোষিত নিৰ্দ্ধারিত করিতে হইলে রৌপ্যনিৰ্ম্মিত একটি মূৰ্ত্তি এবং লৌহনিৰ্ম্মিত একটি মূৰ্ত্তি একটি মৃন্ময় কলসীর মধ্যে রাখিয়া অভিযুক্ত ব্যক্তিকে না দেখিয়া উহার একটি তুলিতে বলা হইত। যদি সে রৌপ্য-মূৰ্ত্তিটি তুলিত, তাহা হইলে সে নির্দোষী সাব্যস্ত হইত। লৌহ-মুক্তিটি তুলিলে তাহার অপরাধ নিৰ্দ্ধারিত হইত। বৃদ্ধ, অন্ধ, ব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তি, ব্রাহ্মণ, স্ত্রীলোক অথবা অল্পবয়স্ক বালক বা বালিকা কোন অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হইলে প্রথমোক্ত উপায়ে অর্থাৎ তেলদণ্ডের সাহায্যে তাহার বিচার হইত। শূদ্র অভিযুক্ত হইলে অগ্নিজল অথবা বিষ-পরীক্ষা দ্বারা তাহার বিচার হইত। কিন্তু যদি কোন অপরাধের ফলে অভিযোগকারীর সহস্র মুদ্রার কম ক্ষতি হুইত, তাহা হইলে উত্তপ্ত লৌহ-বৰ্ত্তল, বিষ অথবা তৌলদণ্ডের সাহায্যে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার হইত না । AMMAM AMA AeMAeAeAMS ওয়ারেন হেষ্টিংসের শাসন-কালে ইব্রাহিম আলি খী । নামক জনৈক ব্যক্তি বেনারসের প্রধান ম্যাজিষ্ট্রেটের পদে নিযুক্ত ছিলেন। তাহার সমক্ষে মিতাক্ষরার বিধান অনুসারে দুইটি ফৌজদারি অভিযোগের বিচার হইয়াছিল। ভারতের প্রাচীন বিচারপদ্ধতি AeeAeeSAeAeS eAA AMSAMAAAS AAAAA AAAA AAAA AAAAMAeAMMeeSASee AeeAeM MeM MAeAe AeAeeSAeeMAeMAMS AeeAeS 86 r কিরূপে বিচারকার্য্য সম্পন্ন হইয়াছিল তাহা তৎপ্রদত্ত রিপোর্ট হইতে জানিতে পারা যায়। পাঠকগণের কৌতুহল নিবারণের নিমিত্ত আমরা সেই রিপোর্টের সারাংশ নিয়ে প্রদান করিলাম ঃ-৮ ১৭৮৩ খৃঃ বেনারস নগরে উত্তপ্ত লৌহ-বওঁলের সাহায্যে একটি ফৌজদারি মোকদ্দমার বিচার হইয়াছিল। শঙ্কর নামক জনৈক ব্যক্তির নামে চৌর্য্য-অপরাধের অভিযোগ হয় । তাহাতে শঙ্কর বলে “অভিযোগটি মিথ্যা, আমি নির্দোষী ।” ফরিয়াদি অভিযোগের সত্যতা প্রতিপন্ন করিবার নিমিত্ত আইনসঙ্গত প্রমাণ উপস্থিত করিতে না পারিয়া অগ্নি-পরীক্ষার দ্বারা বিচারের প্রার্থনা করায়, আসামী তাহাতে সম্মত হইল। আমি সমবেত বিচারক ও পণ্ডিতগণকে কোম্পানীর রীতিবহির্ভূত উপায় অবলম্বন করিতে নিষেধ করিয়া বলিলাম, “অগ্নি-পরীক্ষার পরিবর্তে তামা তুলসী গঙ্গাজল অথবা একখানি হরিবংশ অথবা শালগ্রাম-শিলা স্পর্শ করিয়া উভয়পক্ষ সাক্ষ্য প্রদান করুক।” কিন্তু কোন পক্ষই আমার প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় উভয়ের প্রার্থিত প্রকারে বিচার-কাৰ্য্য নিম্পন্ন করা স্থির করিলাম। এরূপ পদ্ধতি অবলম্বনের চারিটি কারণ ছিল :– ( ১ ) আসামীর অপরাধ অথবা নির্দোষিতা অবধারণের অন্য কোন উপায় ছিল না। (২) উভয় পক্ষ হিন্দু ছিল । (৩) হিন্দুরাজাগণের রাজ্যসমূহে এইরূপ বিচারপ্রণালী প্রচলিত ছিল । ( ৪ ) অগ্নির উত্তাপে আসামীর হস্ত দগ্ধ না হওয়া সম্ভব কি না ইহা পরীক্ষা করিয়া দেখা অবিশুক মনে করিয়াছিলাম । এই-সমস্ত কারণে আমি আদালতের নিযুক্ত পণ্ডিতগণকে এবং বেনারসের অন্যান্য পণ্ডিতমণ্ডলীর প্রতি এই মৰ্ম্মে আদেশ প্রচার করিলাম :– “ফরিয়াদি ও আসামী উভয়েই হিন্দু। তাহারা উত্তপ্ত বৰ্ত্তলের সাহায্য বিনা অন্ত কোন প্রকার বিচারে সন্তুষ্ট হইবে না। অতএব মিতাক্ষর-বর্ণিত প্রকারে উত্তপ্ত লৌহবৰ্জুলের সাহায্যে আসামীর বিচার হউক।”