পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টিকি-চোর ক্লাসে ঢুকেই পণ্ডিতমশাই বিষম রকমে ভ্ৰকুট করে আমাদের দিকে তাকিয়ে গর্জন করে উঠলেন—“মিধে, তুই কান ধরে বেঞ্চের উপর দাড়িয়ে থাক,–গুপী, তুই একপায়ে দেয়ালের দিকে মুখ করে দাড়া—” তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন—“বাড়ীতে আমার সোনার চাদ যেন ভিজে বেরালটি—ভাজ৷ মাছটি উল্টে খেতে জানেন না, আর স্কুলে এলেই একেবারে নৃসিংহ-অবতার— দাড়া তুই নিধের পাশে—হতভাগ বঁদের বেল্লিক কোথাকার—” আমি ত একেবারে ভ্যাবাচাক খেয়ে গেলুম। পণ্ডিতমশাইয়ের কথাগুলি ঠিকমত বুঝতে চেষ্টা করছি এমন সময় টেবিলের উপর প্রকাণ্ড এক চড় মেরে পণ্ডিত মশাই গলা সপ্তমে চড়িয়ে কটুমটু করে আমার দিকে চেয়ে বললেন—“দাড়া হতভাগা, দাড়া গির . বেঞ্চের উপর ।” এই অকারণ গালাগালি থেয়ে সত্যি আমার ভয়ানক কাল্প। পাচ্ছিল। পণ্ডিতমশাইয়ের রাগের কারণ কিছুতেই ঠাওর করতে পারলাম না-লক্ষ্মীছেলের মত নিধের পাশে দাড়িয়ে পড় লাম । আমাদের ক্লাশে আমরা তিনজন খুব বিশেষ বন্ধু ছিলাম। নিধিরাম গুপীনাথ আর আমি। সারা স্কুলে আমাদের যতটা বদনাম হয়ে গিয়েছিল প্রকৃতপক্ষে আমরা ততটা খারাপ ছিলাম না। পরীক্ষাতে আমরা কেউই খুব বেশী নম্বর পেতাম না বটে, তবে কোন বিষয়ে কেউ ফেলও করতাম না। কারুর যদি কোনো কারণে একবার বদনাম রটে যায়, ইলে যা-কিছু হবে সব দোষ সেই বেচারীর ঘাড়ে পড়বে। • “যত দোষ নন্দ ঘোষ।” আমাদেরও ঠিক তাই হয়েছিল। স্কুলে কোনো জিনিষ ভাঙলে কি নষ্ট হ’লে সকলে বলবে আমাদেরই কৰ্ম্ম। সেদিন কপাটি খেলতে খেলতে 'জাণ্ড ঘোষের ছেলেটা পড়ে পা ভেঙে ফেললে, স্কুলম্বন্ধ ছেলে হেডমাষ্টার মশাইয়ের কাছে বলে আমারাই নাকি পরামর্শ করে, তাকে ল্যাং মেরে ফেলে দিয়েছি অথচ সে নিজে স্বীকার করলে যে সে একটা পাথরে ঠোক্ষর. খেয়ে পড়ে গেছে । আর বছরে যেদিন স্কুলের আফিসঘরের কাচে-বাধানো দামী ছবিখানা মাটিতে পড়ে কাচখানি একেবারে গুড়ে গুড়ো হ’য়ে গেল—সে দিন ত সবাই আমাদেরই সন্দেহ করেছিল। হেডমাষ্টার ত ৰেত নিয়ে আমাদের মারতে পর্য্যন্ত উঠেছিলেন–কিন্তু যখন ফোর্থ মাষ্টার বললেন যে যে সময় ছবিখানা ভাঙে সে সময় আমরা তার কাছে ব্যাকরণ পড়ছিলাম আর তার উপর আফিসের কেরাণী যখন বললেন একটা ধুম্‌সে কালে বেড়াল উচু থেকে লাফাতে গিয়ে ছবিখানা ফেলে দিয়েছে তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন, তখন আমরা রক্ষা পেয়ে গেলাম । যাহোক বেঞ্চের উপর দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমরা অকুমান করে নিলাম এ-রকম কিছু একটা কাও হয়েছে আর তার জন্তে পণ্ডিত মশাই আমাদের উপর এরকম শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু কি কাণ্ড ঘটেছে কিছুই বুঝতে পাবুলাম না । হঠাৎ তাকিয়ে দেখি পিছনের বেঞ্চে হরিদাস বইয়ে মুখ লুকিয়ে হাসছে। হরিদাসকে সবাই ভাল বলে জানলেও আমরা বিলক্ষণ জানতাম ছেলেটা একটা ভীষণ ডানপিটে। লেখাপড়ায় ভাল ছিল বলে শিক্ষকরা তাকে স্বেঙ্গের চক্ষে দেখতেন । পণ্ডিত মশাই ৪ তাকে বিশেষ ভাল লাস্তেন । ছেলেটার একটা গুণ ছিল সে খুব ভাল,“এ্যাকটিং" কতে পাবৃত। DD DS DD BBBSYBBB BBS BB SBKSBBB