পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৮২ তোমার গুরু গর্জনে আর হৃৎকম্প হয় না, ইচ্ছা হচ্ছেতোমারই প্রতিধ্বনির সঙ্গে মিশে চলে যাই, ওপারের ঐ মায়া-মুক্তির খেয়া-ঘাটে। ধেখানে আমার খোকাবাবু আমারই জন্তে অপেক্ষা করছে—এই পাপ-পুরের পঙ্কিল পথ চেয়ে । , যাই রে আমার মাণিক !— বাবা একখানা চিঠি হাতে নিয়ে হাস্তোজ্জল মুখে আমার নিকটে এসেই কি যেন বলতে গিয়েই গম্ভীর হ’য়ে গেলেন। তার পর আমার অবাধ-অশ্র মুছিয়ে দিতে দিতে বললেন,—“ছি মা ! মরতে চলেছ,— এখন একটু শান্ত হও!” বাৰায় একখানা হাত আমার দুই হাতের তালুতে চেপে বললাম,—“এ তুমি কি করেছ বাবা ? আমার জন্তে শেষে ফকির সাজলে ?” একটু অম্বুযোগের স্বরেই বাবা বললেন,—“তোমার সব কথায় কান দেবার দরকার কি লক্ষ্মী ?” আমি একটু চুপ ক’রে থেকে বললাম,—“ও কার চিঠি বাবা ?” বাধা চিঠিখানাকে একবার লক্ষ্য ক’রে বললেন, - “হ্য,-তোমার শাশুড়ী ঠাকরুণ লিখেছেন ;–ৰ্তার একল বড় কষ্ট হচ্ছে ;–বিজয় তোমাকে শীঘ্রই নিতে আসবে।" ব'লেই তিনি একট। নিশ্চিন্তের নিঃশ্বাস ত্যাগ ক’রে ধীরে ধীরে চ'লে গেলেন । আমি সশব্দে ঘন ঘন নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে লাগ লাম ! মৃত্যুপথের যাত্রী : আমি,- এখনও আমার ডাক আসছে—স্বার্থসিদ্ধির জন্তে । মাছুষ এমনি অন্ধ বটে। আজ আমার প্রতিজ্ঞা পূরণ হয়েছে । যে-দিন নির্ধ্যাতিত ۰ و هاد :th-iftبه [ २७+ छा, २भ १७ লাঞ্ছিত হ’য়ে নির্বালিত হয়েছিলাম,-তখন আমি বেশ জানতাম,—আর-একদিন শেষ-যাত্রার বিদায়-ক্ষণে আমার আর-একবার পিছু থেকে ডাক পড়বে। কিন্তু আমাকে আর কেউ ফেরাতে পারবে না । অনুগতকে অবজ্ঞায় লাঞ্ছিত ক'রে, পরে অমুশোচনায় তাকেই আহবান ক'রে না পাওয়ার ব্যথা বড় মৰ্ম্মাস্তিক । আর এই নাপাওয়ার ব্যথার অনুভূতিই—আমার প্রতিশোধ । সে প্রতিশোধ আমার নেওয়া হ’ল। স্বামী আমাকে নিতে আসছেন–র্তার অশেষ অনুগ্রহ । কিন্তু মহাসিন্ধুর ওপারের আহালে আমাকে আকুল ক’রে আকর্ষণ করছে —এ পারের ডাকে ত আমাকে আর ফেরাতে পারবে না । অপরাধ নিও না স্বামী ; ক্ষমা কর মা ঠাকরুণ ! ঐ পশ্চিমাকাশে আমার স্বৰ্য্য বুঝি জন্মের মত ডুবে গেল। ভুবন-ভরা আঁধারের পরপারে ও কার মুখখানি তার রূপের অালো জেলে ধ্রুবতারার মত আমারই পথ নির্দেশ করছে—ভবসিন্ধুর জল-তরঙ্গের তালে তালে মিশে যাচ্ছে—মরণ-সঙ্গীতের করুণ মুর্ছনা ; আর তারই সঙ্গে লয় হচ্ছে,—ও বুঝি কোন দানবীর বিসর্জনের উলুধ্বনি। এস কাণ্ডারী ! তোমার তরী নিয়ে,—আমায় পার ক’রে দাও । ফেলো, স্বামী, এই জন্ম-অভাগিনীর শূন্ত শয্যার শিয়রে দাড়িয়ে, এই উপেক্ষিতার উদ্দেশ্যে তোমার পাষাণ-প্রাণের একবিন্দু অশ্রজল ! তাতেই ভরে যাবে একপা-কাঙ্গালিনীর শূন্ত অঞ্জলি ; আর তাই হবে আমার পথের সম্বল, তাই হবে আমার পরকালের সার্থী ! ଞ୍ଜି মনোন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায়