পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

w' : - ষ্ট্রঞ্জির হাসিটুকু। প্রথমে ললাটে লজ্জা ঘনাইয়া আসে, zoo হইতে নামে ডাগর দুটি চোখে, পরে কপোলে...তারপূরই যেন সারামুখখানি অল্পক্ষণেব ধন্য অন্ধকার হইয়া ক্ষীয়ে:ভারী সুন্দর দেখায় সে সময় । তারপরই ফালে সে অপূৰ্ব্ব সুন্দর হাসিটি ওরকম হাসি আর কারুর মুখে অপু কখনো দেখে নাই। কিন্তু মুখের সব অ্যদলটা তো মনে আসে না—সেটা মনে জানিবার জন্য সে ঘাসের উপর শুইয়। অনেকক্ষণ ভাবিল, অনেকক্ষণ প্রাণপণে চেষ্টা করিরা দেখিল— না-কিছুতেই মনে আসে না—কিংবা হয়ত আসে অতি অল্পক্ষণের জন্য—আবার তখনই অস্পষ্ট হইয়া যায়। অপর্ণা—কেমন নামটি ? -- জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি প্রণব কলিকাতায় আসিল । বিবাহের পর এই তাহার সঙ্গে প্রথম দেখা । সে আসিয়া গল্প করিল, অপর্ণার মা বলিয়াছেন তার কোন পুণ্যে এরকম তরুণ দেবতার মত রূপবান জামাই পাইয়াছেন জানেন না—তাহার কেহ কোথাও নাই, কলিকাতায় এক থাকিয় দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে শুনিয়া চোখের জল রাখিতে পারেন নাই । অপু খুশী হইল, হাসিয়ু বলিল—তবুও তো একট। ভাল জামা গায়ে দিতে পারলাম না, সাদা পাঞ্জাবী গায়ে বিয়ে হ’ল—দূর!:ন থেয়ে-দেয়ে একটা সিস্কের জাম করালুম, সেটা গেল মথন ছিড়ে ছুটে, তখন তুমি এলে তোমার মামার বাড়ীতে নিয়ে যেতে, তার আগে আসতে পারলে না—আচ্ছা, লিঙ্কের জামাটাতে আমায় কেমন দেখাতে ? —ও:-সাক্ষাং এ্যাপোলে। বেলভেডিয়ার ঢের ঢের হামবাগ দেখেচি, কিন্তু তোর মত -- কিন্তু একটা কথা । অপর্ণার মা কি বলেন তাহ। জানিতে অপুর তত কৌতুহল নাই—অপর্ণ কি বলিয়াছে—অপর্ণ। ... অপর্ণ। কিছু বলে নাই ?- হয়ত কেনারাম মুখুধ্যের ছেলের সঙ্গে বিবাহ না হওয়াতে মনে মনে দুঃখিত হইয়াছে—না ?.. প্ৰণবের মাম। এ বিবাহে তত সস্তুষ্ট হন নাই, স্ত্রীর উপর মনে মনে চটিয়াছেন এবং তাহার মনে ধারণা প্রণবই প্রবাসী--কাত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খ SAASAASAAAS - তাহার মামীমার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করিয়া নিজের বন্ধুর সsে মেনের বিবাহ দেওয়াইয়াছে। নাম নাই, বংশ নাই, চালচুলা নাই—চেহার লইয়া কি মাস্থ্য ধুইয়া খাইবে }. কিন্তু এসব কথা প্রণব অপুকে বলিল না। একটা কথা শুনিয়া সে দুঃখিত হইল । কেনারাম মুখুয্যের ভাইটি নিজে দেখিয়া মেয়ে পছন্দ করিয়াছিল। অপর্ণকে বিবাহ করিবার অত্যন্ত আগ্রহ ছিল তাহার— কিন্তু হঠাৎ বিবাহ-সভায় আসিয়া কি যেন সব গোলমাল হইয়া গেল, সারা রাত্রি কোথা দিয়া কাটিল, সকালবল। যখন আবার একটু দ্য স্ হইল, তখন সে দাদাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল—দাদা, আমার বিয়ে হ’ল না ? এখনও তাহার অবশ্য ঘোর কাটে নাই..বাড়ি ফিরিবার পথেও তার মুখে ওই কথা—এখন নাকি সে বদ্ধ উন্মাদ । ঘরে তালা দিয়া রাখা হইয়াছে। অপু বলিল—হাসিস্ কেন, হাস্বার কি আছে ? . পাগল তো নিজের ইচ্ছেন্ন হয়নি, সে বেচারীর আর দোষ কি ? ও নিয়ে হাসি ভাল লাগে না । দিন যাইতে লাগিল, অপুর লাইব্রেরীর পড়াশোনাতে আর তত মন নাই । ইতিহাস, ভূতত্ব, গ্রহনক্ষত্রের কথা, এসব ছাড়িয়া আজকাল সে কেবল বাংলা উপন্যাস পড়ে —বিশেষ করিয়৷ যে-সব উপন্যাসে স্বামী-স্ত্রী সংক্রান্ত প্রণয়ের কথা বেশী । দেখিল, তাহার মত বিবাহ নাটকনভেলে অনেক ঘটয়াছে, অভাব নাই। বড়লোক শ্বশুর। দরিদ্র জামাই, স্ত্রীও যেন তত মানে না, অভিমানে স্বামী নিরুদেশ হইয়া গেল, স্ত্রীকে পত্র লিখিল দূর দেশ হইতে— আবার যদি কখনও তোমার উপযুক্ত হইতে পারি" ইত্যাদি । ও গে। নিষ্ঠুর, ওগো প্রিয়তম, তুমি ধে অভিমান করিয়৷ চলিয় গেলে, তুমি কি একটিবারও ভাবে নাই ধে—ইত্যাদি। স্ত্রী মৃত্যুশয্যায়—বহুদিন পরে স্বামী আসিয়াছে—প টিপিয়া টিপিয়া সঙ্গোপনে স্ত্রীর শয্যার পাশ্বে.ী সব সময়ই যেন অপর্ণা, স্বামী সব সময়ই সে । রাত্রে বিছানায় শুইয়া ঘুম হয় না- কেবলই অপর্ণার কথা মনে আসে। প্রণব এ কি করিয়া দিল তাহাকে ? সে যে বেশ ছিল, এ কোন সোনার শিকল তাহার মুক্ত,