পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

, S88. প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড সওঁ চাপাইবে, সত্যাগ্রহীদের মনের ভাব এরূপ নয় । তাহারা যাহা চায় তাহা তাহার চাহিতেই থাকিবে, ইংরেজ তাহাদিগকে পিষিয়া ফেলিলেও দাবীটা ঐরূপই থাকিবে । তাহারা নিজে দুঃখ সহিয়া সফলকাম হইতে চায় । মনে করুন, ইংরেজরা সমস্ত সত্যাগ্রহীকে কারারুদ্ধ করিয়া কিংবা ঠেঙ্গাইয়া কাবু করিয়া তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিল, “এখন বল তোমরা কি চাও। তোমরা সাইমনের প্রস্তাবগুলাতে রাজী কি না বল" ; তাই হইলেও কংগ্রেস পক্ষ হইতে এখনকার মত উত্তরই পাওয়া যাইবে । আমরা সত্যাগ্রহীদের মনের ভাব যতটা বুঝিতে পারিয়াছি, তাহাতে .আমাদের মনে হয়, তাহাদের বর্তমান চেষ্টা বিফল হইলেও তাহারা বলিবেন, “ইংরেজদের যাহা ইচ্ছা তাহা তাহার করিতে পারে, কিন্তু তাহ আমাদের মনের মত না হইলে তাহ আমাদের সম্মতিক্রমে করিতেছে, ইহা আমরা কখনও কোন অবস্থাতেও স্বীকার করিব না ।” বিলাতী কাগজওয়ালাদের মত আমাদের দেশের সম্পাদকেরাও বিচার করিতেছেন, সন্ধির কথাবার্তার ব্যর্থতার জন্ত কে বেশী দায়ী, বড়লাট না কংগ্রেসনেতারা । বলা বাহুল্য ভারতপ্রবাসী ইংরেজদের কাগজগুলা সব দেখি কংগ্রেসের ঘাড়ে চাপাইতেছেন । তাহা আশ্চৰ্য্য নছে। কিন্তু দেশী কোন কোন কাগজও যে সব দোষ বা প্রায় সব দোষ নেতাদের ঘাড়ে চাপাইতেছেন, তাহা ভাল লাগিতেছে না। ... নেতাদিগকে কেহ কেহ এই জন্ত দোষ দিয়াছেন যে, র্তাহারা ‘ডেলী হেরাল্ডের প্রতিনিধি স্নোকুম্ব সাহেবকে যেসব" লর্ড দিয়াছিলেন, তাহাদের শেষ সওঁ কোন কোন বিষয়ে তাহা হইতে ভিন্ন। সত্য সত্যই বিশেষ কোন প্রভেদ হইয়াছে কি না, পরীক্ষা করিবার দরকার নাই। মানিয়া লইলাম, কিছু প্রভেদ হইয়াছে। তাহা স্বাভাবিক। কারণ মহাত্মা গান্ধী যে সর্ত দিয়াছিলেন এবং পণ্ডিত মোজীগাল নেহন্ধ যে সত্ত্ব দিয়াছিলেন, তাহ ব্যক্তিগত ভাৰে এক এক দিয়াছিলেন। তাহারা কোথাও বলেন মাইকুড়ঙ্গে তাহারা কংগ্রেসের পক্ষ হইতে ঐ সব সর্ত *" কিংবা কংগ্রেস উহার দ্বারা বাধ্য। পরে যখন অন্তান্ত এমন কংগ্রেস নেতাদের সহিত র্ত্যহাদের আলোচনা হইল যাহারা তাঁহাদের অনেক পরে কারারুদ্ধ হওয়ায় দেশের আধুনিক রাজনৈতিক অবস্থা ও সত্যাগ্রহের অবস্থা অধিক জানেন,তখন সৰ্বগুলি কিছু পরিবর্তিত ত হইবেই। শেষে তাহার যে সত্ত্ব দিলেন তাহাও কংগ্রেসের কার্য্যনিৰ্ব্বাহক কমিটি এবং সমগ্র ভারতীয় কমিটির দ্বারা অমুমোদিত হওয়া আবশ্বক তাহাও তাহারা বলিয়াছেন । নেতারা ষে-সব সর্তের উল্লেখ করিয়াছেন, একটি একটি করিয়া আলোচনা করিলে তাহার কোনটিই অযৌক্তিক মনে হয় না। তবে একথা অবশ্ব উঠতে পারে, যে, খুটাইয়া সবগুলির উল্লেখ করা এখনই দরকার ছিল কি না । আমাদের মনে হয়, নেতার যদি ভারতবর্ষের জন্ত সেই সব ক্ষমতা ও অধিকার চাহিতেন যাহা সব ডোমীনিয়নের বা কোনও ডোমীনিয়নের আছে, তাহাই যথেষ্ট হইত। ইচ্ছা হইলে ডোমিনিয়নগুলি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য হইতে স্বতন্ত্র হইতে পারে, ইহা তাহদের একটি অধিকার । ইহ ইংরেজদের লেখা বহিতে পড়িয়াছি এবং মডারেট নেতা শ্ৰীনিবাস শাস্ত্রী মহাশয়ও ভারতবর্ষের জন্য এই অধিকার দাবী করিয়াছেন। অবশু, ইহাও ঠিক, যে, ইংরেজরা মনে করে, যে, প্রত্যেক ডোমীনিয়নেই এমন অনেক লোক আছে যাহারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্য হইতে পৃথক হইতে চায় না এবং তাহদের বিরোধিতা সত্ত্বেও পৃথক হওয়া কঠিন ; সুতরাং থিওরিতে ডোমিনিয়নগুলির পৃথক হইবার অধিকার থাকিলেও কাজ তদনুসারে হয় নাই, হইবে না । কিন্তু ভারতবর্ষও এই অধিকার পাইলেই পৃথক হইবেই, এইরূপ বলা যায় না। সব বিষয়ে স্বাধীনতা ও আত্মকত্ত্বত্ব পাইলে পৃথক হইবার আবশুক কি এবং তাহাতে লাভই বা কি ? ডোমীনিয়নদের পৃথক্ হুইবার ক্ষমতা যে আছে, তাহা আগামী অক্টোবর মাসের সাম্রাজ্যিক কনফারেন্সে দক্ষিণ-আফ্রিকার বুঅর নেতা হার্টজগ পরিষ্কার করিয়া লইবেন, বলিয়াছেন। - ভারতবর্ষের সৈন্তদল ও রণতরী বিভাগের উপর ক্ষমতা নেতার চাহিয়াছিলেন । ড়োমীনিয়নদেয় নিজ নিজ আত্মরক্ষার বন্দোবস্তের উপর তাহীদের ক্ষমতা আছে ।