পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

} e প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ তীর হতে প্রায় এক মাইল দূরে উচু পাহাড়ের উপর একটি প্রস্রবণ, তার জল সব চেয়ে হজমী । গাগরীবলের পথ দিয়ে অগ্রসর হ'লে পাওয়া যায় নিযাং বাগ, ( আনন্দ-কানন ) মমতাজের পিতা আসফজার তৈরি । নিষাং বাগ সৌন্দয্যে অতুলনীয়। নিষাং বাগ থেকে ডাল হ্রদের বুকের উপর দিয়ে একটি রাস্তা আছে শ্রীনগর পৰ্য্যন্ত । এই রাস্তার দুটি পুল, তার নীচে দিয়ে ডানদিকে শালামার বাগ গেলে পৌছানো যায় শালামার ( আনন্দ বাগ ) । এটি সম্রাটু জাহাঙ্গীর ও নূরজাহানের হাতে তৈরি । শালামার সুন্দর কি নিষাং বাগ সুন্দর এ তর্কের মীমাংস। বড়ই কঠিন। রবিবারে এই দুই স্থানে প্রচুর লোকসমাগম হয় । কারণ ফোয়ারণগুলি কেবল ঐদিনই খোলা হয়। শালামার থেকে তিন মাইল দূরে হারওয়ান হ্রদ। কাঠের পাইপ দিয়ে নগরে বারো মাইল দূরে তার জল সরবরাহ হয় । শালামার থেকে ডাল হ্রদের তীরে অগ্রসর হ’লে এক মাইল দূরে তেলবল নালা, প্রায় দু-মাইল লঙ্গ, দু-পাশে উইলো গাছ। আমার এক ফরাসী বন্ধু বলেন, বুয়েনস্য়্যারে ঠিক এমনই দেখা যায়। দুঃখের বিষয় এখানে প্রচুর মাছ থাকায় অনেকেই, বিশেষতঃ সাহেব-বিবিদের, ছিপ-হাতে দেখা যায়। কাশ্মীরীরাও বর্শ দিয়ে মৎস্য [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড শীকার অশোভন । এমন স্থানে হত্যাক্রীড়া বড়ই নালা ছেড়ে পশ্চিমের দিকে গেলেই পড়ে নাসিমবগ—শ্ৰীনগরের আশেপাশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থান। চীনারের ঘন বন, তার পাশেই তাবু খাটিয়ে বাস করবার জন্য যাটঠি স্থান ভাগ করে দেওয়া । আকাশে নীল, পাহাড়ে নীল, পাহাড়ের মাথায় সাদা বরফ, সাম্নে ডালের কালো জল, চীনারের বন সবুজ নীচে ঘাস সবুজ। সোনালী রোদের আলো, রুপালি জ্যোৎস্না— সব মিলিয়ে যেন মায়াকানন স্বষ্টি করেছে। সেই স্রোত ধরে দক্ষিণে শিকার চালালে প্রথমেই চোখে পড়ে হরি পৰ্ব্বতের কেল্লা । এখানে কালীবাড়ী আছে ) তারপর নগিন বাগ ( যেখানে সাহেবের স্বান করেন ), তার পরেই রণওয়ারি, স্রোতস্বিনীর দুইতীরে—বসতি ভেনিসের বর্ণনা মনে পড়ে। ভেনিসের বিরাট প্রাসাদ এখানে নেই, কিন্তু জলে স্রোত আছে, লাজনক্স উইলে জলের উপর দাড়িয়ে জলকে ছুতে চাইছে । ডাল হ্রদের একটি অভাবনীয় দৃশ্ব দেখা যায়,—ভাসমান সবজী বাগ। হ্রদে জন্মায় উইলে, এর নীচে হাউস বোট তা ছাড়া পদ্ম, শালুক, পানফল এবং এক রকম ‘রাড ( শরের মত ; জন্মায় । এই রীড একত্র জচ্‌ পাকিয়ে জলে ভাসে । উপরের ভাগ কটে নিয়ে হয় মাদুর তৈরি । নীচের অংশ জলে ভাদে, তার উপর হয় সবজী বাগ । জলের নীচে এক রকম শেওলা আছে, তা জটু পাকিয়ে তোলা হ’ল গ্রীণ ম্যাণিওর। তাতে কিছু মাটি দিয়ে তাল পাকিয়ে তার উপর বীজ দিয়ে এই ভাসমান রডে এ বসিয়ে দেওয়া হয় । দেখলাম এখানে সোনা ফলে । লাউ, কুমড়া শশা, টমেটে, তরমুজ, খরমুজের গাছ বেশী বড় হয় না, কিন্তু তার গাটে গাটে ফল ধরে । শুনলাম এই ভাসমান রিড মেপে বিক্ৰী হয় এবং কৃষকেরা এগুলি নিজেদের এলাকায় ভাসিয়ে নিয়ে যায় । এ দেশের মাতুষ অত্যন্ত পরিশ্রমী। নবেম্বর থেকে মার্চ পৰ্য্যস্ত কাশ্মীর উপত্যক বরফে আচ্ছন্ন থাকে। এই সময় কাশ্মীরীর কারুশিল্পে জীবিকা অর্জন করে । এপ্রিলে হয় বসস্তের আরম্ভ, জীবনের উন্মেষ, বাদাম গাছে ফুল ফুটে করে । তেলবল বাধ হয় । ट्य़, डझे