পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>s8 বামুন-ঠাকুরাণীর চোখ দুইটি বোধ হয় রাগে দুঃখে তার চেয়েও রক্তবর্ণ হইয়াই ছিল। কিরণের অবস্থাটা সে অকুমান করিতে পারিল না,বলিল,—তোমার বিবেচনা ভাল, নিজেও সারাদিন উপোস করে কাটালে, আর আমাকেও বেশ শাস্তি দিলে । কিরণের চৈতন্য হইল, বামুন-ঠাকুরাণীর হয়ত খাওয়া হয় নাই, কহিল,-আমার জন্যে কেনই-বা শুকিয়ে রইলেন? রাত ত অনেক হয়েচে-হোক, কিছু মিষ্টি না-হয় আপনার জন্যে নিয়ে আসি, ভাত ত আর থাবেন না। --দরকার নেই আমার মিষ্টিতে । খানিকক্ষণ নীরব থাকিয় বামুন-ঠাকুরাণী পুনরায় বলিল,—কিন্তু লক্ষ্মীছাড়া হ’লে কি মানুষের এমনই হয় ? ঘর-সংসারও মনে থাকে না ? "কিরণের শরীরটা ঝিমুঝিম্ করিতেছিল, বিছানাটার উপর বসিয়া পড়িয়া কহিল,— লক্ষ্মীছাড়া মামুষের আবার ঘরসংসার কি ? বামুন-ঠাকুরাণী রুক্ষ্ম কণ্ঠে বলিল,—ঘর-সংসার না থাকে না ই থাক, কিন্তু আমি আর তোমার সংসার ঠেলতে পারব না, আজ চাল অভাবে রান্না হয়নি। সেই সকালে বেরিয়েছ, আর এই এলে, একবার খোজও নাও নি যে ঘরে কিছু আছে কি নেই। ভাড়ার-ঘরের চাৰিট। আর হিসেবের খাতাটা ঐ তাকে রইল। সাড়ে সাত টাকা মাইনের জন্ত মাসের ভেতর সাড়ে সাতদিন ঞ্চৈ স্থৰ্ভোগ আমার সয় না, বলিয়া বামুন-ঠাকুরাণী বাহির হুইয়া গেল। o কিরণ নিঃশব্দে বিছানায় বসিয়া রহিল। জবাব দেওয়ার মত কথা হয়ত ছিল, কিন্তু শরীরের অবস্থাটা তেমন ছিল না। পীড়িত শরীর। বসিয়া থাকা যায় না, শুইয়া পড়িল। পুপ্ত ঘর, মনটাও শূন্ত। স্বাৰাই গরম হইয়া আছে, এই শীতেও একটু বাতাস मांडूहें চলে না । কিন্তু কে দেয় ? মিঠাকুরাণীর দোষ নাই। লক্ষ্মীছাড়ার খেয়াল ই আর চলে না। কিন্তু কিরণের যেন প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩৭ SSASMSMSAAAAASA SAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAeMMAMMAMHAJSJASAAAS [ ७०* छां★, २ग्न थ७ AMMMAMMASAMMMMM MAMAMASAJAJAMAAA AAASS লোকজন অভাবে আজ সব অচল হইয়া আসে। এই ংসারের শূন্য আঙিনায় মনটা আজ কোন এক স্নেহময়ীর জন্য যেন বার বার কাদিয় ওঠে। আজ যেন একটু স্নেহ না হইলে আর চলে না। স্নেহ যে কি অনেক দিন হইতে তার কোনো পরিচয় নাই, মন হইতে ধেন তাহা মুছিয়া গিয়াছে। ম যখন ছিল তখন স্নেহ ও হয়ত কিছু পাইয়াছে। কিন্তু সে আর কয়দিন ? জন্মের ছয় মাস পরেই মায়ের মৃত্যু হইয়াছে। ছয় মাসের সঞ্চয়, সারাজীবনের পক্ষে কতটুকু ? মায়ের মুখখানি মনেই পড়ে না, একখানি ছবি পৰ্য্যন্ত নাই। ছেড়-খোড়া পুরাতন একখানি পুথির পৃষ্ঠায় মায়ের নিজের হাতের লেখা নামটি রহিয়াছে। ঐটুকুই মায়ের স্মৃতি। অতিকষ্ট্রে বিছান হইতে কোনরকমে উঠিয়া কিরণ বাক্সট খুলিল, খুলিয়া ভিতর হইতে কাগজে মোড়। বইখানির নাম-লেখা পাতাটা উন্টাইয়া উহা বুকে চাপিয়া ধরিল । তারপর জরের ঘোরে বিছানায় আসিয়া অচৈতন্য হইয়। পড়িয়া রহিল । পরদিন প্রভাতে রাত্রির ব্যাপার দুঃস্বপ্নের মত মনে হইতে লাগিল ; ধীরে ধীরে বিছানা ছাড়িয়া উঠিল । উঠিয়া গঙ্গার দিকের জানালাটা খুলিয়। দিল । সেই জল,—সেই বালুচর,-যেন জীবন ও মৃত্যু ঠেলাঠেলি করিয়া দাড়াইয়াছে । বেশীক্ষণ তাকাইয়া থাকিতে পারিল না, মাথাট। ঘুরিতে লাগিল। বিছানায় আসিয়া আবার শুইয়া পড়িল । ভাবিল, বামুন-ঠাকুরাণী আসিবে। বেলা যতই বাড়িতেছিল ততই ক্ষুধা পাইতেছিল। কিন্তু বামুন ঠাকুরাণী আসিল না। সাতদিনে সেই জর ছাড়িল। নীরেন আসিয়া ঔষধ পথ্য দিয়াছে । বামুন-ঠাকুরাণী আর আসেই নাই । কিরণ তারপর নিজের হাতেই রান্না করে, নিজেই লইয়া থায় ।