পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৪৪ প্রবাসী—অগ্রহায়ণ,১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড করিতেছ না; কিন্তু আমিও বাদশা, আমি বাদশার মান ছাড়িব কেন ? তোমাকে এ মনসব লইতে হইবে, তবে তোমার অর্থের যদি প্রয়োজন না থাকে, তুমি দান করিও।” - এই গান সম্বন্ধে নানা প্রবাদ আছে। এক প্রবাদ মতে রাশা তাহাকে গান গাহিতে বলিলে তিনি,"মন রে, কর মাধবলে প্রতি” গান ধরিলেন। সভাসদর বলিলেন, “ও সছে; রাজার গুণবর্ণনা করিয়া একটি গান গাও।” সুরদাস মুখে মুখে নূতন গীত রচনা করিয়া গাহিতেন, পূৰ্ব্বরচিত গীত এমন অবস্থায় গাহিতেন না। তিনি দ্বারিকাতে রাজবেশে শ্ৰীকৃষ্ণের বর্ণনা করিয়া একটি গান গাহিলেন। সভাসদর। আবার বলিলেন, “ও হইল না, তোমার সম্মুখে সম্রাট বসিয়া, তাহার গুণ-বর্ণনা করিয়া একটি গান " কিন্তু সুরদাস মৌন ধারণ করিয়া বসিয়া রছিলেন। স্বয়দাসের সঙ্গী সেবক বা শিষ্যেরা বলিলেন, "হুরদাসজী সাধু হইবার পর ভগবানের গুণগান ছাড়া আর ঠু কাহারও গুণকীৰ্ত্তন করেন নাই।” আকবর এই কথা গুনিয়া সন্তুষ্ট হইলেন, আর পীড়ন করিলেন না। এই গল্পে বোধ হইতেছে, যে, স্বরদাস ১৫৭৪ ও ১৫৮৩ ঈশাদের মধো বাচিয়াছিলেন, কেন না ফতেপুর-সীকরী :১৫৭৩ হইতে ১৫৮৩ পর্য্যন্ত রাজধানী ছিল, ও ১৫৭৪ ঈশাধে মনসব-রীতি স্থাপিত হইয়াছিল। এ সময়ে "হার বৃদ্ধাবস্থা,কিন্তু জন্ম বা মৃত্যুর ঠিক সময় জানা নাই। ইহার পর কোনো সময়ে স্বরদাস গোকুলে দেহরক্ষা তুরিয়াছিলেন । ; : স্বরদাস প্রথম বয়সে, শৈব থাকা কালে, নল-দম্যষ্ঠীর গল্প কবিতায় লিগিয়াছিলেন, কিন্তু এখন সে পুস্তক পাওয়া যায় না। পরিণত বয়সে বৈষ্ণবধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইবার পর জীকৃষ্ণ-বিষয়ক গেয় পদ ছাড়া আর কিছু রচনা করিতেন ন। মধ্যে মধ্যে কেবল কয়েকটি দোহ রচনা করিয়াছিলেন। স্মরণ রাখিতে হইবে যে, স্বরদাসের পূৰ্ব্বজ পণ্ডিত সত্বতেই কবিতা রচনা করিতেন, হিনীতে গেয় পাt. ছাড়া কবিতা-রচনা-প্রথা তখনও প্রচলিত হয় नारे। वौिरङ झन्म ७ अलझान्न थाल्ल ७३ गभत्त्वहे कवि কেশবদাস গ্রচলিত করিয়াছিলেন।

সুরদাসের ‘সুরসাগর” প্রকাণ্ড গ্রন্থ, তাহাতে কবি শ্ৰীমদ্ভাগবতে বর্ণিত শ্ৰীকৃষ্ণের জীবনের প্রত্যেক ছোট-বড় ঘটনা বর্ণনা করিয়া বহু সুললিত পদ রচনা করিয়াছেন। প্রবাদ আছে, পুস্তকখানি যখন রচিত হইয়াছিল তখন তাহাতে একলক্ষ [ মতান্তরে ১,২৫,••• ] পদ ছিল, কিন্তু এখন পাচ হাজার অপেক্ষা বড় বেশী পাওয়া যায় না। তবে এখনও সব সংগ্রহ করা হয় নাই, এ অঞ্চলের সাহিত্যিকরা এখনও চেষ্টা করিতেছেন। হিন্দী ভাষাতে সুরদাসের পদের মত হৃদয়গ্রাহী কবিতা আর নাই বলিলেই হয়। একজন কবি উহাকে লক্ষ্য করিয়া ; বলিয়াছেন, কিধে সুর কোসর লগে ? কিধে। সুর কী পীর ? কিধে1স্থর কো পদ শুনে ? যে অস্ বিকল শরীর ? তোমার কি হইয়াছে ? তুমি কি, কোনো সূরবীরের শরাঘাতে পীড়িত ? কিংবা তোমার কি শূলবেদন হইয়াছে ? কিংবা তুমি কি স্বরদাসের পদ শুনিয়াছ, যে তোমার শরীর এত বিকল হইয়াছে ? বাঙ্গালা সাহিত্যে শ্ৰীকৃষ্ণের ও চৈতন্যদেবের শৈশব ও কৈশোর লীলার অনেক মধুর পদ আছে, তাহাতে সমস্ত জীবনের সত্য ও কল্পিত ঘটনাগুলি অতি মধুর ভাষাতে বর্ণিত হইয়াছে। সেইরূপ সুরদাসের হিন্দী পদগুলিও অতি হৃদয়গ্রাহী ভাষায় বর্ণিত। সেগুলি ভক্ত গায়কের মুখে শুনিতে বড় মধুর। এ দেশের গ্রামে গ্রামে বালক-বালিকা হইতে তানসেনের মত গায়কের পৰ্য্যস্ত অতি আনন্দের সহিত ঐ পদ গাহিয়া থাকে। প্রবাদ অাছে, আকবর বাদশা মিঞা তানসেনের মুখে সুরদাসের পদ শুনিতে ভালবাসিতেন। যখন শ্ৰীকৃষ্ণ দুগ্ধপোষ্য শিশু, দোলায় শুইয়া থাকেন, তখনকার বর্ণনা করিয়া সুরদাস গাহিতেন,— যশোদা হরি পালনে ঝুলাওয়ে, ইহি অন্তর অকুলীয় উঠে হরি যশোমতি মধুরে গাওরে। যখন শ্ৰীকৃষ্ণের কিছু বয়স বাড়িয়াছে, তখন নন্দরাজা তাছার হাত ধরিয়া দাড়াইতে ও হাটিতে শিক্ষা দিতেছেন, শিশু পড়িয়া যাইতেছে, তিনি আবার তুলিয়া দাড় করাইয়া দিতেছেন, বারবার একটা কথা বলাই কথা কহিতে শিখাইতেছেন,— 3