পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨8ર মহিমা নয় ; মাতৃভাষার ইজ্জত অপেক্ষা ইংরেজী ভাষার ইজ্জত বেশী বলিয়া । কিন্তু এদিকেও যে হগওয়ার পরিবর্তন মুরু হইয়াছে, তাহ। সকলেই লক্ষ্য করিয়াছেন-দূরতম প্রদেশের বাঙ্গালও কলিকাতার ভাষা আয়ত্ত করিতে যত্নধান হইতেছেন। ইহা অবগুস্তাবী । দৃষ্টান্তস্বরূপ ইংরেজী standard [ জাতীয় ? ] ভাষার কথাই ধরা যাক । ইংরেজের কথা ছাড়িয়া দিই, স্কটলণ্ডবাসীর পক্ষেও বিশুদ্ধ ইংরেজী আয়ত্ত করা সম্ভব হইয়াছে শিক্ষা ও চর্চার ফলে ; কোনও প্রদেশবাসী ইংরেজ বা থচ ভদ্রলোক যদি এই ভাষাকে আয়ত্ত না করিয়া থাকেন, তধে তাহাতে ওই ভাষার দুৰ্ব্বলতা বা অনুপযোগিতা প্রমাণিত হয় নাব্যক্তিবিশেষের শিক্ষার অভাবই স্থচিত হয় । কথা উঠিতে পারে, এইরূপ একটা standari। ভাৰ্য। দেশময় প্রচলনের যে সুযোগ ও অবষ্ঠাকত। ইংলণ্ডে ছিল বা আছে, তাহ বাংলায় অাছে কি ? যদি তাহান থাকে এবং কখনও তাহ না হয়, তবে তাহার কারণ একই— বাঙ্গালী জাতির জাতীয়তাবোধের বিকাশে বিলম্ব, বাংলা ভাষার মধ্য দিয়াই জাতিয় সৰ্ব্ববিধ আত্মোৎকর্ষ সাধনের ব্যবস্থার অভাব । ইহ। যদি সম্ভব না হয়, তবে ভাষা কেন, এই জাতির জাতীয় জীবনই সঙ্কটাপন্ন হইবে । কিন্তু এ সম্বন্ধে একটা কথা এখনই জোর করিয়া বলা চলে, তাহা এই—বন্থ উপভাষার মধ্যে একটা উপভাষাই যে প্রাধান্ত লাভ করে, তাহ যে রাষ্ট্রনৈতিক বা সামাজিক প্রয়োজনের কারণেই হউক-মুলে তাহ একটা accident-এর মত হইলেও—তাহার গুঢ়তর কারণ ঐ ভাষারই অগুণিহিত শক্তি । বাংলা ভাগীর ইতিহাসে যে উপভাষা এই চক্রবর্বিত্ব লাভ করিয়াছে, শিক্ষিত সমাজের মনোভাবপ্রকাশে সেই ভাষার প্রভাব কোনও সম্প্রদায়িক বা প্রাদেশিক অভিমানের দ্বারাই ক্ষুণ্ণ হইবার নয় ; যাহা নিজ শক্তি শী ও সমৃদ্ধিবলে একবার প্রতিষ্ঠিত হইয়। গিয়াছে, তাহার সহিত আর কোনও উপভাষার প্রতিদ্বস্থিত। অস্বাভাবিক বলিয়াই তাহ অসম্ভব। বর্ধমানে এই ভাষার উপর প্রাদেশিক ভাষার যে উপদ্রব লেখক মহাশয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে, তাহীতেও শেষ পৰ্য্যস্ত কোনও আশঙ্কার কারণ নাই। লেখক-মহাশয় যে উপভাষা’র প্রাধান্ত সম্বন্ধে সন্দিহান হইয়াছেন-ইহা তাহার সেই প্রাধান্তেরই একটি স্পষ্ট প্রমাণ । প্রাদেশিক ভাষাভাষী বাঙ্গালী এই ভাষাকেই আয়ত্ত করিবার একান্ত আগ্রহ সত্ত্বেও, এখনও সম্পূর্ণ সফল হইতে পারিতেছেন না, তাই বহু অশুদ্ধ প্রয়োগ তাহদের ভাষায় ও রচনায় এখনও দেখা যাইতেছে--- কেহ কেহ হয়ত এই অক্ষমতাকেই প্রাদেশিক ভাষার স্তায্য অধিকার বলিয়া দাবী করেন। কিন্তু কতকগুলি গ্রহণযোগ্য শব্দ এই উপায়ে ভাষার অঙ্গীভূত হইয়া গেলেও, ভাষার রীতি প্রকৃতি বা গঠনে 'প্রাদেশিকতা কখনই জয়ী হইবে না ; তার কারণ, বাংলা বৃষ্টির যত প্রসার ঘটিবে, ততই সকল প্রদেশের বাঙ্গালীই এই প্রাদেশিকতার বিরোধী হইবে-ভাষাগত শালীনতাবোধের সঙ্গে সঙ্গে এইরূপ অজ্ঞানপ্রস্থত অভিমান দূর হইবে। বিভিন্ন প্রাদেশিক বুলির কোনো কোনো শব্দ হয়ত বিন আপত্তিতেই এই ভাষায় প্রবেশ করিবে ; প্রাণপণের পাশে অtপ্রাণ’ টি কিয়া থাকিবে ; সঙ্গে'র সঙ্গে সাথে এবং ‘করলে’ বা বললে’র স্থানে বিকল্পে করুল’ বল্ল---এমন কি মোটামুটির সঙ্গে মোটামোটিও হয়ত চলিবে ; কিন্তু 'দোকান দিয়াছে’, ‘দালান BBBS SBBBB BSS SBSBSBB BBB SBS BBBS SBBBS BB ‘আল্গা', 'চোখ টান করে', 'বুক টান করে প্রভৃতি বিশুদ্ধ বুলির ব্যতিক্রম হিসাবেই গণ্য হইবে । এ বিষয়ে বর্তমান উচ্ছ জ্বলতার আর একট। কারণ---বাংলা ভাষার বিশুদ্ধি রক্ষণ-মুলক কোনও প্রতিষ্ঠান এখনও কোনো দিক দিয়াই গড়িয়া উঠে নাই । লেখক-মহাশয়ের মতে বাংলা ভাষার ঐক্যবিধানের আয় এক প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড অন্তরায় পর-ভাষার আক্রমণ। এ বিষয়ে তিনি মুসলমানী বাংলা ও । হিন্দী এই দুই-এর উপদ্রব আশঙ্কা করিয়াছেন। মুসলমানী বাংলা সম্বন্ধে" ভাবিবার আছে বটে, কিন্তু যাহারা ভাষা ও সাহিত্যের জীবনধারার মূল নিয়ম অবগত আছেন, তাহার। এ সমস্তায় বিচলিভ হইবেন না । বাঙ্গালী মুসলমান যদি বাঙ্গালী না হ’ন, তবে তাহার এই দেশে বাস করিয়া কখনও সেই শক্তি সেই প্রতিভার অধিকারী হইবেন না, যাহা দ্বার। এক্ষেত্রে সত্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিত করা সম্ভব। বাংলা ভাষাকে জোর করিয়। আরবী ফারসী উর্দুর ছাচে ঢালিয়া সাঞ্জিবার চেষ্ট। যাহার কfরবেন তাহদের সংখ্যা বাঞ্ছল্য ধেমনই হউক, আমার মনে হয়--উtহার ‘নিহতীঃ পূৰ্ব্বমেব, তাহীদের দ্বারা ভাষার মত এত বড় একটা জীবন্ত সত্য বস্তুর কোনও হt:ণ হইতে পারে না । তাহীদের এইরূপ exporilhout-এর ফলে, আবিষ্ঠকমত অtয়ও কিছু বিদেশী শব্দ বাংলা ভাষার পুষ্টিসাধন করিতে পারে, কিন্তু তদ্বারা বাঙ্গল ভাষার আত্মী বা প্রাণ-শক্তির কোনও ক্ষতি হইবে না। বর্তমানের সাম্প্রদায়িক অক্ষালন ও ছড়াছড়ি ঘে কখনও নিত্যকার সত্য হইতে পারে না, সে বিষয়ে চিন্তাশীল ব্যক্তিমাত্রেরই সন্দেহ নাই । এই উভয় সম্প্রদায়ের মিলনে বাঙ্গালীর জাতীয়তাই আরও ব্যাপক হইয়া উঠিবে, এবং তাহার ফলে বাংলা ভাষা ও সাহিতোর গতি-প্রকৃতি আরও বিচিত্র. আরও বেগবান হইবে বলিয়। আশা করা যায় । মোটের উপর বাংলা ভাষা দি এখনও সেই শক্তি সঞ্চয় করিয়া ন৷ থাকে, যাহ। দ্বারা সৰ্ব্ব অবস্থায় নিজ জাতি-রক্ষণ সম্ভব, তাহ হইলে, বাংলা ভাষা কেন--বাঙ্গালী জাতিত্বই ভবিষ্যৎ নাই বলিতে হয়। বাংলা ভাষায় ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে যাহাঁদের আশঙ্ক। ঘটিয়াছে, তাহারা যে বাঙ্গালীর জাতিগত বৈশিষ্ট্যলোপেরও আশঙ্কা করিবেন ইহাই যুক্তিসঙ্গত ; সম্ভবতঃ উপস্থিত আলোচনার বাদ-প্রতিবাদে সেই বিতৰ্কই উঠিবে, অতএব এখানে এ প্রসঙ্গে আমি আর অধিক কিছু বলিব না। বর্তমানে আমরা এমন এক সমস্তার সম্মুখীন হইয়াছি যাহার সমাধান না হওয়া পয্যন্ত ফলাফল সম্বন্ধে স্থিরসিদ্ধান্ত করা দুঃসাহসমাত্র। আমাদের নেশনত্ব-স্পৃহার মূলে যে বিজাতীয় প্রভাবের চাঞ্চল্য যুগধৰ্ম্মের তাড়নায় ঘটিতে বাবা, তাহাকেই বড় করিয়া দেখা ও দেখানে যে যে-কোনো ব্যক্তির পক্ষেই মহঞ্জ---এধং নানা কারণে কাহারও কাহারও জাতীয় আত্ম-চৈতষ্ঠা আচ্ছন্ন হওয়াও বিচিত্র নয় ; এজন্য সমস্ত অনুকরণ-কৰ্ম্মের অন্তরালে জাতির নিজস্ব প্রবৃত্তি ও ঐতিহ-সংস্কার বা স্বধৰ্ম্ম কি ভাবে নুতন করিয়া পথ খুজিতেছে তাহ বুঝিয়া লইতে হইলে কেবল কতকগুলি সুলভ ও প্রত্যক্ষ তথ্য-প্রমাণের উপর নির্ভর করিলে চলিলে না, এ ক্ষেত্রে কেবলমাত্র তর্ক-যুক্তির দ্বার সত্য-সন্ধান হইবে না । লেখক-মহাশয় এই প্রসঙ্গে হিন্দীর সঙ্গে বাংলার শক্তি-পরীক্ষার কথাও বলিয়াছেন। কিন্তু তিনি বাংলা ভাষার জন্ম-মুলে শৌরসেনী প্রাকৃতের প্রভাব উল্লেখ করিয়া, তাঞ্জিও সেই কারণে বাংলার হিন্দীমুখীনতার যে সিদ্ধাস্ত করিয়াছেন, ভাষাতত্ত্ব বা ভাষার ইতিহাসে সম্যক অধিকার না থাকিলেও আমি এই সিদ্ধান্ত অতিশয় অদ্ভুত বলিয়৷ মত প্রকাশ করিতে কুষ্ঠিত নহি । নদী-প্রবাহ যে পুনরায় উৎসমুথে ফিরিয়া যায়, এমন কথা বোধ হয় evolution-বাদীরাও স্বীকার করেন না। যে মূলভাব হইতে ইংরেঞ্জীর উদ্ভব হইয়াছে, জৰ্ম্মান ভাষা তাহার নিকটতর বংশধয় বলিয়া ইংরেজী কি কোনও অবস্থায় পুনরায় জৰ্ম্মানত্ব লাভ করিবে ? না, ইংরেঞ্জাঁ যে ধরণের একট। স্বতন্ত্র ভাষা" হইয়া উঠিয়াছে---বাংলা এখনও ভাষা-হিসাবেও সে স্বতন্ত্র্য লাভ করে নাই ? লেখকবাঙ্গালী না হইয়। যদি কোনও