পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] পাশার দামে জিৎবাজীটাই যেন সব চেয়ে বেশী কাম্য। জীবনের ক্ষেত্রে যার যতখানি অসাফল্য, এক্ষেত্রে তার উৎসাহ তত বেশী । মানুষ আশা করে যতখানি, নিরাশ হয় সেই পরিমাণে অনেক বেশী, এবং ভুলিয়া থাকিবার জন্য নিতাস্ত বাজে বিষয় লইয়। মাতিয়াও উঠে তত শীঘ্ৰ । পুত্নেশ বেশবিন্যাস শেষ করিয়া কমলকে বলিল, “শুয়ে শুয়ে কি ভাবছ, কমলবাবু ? বোধ হয় বুড়োদের খেলার কথা ।” কমল সে কথার উত্তর না দিয়া বলিল, “এত রান্তিরে বেরুবে ন! কি ?” মুচকি হাসিয়৷ পরেশ বলিল, “বেশ চাদনীরাত, একটু ঘুরে আসাই যাক না। হৈ হৈ হটুগোল ভাল লাগে না । ষাবে ? চল ন! ।” কমল বলিল, “ন।” পরেশ হে হে! করিয়া হাসিয়| উঠিল, বলিল, “কেন সুণ হয় ? কিন্তু সত্যি বলছি ভাই কমলবাবু, এ বড় ভাল নেশা । জীবনে অনেক দুঃখ কষ্টের হাত থেকে রেহাই দেয় ।” কমল ভ্র কুঞ্চিত করিয় তাহার মুখের পানে চাহিয়া অবজ্ঞাভরে বলিল, “যার যাতে তৃপ্তি ! দেন ক’রে ফুৰ্ত্তি করার চেয়ে বিম কিনে খাওয় ঢের ভাল ।” পরেশ উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া উঠিল, “বাহব। বাং ! থাস বলেছ, দেন ক’রে খাওয়ার চেয়ে বিধ কিনে খাওয়া ঢের ভাল । বাঃ বাঃ চমৎকার । তাই ভেবেই ত এ পথ ধরেছি। তবে ত স্তে পয়জন, একটু একটু ক’রে সেই মহাপথেই এগিয়ে দেয়। দুঃখ যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে নয়, আমোদের মধ্যে দিয়ে ।” একটু থামিয়া বলিল, “জানি ভাই, আমাদের সব পথ বন্ধ । ভাল লেখাপড়া জানি মা, মোট মাইনের চাকরি মিলবে না। বাবা পয়স-কড়ি তালুক-মুলুকও কিছু রেখে যাননি, যাতে পায়ের ওপর পা দিয়ে বসে খেতে পারি, স্ফূৰ্ত্তি করতে পারি, জীবনের সার্থকত। খুজতে পারি। তবু যখন চলতে হবে, তখন ভারগ্রস্তের মত বুড়ে খুড়খড়ো হয়ে মুখ ভার ক’রে দুঃখকষ্ট রাজমাত సి یمه مرکه সয়ে কেন চলবো ? এমনি বেপরোয় ক্ষুদ্ৰই স্ত চাই –চল, যাবে ? একবারটি চল, দেখবে সত্যি ক্ষুণ্ণ হয় কি না।” - কমল বলিল, “দুঃপের মধ্যে যে সহিষ্ণুত থাকলে মানুষ মাতৃযের মত চলতে পারে, তা তোমার নেই। অসংযত আনন্দকেই জীবনের সার লক্ষ্য • করেছ, তাষ্ট বিষ গলায় ঢেলে ভাবছে। সুধা খাচ্ছি। কিন্তু সংযমে সে অনিনদ --” - পরেশ বলিল, “রাখ বাজি । আমি হারতে প্রস্তুত আছি। সংযমে কি আনন্দ আমায় বুঝিয়ে দাও । বুঝিয়ে দাও মনুষ্যত্ব কোন পথে ? আমি ভালছেলের মত তোমার হাতে মাসে মাসে ত্রিশটি টাকা এনে দেব। বুঝিয়ে দিতে পার ?” কমল প্রশ্ন করিল, “তোমার দেন। কত ?” হাসি। পরেশ বলিল, “সে আঙুলের পর্বে গুণে উঠতে পারবে না। বুঝতেই ত পারচ–ত্রিশটি টাকা মাইনে। মেসের খরচ, বাবুগিরি স্ফুল্লি ; তবু বাড়ীতে আজিও পৰ্য্যন্থ উপাজনের একটি পয়সা ও দিইনি। মাসকাবারে ای লাঠি ঠুকে কাবুলী সেলাম জানায়, দারোয়ান হাত পাতে, সুরেশবাবু, সুবলবাবু খুচর। দু-চার আনার জন্য কত-না মিষ্টি মিষ্টি কথা শুনিয়ে দেন। উড়ে বেহারাট। পৰ্য্যস্ত সেদিন উড় নিখানা ছিনিয়ে নিলে। তার ওপর পানওয়াল, খাবার ওয়াল, বিড়ি-সিগারেট৭:ণ: স্ত আছেই।” সে পরম আনন্দে মাথা নাড়িয়া বলিতে লাগিল, “পারবে বন্ধু, আমায় টেনে তুলতে ? বল ত বাজি রাথি : আজ থেকে মদ সিগারেট বাবুয়ানী, স্ফূৰ্ত্তি সব ছেড়ে দিচ্ছি।” শুনিতে শুনিতে কমলের দম বন্ধ হইয়া আসিতে{}; এ যে নিরন্ধ, অন্ধকারে গভীর পঙ্কে আকঃনিমজি রসাতলের যাত্রী ! কোন পল্লীর কুটীরচ্ছায়ে প্রতি প্রভাতে, প্রতি সন্ধঃ বেদনাময় আশ বুকে বহিয়া বুদ্ধ মা তরুণী ভাষ্য। ইহার উন্নতি শ্ৰী কামনা করিয়া ভগবানের চরণে ঐকান্তিক প্রার্থনা জানান ! প্রতি নিঃশ্বাসে কি গভীর বিশ্বাসই