পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨8b প্রবাসী অগ্রহায়ণ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড একখণ্ড সোনালী ছাপা কাপড় ; সবগুলি একটি রঙ-কর ফুল-জাক কাঠের থালার উপরে ছিল । আমি সেগুলি ডানহাত দিয়ে স্পর্শ করে স্বীকার করলুম। পরের দিন আমাদের মোটরে সেগুলি পুঙ্গব মুখবতী তুলে দেন । প্রতিদানে আমিও আমার সঙ্গে ক’রে আনা পূজার তৈজসপত্রগুলি পুঙ্গবকে উপহার দিই। এই কাপড়চোপড়গুলি বলিদ্বীপে একবার পরেছিলুম। পুঙ্গব মুখবর্তী ডচ ভাষায় অনেকগুলি:ছবিওয়ালা একখানি ছোট বই essffers zo't Etga-Hoe die Balier zich kleedt ‘বলিদ্বীপীয়েরা কিভাবে কাপড় পরে’ । এই বইয়ে তিনি ব’লছেন যে বলির জীবনযাত্রা শীঘ্র শীঘ্ৰ বদলাচ্ছে, লোকেদের পোষাক পরিচ্ছদও তাই ব’দলে অন্য ধরণের হ’য়ে যাবে—এই জন্য ভবিষ্যৎ কালের লোকেদের উদ্দেশ্বে বলিদ্বীপীয়দের প্রাচীন পোষাক পরিচ্ছেদের একটা সচিত্র বর্ণন। তিনি লিখে রেখে যাচ্ছেন। স্বরেন বাবু এদের কাপড় পরার রীতি দেখে শিথে নিয়েছিলেন । তারই সাহায্যে পুঙ্গব স্থখবতীর দত্ত কাপড় প’রেছিলুম, আর সুরেনবাবু সেই কাপড় পরিয়ে আমার এক ছবিও নিয়ে ছিলেন। মাথার রুমালের পাগড়ী, আর বলিদ্বীপীয় কায়দায় পাগড়ীর নীচে পর জবাফুলটা বাদ দিয়ে, পুঙ্গবের প্রদত্ত বস্ত্র আর উত্তরীয় প’রে বাঙলা দেশে পূজাবাড়ীর দালানে, বা ভারতের কোনও দেবমন্দিরে হাজির হ’লে,- বিদেশীয় বা অ ভারতীয় পোষাক প’রে এসেছি একথা কেউ বলতে পাবৃত না। কাপড়ের কাজট। আমাদের দেশের পক্ষে একটু অসাধারণ হ’লেও, আমাদের ভারতীয় চেলী বা বেনারসী বা অন্য ধরণের জরীতোল রঙীন পট্টবক্সের সঙ্গে এ জিনিস বেশ চলে যায়— মোটেই বেখাপ বা বেমানান হয় না । সাতটা সাড়ে সাতটায় আমার পাঠ শেষ হ’ল । আগে থেকেই ঠিক ছিল, কোপারিবার্গের পরামর্শ-মতন, সন্ধের পরে যে যাত্র নাচ গান অভিনয় সাধারণের জন্য রাজপ্রাসাদে ঢালাও ভাবে হবে, আমর। সে সব দেখবো । দেথে শুনে ফিরতে রাত হবে, তাই আমরা সঙ্গে ক’রে কিছু খাবার এনেছিলুম—পনীরের স্যাণ্ডুষ্টচ, ডিম সিদ্ধ, কলা। পাঠের পরে, রাজবাড়ীর আর এক আঙিনায় দেখি, মুখস-পরা তোপেঙ’ যাত্রার আসর ব’সেছে । ডচ আর আমেরিকান দর্শক কতকগুলি রয়েছেন ; এই ক’দিনে অনেকের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হ’য়েছে । এদের জন্য কতকগুলি চেয়ারের ব্যবস্থা ক’রে দিয়েছে। একটা তক্তপোষের মতন কাঠের বসবার জায়গায় অভিজাত শ্রেণীর বলিদ্বীপীয় অভ্যাগতেরা ব’সেছেন ; সাধারণ লোকে ভূয়ে ব’সেছে। ‘তোপেঙ’ যাত্রা গিয়াঞারে আগেই দেখেছি, এথানেও সেই রকমের । অভিনেতাদের চেয়ে দর্শক আর শ্রোতৃবর্গ আমাদের কৌতুহল আকৃষ্ট বেশী ক’রছিল। ডচ চিত্রকর Sayers তার এক পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ ক’রিয়ে দিলেন । এই ব্যক্তিটা আমেরিকান, নাম A. Rooseveldt, গত আড়াই বছর ধ’রে বলিদ্বীপে আছেন -একটা Tourists' Agents-এর আপিস আছে এর ; বিদেশী যাত্রীদের বলিদ্বীপ দেথবার ব্যবস্থা সেখান থেকে করা হয় । এ ছাড়া লোকটী নিজেও একজন চিত্রকর অার ভালো ফোটোগ্রাফর। বলিদ্বীপের লোকদের প্রতি এর খুবই টান । ব’ল্লে, আমি তো বালিনীজ হ’য়ে গিয়েছি । বলিদ্বীপের লোকেদের অনেক রীতিনীতির খুবই প্রশংস৷ ক’রলে। তবে বলিদ্বীপ আর যে সত্যযুগের স্বৰ্গরাজ্য থাকছে না, কালধৰ্ম্মে সবই বদলাচ্ছে, সে কথাও ব’লল । ব’ল্লে—মশায়, এই আসরে এখন দেখছেন প্রায় দু'আনী লোকে-কি মেয়ে কি পুরুষ-গায়ে একটা ক’রে জাম। চড়িয়েছে ; দেড় বছর দু বছর পূৰ্ব্বে এদেশে যখন প্রথম আসি, তখন এত বড়ো আসরটায় দুজন লোকের গায়েও জামা থাকৃত না, সব নিজেদের দেশের চমৎকার 'বাতিক’ কাজের ছোবানে কাপড়ের একখানা ক’রে উত্তরীয় মাত্র কাধে ফেলে বা কোমরে জড়িয়ে আস্ত। লোকেদের মতিগতি যে এখন আধুনিক জগতের উপযোগী হ’য়ে উঠছে, তা তাদের এই পোষাকের ফ্যাশান বদলানে} থেকে বুঝতে পারা যায়। ‘তোপেঙ’ যাত্রায় বেশীক্ষণ লাগল না, শীগগির শীগগির শেষ ক’রে দিলে। এর পরে Hardja “হার্জী ব’লে একরকম গীতিনাট্ট হবে, সেটা ব’সতে অল্প কিছু দেরী হবে। আমরা তখন আমাদের মোটরে গিয়ে