পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬০ SAS SSAS SSAS SSAS SSAS ধৰ্ম্মযাজক বলিলেন, “আপনার কথা ঠিক বুঝতে পারিলাম না ।” জুয়ান ডি আরেভালো বলিলেন, “আমি দরিদ্র এবং অখ্যাতনামা ছিলাম, উদরামের বেশী আর কিছু আকাজক্ষা করিতে পারি নাই ! যশ অন্যেই অর্জন করিয়াছিল ।” ধৰ্ম্মযাজক বলিলেন, “আপনাকে এতবড় কাজের ভার দিয়া আমরা যে ঠকিব না, ইহার ত কোনো প্রমাণ আপনি দিতে পারিলেন না । কাজ দিতে না পারায় আমি বিশেষ দুঃপিত হইলাম।” স্থপতি কিছুক্ষণ চিন্তা করিয়া বলিল, “মহাশয়, আমি এমন একটি জামিন দিতে পারি মাহাতে আপনিও সন্তুষ্ট হইবেন ।” প্রধান ধৰ্ম্মযাজক বলিলেন, “কি সে ?” করিল, “আমার প্রাণ ।” ধৰ্ম্মযাজক বলিলেন, “ভাল করিয়া বুঝাইয়া বলুন ।” স্থপতি বলিল, “সেতুর মধ্যস্থ খিলানের নীচের কাঠের ভারা যখন সরানো হইবে, আমি তখন তাহার উপর দাড়াইয়া থাকিব। সেতু যদি ভাঙিয়া পড়ে, আমিও উইrর সহিত সমাধিস্থ হইব ।” ধৰ্ম্মযাজক বলিলেন, “ভাল কথা, আমি আপনার প্রস্তাবে সম্মত হঠলাম।” স্থপতি বলিলেন, “প্রভু, আপনি আমার উপর বিশ্বাস স্থাপন করিয়া দেখুন, আমি নিশ্চয়ই কাজটি স্বসিদ্ধ করিতে পারিব।” ধৰ্ম্মযাজক স্থপতিকে প্রচুর সৌজন্যসহকারে বিদায় দিলেন। যুবক আশাপূর্ণ হৃদয়ে গৃহে ফিরিয়া চলিলেন । তাহার স্ত্রী উদ্বিগ্নভাবে তাছার অপেক্ষা করিতেছিলেন । বহু দুঃখকষ্ট সহ করা সত্ত্বেও শিল্পী-পত্নী অতুলনীয় রূপসী ছিলেন । স্থপতি চুটিয়া আসিয়া তাহাকে বাহুবন্ধনে বাধিয়া বলিলেন, “প্রিয়তম ক্যাথারিন, এই নগরের শোভাবৰ্দ্ধনকারী যে-সকল স্থাপত্যের নিদর্শন থাকিবে, তাহার ভিতর একটি আমার নাম চিরস্মরণীয় করিবে। আমি সেতু - নিৰ্ম্মাণ করিবার আদেশ পাইয়াছি।” স্থপতি উত্তর প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড দিন কাটিয়া চলিল। টেগস নদীর ধারে দাড়াইয় নগরবাসীরা আর বলিত না, “এইখানে এককালে সান মাটিনের সেতু বিরাজ করিত। নূতন সেতু নিৰ্ম্মিত হইতেছিল, মাঝের খিলানটি এখন স্পষ্টই দেখা যাইত । যদিও সেতুর নিয়ে ও চারিপাশে তখনও কাষ্ঠের মঞ্চ বাধা ছিল, তবু উহার সৌন্দর্য্য বুঝা যাইত । পুরাতন সেতুর ধ্বংসের উপরেই নূতন সেতুটি নিৰ্ম্মিত হইতেছিল। রাজা, প্রধান ধৰ্ম্মযাজক ও নগরবাসী সকলে মিলিয়া স্থপতিকে প্রশংসা করিতেছিলেন এবং তাহার উপর উপহার বর্ষণ করিতেছিলেন। টেগসের খরস্রোতের বাধা অতিক্রম করিয়া শিল্পী অসাধারণ নৈপুণ্যসহকারে নূতন সেতু নিৰ্ম্মাণ করিতেছিলেন । ইহাতে তাহার সাহসেরও যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া যাইতেছিল । টলিডো নগরের রক্ষাকৰ্ত্তা সাধু ইডেলফানসোর বাংমরিক উৎসবের দিন আসিয়া পড়িল ৷ জুয়ান ডি আরেভালে প্রধান ধৰ্ম্মযাজককে জানাইলেন যে সেতুর কাজ শেষ হইয়াছে, এখন কাঠের ভারাগুলি সবাইয়া লষ্টলেষ্ট হয়। ধৰ্ম্মযাজক এবং নগরবাসীরা এ সংবাদে অত্যন্ত আনন্দিত ইটপাথরের গাথনির নীচের কাঠের ভারা সরানো ব্যাপারট। যথেষ্ট বিপদজনক, কারণ গাথুনি উপযুক্ত পরিমাণ দৃঢ় না হইলে কাঠের ভরি সরানোমাত্রই নদীর ভীমস্রোতের আঘাতে হক্টলেন । সমস্ত সেতুটি ভাণ্ডিয় পড়িবে। কিন্তু স্থপতি নিজেই খিলানের উপর দাড়াইয়া থাকিবেন বলিয়া অঙ্গীকার করাতে কেহই কোনো বিপদের আশঙ্ক{ ছিলেন না। স্থপতিও পরিপূর্ণ বিশ্বাসের সহিত কাজ করিতেছিলেন। পরদিন সেতুটিকে পবিত্র বারিসিঞ্চন করিয়া ও আশীৰ্ব্বাদ করিয়া সাধারণের যাতায়াতের জন্য উন্মুক্ত করা হইবে বলিয়া স্থির করা হইল। টলিডে শহরে যক্ষগুলি গির্জা ছিল, প্রত্যেকটিতে আনন্যসূচক ঘণ্টাধ্বনি হইতে লাগিল। নগরবাসীরা উচ্চস্থানে উঠিয়া আশাপূর্ণ হৃদয়ে সিগারেলস প্রান্তরের দিকে চাহিয়া দেখিতে লাগিলেন। প্রাস্তরটি বহু বৎসর নিস্তন্ধ ও জনহীন অবস্থায় পড়িয়া ছিল, কারণ সান করিতে