পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৮২ দেওয়া হয় যেখানে সৰ্ব্বদ। গাড়ী চলাচল হয় । সুতরাং তাহাদের কোন বিপদের সম্ভাবন ছিল না । ইহাকে অমামুষিক দুর্ব্যবহার বলা যায় না। কিন্তু ইহাতে সৰ্ব্বসাধারণের মন উত্তেজিত হওয়ায় পুলিস কমিশনার বলিয়াছেন, যে, এরূপ আর করা হইবে না ।” লাটসাহেবের এই কৈফিয়ৎটার কোন মূল্য নাই । পুলিসের ব্যবহার অমাতুষিক ন হইতে পারে—আমরাও ওজন না করিয়া কড়া-কড়া বিশেষণ ব্যবহারের পক্ষপাতী নহি–কিন্তু ইহা যে দুর্ব্যবহার তাহাতে সন্দেহ নাই । যদি উহা দুব্যবহার না হইবে, যদি উহা নিতান্ত অনাবশ্বক ও উচ্ছম্বল বেআইনী কাজ না হইবে, তাহা হইলে “উহ। আর করা হইবে না” কেন বলা হইতেছে ? লোকের মন উত্তেজিত হইতেছে, অতএব ইহা আর করা হইবে না, বলায় কেহ ভুলিবে না। লাঠিপ্রয়োগেও ত সৰ্ব্বসাধারণের মন উত্তেজিত হইতেছে, কিন্তু তাহা ত বন্ধ করা হইতেছে না । তাহার কারণ এই যে, গবন্মের্ণট মনে করেন সত্যা গ্রহ দমন করিবার তাহা একটা উপায় । বোম্বাই-লাট যে তদন্ত করাইয়াছেন, তাহা সম্ভবতঃ পুলিসের বা তদ্বিধ সরকারী চাকর্যেদের দ্বারা । তাহারা যাহ। বলিবে, তাহাই বেদবাক্য । এক্ষেত্রে এই সরকারী তদন্তের ফল সত্য বলিয়া বোম্বাইয়ের কোন শ্রেণীর লোক যে বিশ্বাস করে না, তাহার প্রমাণ এই যে, বোম্বাইয়ের মিউনিসিপালিটীর সভায় কেবল তিন জন ছাড়া সব সভ্যের মতে পুলিসের বিরুদ্ধে প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছে, পারসীদের সভায় পুলিসের কাজের নিন্দ হইয়াছে, বোম্বাইয়ের বহুসংখ্যক নাইটদের পত্নী লেডিদের ও অন্য সন্ত্রান্ত মহিলাদের দ্বার। আস্থত এক বৃহৎ নারীসভায় পুলিসের কাজ নিন্দিত হইয়াছে, এবং বোম্বাইয়ের পচিশ হাজার লোকের স্বাক্ষরযুক্ত এক অকুরোধপত্রে তথাকার শেরিফকে এই ঘটনার আলোচনা করিবার জন্ত নগরবাসীদের এক সভা আহবান করিতে বলা হইয়াছে । [পরে প্রকাশ, অনুরোধ বক্ষিত হয় নাই । ] মহিলাদিগকে গ্রেপ্তার করিয়া জেলে না পাঠাইতে ত কেহ অকুরোধ করে নাই, অনেক মহিলাকে ত জেলে পাঠান হইয়াছে। আইন যেমনই হউক, আইন অনুসারে কাজ হইলে ত সত্য গ্রহীরা তাহাতে আপত্তি করে না । জঙ্গলের কাছে ন হইলেও শহর হইতে দূরে মহিলাদিগকে ছাড়িয়া দিয়া আসাটা কি রকম ব্যবহার ? তাহার ইণটিয়া বাড়ী পৌছিবেন এরূপ কেন মনে করা হইয়াছিল ? কিংবা ভাড়াটিয়া গাড়ী জুটিবে এবং মহিলাদের কাছে ভাড়াও থাকিবে, ইহাই বা কেন ধরিয়া লওয়া হইয়াছিল ? [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড বস্তুতঃ কিন্তু মহিলাদিগকে জঙ্গলের ধারে ছাড়িয় দেওয়৷ হইয়াছিল, এবিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। বোম্বাইয়ের সন্ধান্ত হাজার হাজার পুরুষ ও মহিলা মিথ্যা কথা বলিতেছেন এবং পুলিসের লোকেরাই সত্য কথা বলিতেছে, ইহা বিশ্বাসযোগ্য নহে । এই রকম ব্যাপার নূতন নহে। মেদিনীপুর জেলায় কতকগুলি মহিলাকে পুলিস গ্রেপ্তার করিয়া গাড়ী করিয়৷ লোকালয় হইতে অনেক দূরে লইয়া গিয়া ছাড়িয়া দিয়াছিল। লক্ষ্মৌতে পুলিস কতকগুলি মহিলাকে অন্ধকার রাত্রিতে শহর হইতে দূরে মাঠে ছাড়িয়া দিয়া আসিয়াছিল । জাতীয় পতাক৷ কড়িয়া লইবার জন্য মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া ও ধস্তাধস্তি করা সম্বন্ধে বোম্বাই-লাট বলেন, “আমি দেখিতেছি, কোন স্থলেই নূ্যনতম বল অপেক্ষা বেশী বল প্রযুক্ত হয় নাই। একটি বে-আইনী সভ দ্বারা জাতীয় পতাকা অভিবাদন অকুষ্ঠানের বন্দোবস্ত হইয়াছিল, এবং ঐ অসুষ্ঠান নিষেধ করা হইয়াছিল । ঐ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনে বাধা দিবার জন্য পুলিসকে পতাকাগুলি কাড়িয়া লইতে হয়। মহিলার তাহাতে যথাশক্তি বাধা দিতেছিলেন। সুতরাং কিছু ঠেলাঠেলি কাড়াকড়ি অনিবাৰ্য্য হইয়াছিল। নারীদের প্রতি বলপ্রয়োগে আমার চেয়ে কেহ বেশী দুঃখিত নহে। কিন্তু র্যাহারা নারীদিগকে আইনলজখকের অবস্থায় স্থাপিত করেন দায়িত্ব র্তাহীদের । অতীত কয়েক মাস ধরিয়া কংগ্রেস মহিলাদিগকে সামনে খাড়া করিতেছেন, বে-আইনী সভ মিছিল প্রভৃতি কাজে তাহাদিগকে যোগ দেওয়াইতেছেন । অন্ত যে সব দেশে নারীরা আইন অগ্রাহ করায় ব্যাপৃত হইয়াছিল, সেখানে পুলিস যে রূপ প্রণালীতে কাজ করিয়াছিল, এখানে তাহার। তাহা অপেক্ষা কম কড়া ব্যবহার করিতেছে । সৰ্ব্বসাধারণের মধ্যে সাধারণ বিবেচনা ও কাণ্ডজ্ঞানের জয় হইবে, আশা করা যায় না কি ?...যদি পুরুষ ও নারীরা আইন ভঙ্গ করিতে থাকে, তাহা হইলে, আমার আশঙ্কা হয়, উভয়ের বিরুদ্ধেই সমভাবে আইনের মর্যাদা রক্ষা করা ভিন্ন উপায় নাই।” | কর্তৃপক্ষের মুখে আইনের মর্য্যাদা রক্ষার কথা শুনিলে হাসি পায় । - যেখানে বলপ্রয়োগের কোনই প্রয়োজন ছিল না, সেখানে প্রযুক্ত বলট। নূন্যতম বা অধিকতম ছিল, তাহা বিবেচনা করা অনাবশ্যক। যে-সকল মহিলার হাতে জাতীয় পতাকা ছিল, তাহাদিগকে গ্রেপ্তার করিলেই হইত। অন্য সত্যাগ্রহীদের মত র্তাহারা তাহাতে বাধা দিতেন না। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্গত সব