পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৯০ প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড পিকেটিঙের জন্য বেত্ৰাঘাত সত্যাগ্রহীদের সরকারী আদালতে বিচারের সময় র্তাহার। আত্মপক্ষ সমর্থন না করায় এবং দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল না করায় কোন কোন স্থলে অবিচারের যে প্রতিকার হইতে পারিত তাহ হয় না । ইহা আমরা সাধারণভাবে বলিতেছি । তাহারা যে ব্রিটিশ আইন আদালত মানেন না, সমুদয় সরকারী কাজকৰ্ম্মকেই ইংরেজদের অনধিকার চর্চ মনে করেন, তাহ! তাহারা ভাল করেন বলিয়াই তাহাদের বিশ্বাস। সে বিষয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নাই । সত্যাগ্ৰহঘটিত আইনভঙ্গের জন্য অাগে আগে বঙ্গের বাহিরে কয়েক জায়গায় অভিযুক্ত কয়েক ব্যক্তির বেত্ৰাঘাত দণ্ড হুইয়াছিল । সম্প্রতি কলিকাতায় একজন বাঙালী ম্যাজিষ্ট্রেট পিকেটিঙের জন্য দুজন বালককে বেত্ৰাঘাত দণ্ড দেন, বেত মারাও হইয়া যায় । তাহার পর একজন উকীল প্রধান প্রেসিডেন্সী ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট বলেন, যে, পিকেটিঙের জন্য বেত্রাঘাতের ব্যবস্থা কোন আইনে বা অর্ডিন্যান্সে নাই। প্রধান ম্যাজিষ্ট্রেট বিবেচনা করিবার জন্য সময় লইয়া পরে বলেন, যে, দণ্ড দাতা ম্যাজিষ্ট্রেট ভুল করিয়াছেন। চমৎকার ভুল ! ছেলে ছুটি যে বেত খাইল, তাহার কি প্রতিকার হইবে ? দণ্ডদাতা ম্যাজিষ্ট্রেটের কিছু শাস্তি, অন্ততঃ পদাবনতি হওয়া উচিত নয় কি ? যে-সব অপরাধ দুনীতিমূলক, তাহার জন্যই পাকা বদমায়েসদের বেত মারিবার ব্যবস্থা আছে, এবং তাহাও সভ্যদেশসমূহে বর্জিত হইতেছে। অতএব পিকেটিঙের জন্য বেতমারা যে কত বড় অন্যায় কাজ তাহা সহজবোধ্য। বোম্বাইয়ের পুলিস কমিশনারের ধমকানি গবন্মেণ্ট কংগ্রেসকমিটি প্রভৃতি যে-সকল সভ} সমিতিকে বেআইনী বলিয়া ঘোযণা করিয়াছেন, তাহাদের কাজের সংবাদ, তাহাদের অধিবেশনে গৃহীত প্রস্তাব,আগে হইতে তাহদের ভবিষ্যৎ অনুষ্ঠানের সংবাদ প্রভৃতি মুদ্রিত করায় বোম্বাইয়ের পুলিস কমিশনার বোম্বাইয়ের তিন খানি দেশী দৈনিক ইংরেজী কাগজকে ধমক দিয়াছেন, যে, এরূপ কাজ ফৌজদারী কাৰ্য্যবিধি আইনের মধ্যে পড়ে। বোম্বাইয়ের সাংবাদিকগণ পুলিস কমিশনারের এই ধমকের প্রতিবাদ করিয়াছেন। কোন কাজ যে কি আইন বা অর্ডিন্যান্স অনুসারে দণ্ডনীয়, তাহ বলিবার কোন প্রয়োজন দেখি না। কারণ, সরকারের অনভিপ্রেত যে-কোন কাজের জন্য দণ্ড দিবার মত ব্যবস্থা আইনে বরাবর আছে । তাহ। থাকা সত্ত্বেও, অধিকন্তু, অতি সত্বর নূতন নূতন অর্ডিন্যান্স জারি হইতে পারে। বোম্বাইয়ের পুলিস-সর্দার যে-সব সংবাদ ছাপা আইনবিরুদ্ধ বলিতেছেন, তাহ প্রেস অর্ডিন্যান্সেও নিষিদ্ধ ছিল না, এবং প্রেস অর্ডিন্যান্স বলবৎ থাকার সময়েও অনেক কাগজ সেরূপ সংবাদ ছাপিয়া দণ্ডিত বা তিরস্কৃত হয় নাই । কিন্তু এই পুলিস-সর্দারের মত যদি ঠিক হয়, তাহা হইলে আগে হইতেই ফৌজদারী কাৰ্য্যবিধি মজুত থাকা সত্ত্বেও প্রেস অর্ডিন্যান্স জারি করিবার এমন কি বিশেষ প্রয়োজন ঘটিয়াছিল ? কোন প্রকার অস্থাবর সম্পত্তির দ্বারা কোন বেআইনী সভাসমিতির কাজের সাহায্য হইলে নবম অর্ডিন্যান্স অনুসারে পুলিস তাহ বাজেয়াপ্ত করিতে পারে, এবং যে গৃহে ঐ সাহায্য হয় তাহার বর্তমান অধিকারীকে তাড়াইয়া দিয়া তাহা দখল করিতে পারে। বোম্বাইয়ের পুলিস কমিশনার তাহা হইলে ইহাও বলিতে পারেন, যে, যেহেতু বম্বে ক্রনিক্ল, ফ্রীপ্রেস জনাল এবং ইণ্ডিয়ান ডেলীমেলের প্রেস ইত্যাদি এইরূপ সাহায্য করিতেছে, অতএব তৎসমুদয় বাজেয়াপ্ত হইল, এবং ঐ কাগজ তিনখানির প্রেসের বাড়ী ও আফিস-বাড়ী পুলিসের আয়ত্ত হইল । গোল টেবিল বৈঠক ও দমনের প্রকোপ অনেক বার বলিয়াছি, প্রতি সপ্তাহে গবন্মেণ্ট বলেন, আইনলঙ্ঘন প্রচেষ্টা দুৰ্ব্বল হইতেছে, এবং তাহার সঙ্গে সঙ্গে নুতন নূতন অর্ডিন্যান্সও জারি