পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] রাশিয়ায় সকল মানুষের উন্নতির চেষ্টা ©e:S গুণপনা, কেউ কারো কাছ থেকে জোর করে কেড়ে নিতে পারে না, সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া চলে, ফাকি দেওয়া চলে । সেই কারণে সম্পত্তি বিভাগ ও ভোগ নিয়ে সমাজে এত নিষ্ঠুরতা, এত ছলনা, এত অস্তহীন বিরোধ। এর একটি মাঝামাঝি সমাধান ছাড়া উপায় আছে বলে মনে করিনে—অর্থাৎ ব্যক্তিগত সম্পত্তি থাকবে অথচ তার ভোগের একাস্ত স্বাতন্ত্রাকে সীমাবদ্ধ করে দিতে হবে। সেই সীমার বাইরেক্ষার উদ্ভূক্ত অংশ সৰ্ব্বসাধারণের জন্তে ছাপিয়ে যাওয়া চাই। তা হলেই সম্পত্তির মমত্ব লুব্ধতায় প্রতারণায় বা নিষ্ঠুরতায় গিয়ে পৌছয় না। সোভিয়েটরা এই সমস্তাকে সমাধান করতে গিয়ে তাকে অস্বীকার করতে চেয়েচে । সেজন্যে জবরদস্তির সীমা নেই । একথা বলা চলে না যে, মাহুষের স্বাতন্ত্র্য থাকবে না, কিন্তু বলা চলে যে স্বার্থপরতা থাকবে না। অর্থাৎ নিজের জন্যে কিছু নিজত্ব না হ’লে নয়, কিন্তু বাকি সমস্তই পরের জন্যে হওয়া চাই । আত্ম এষং পর উভয়কেই স্বীকার করে তবেই তার সমাধান সম্ভব । কোনো একটাকে বাদ দিতে গেলেই মানব-চরিত্রের সত্যের সঙ্গে লড়াই বেধে যায়। পশ্চিম মহাদেশের মানুষ জোর জিনিষটাকে অত্যস্ত বেশি বিশ্বাস করে । যে-ক্ষেত্রে জোরের যথার্থ কাজ আছে সেক্ষেত্রে সে খুবই ভালো, কিন্তু অন্যত্র সে বিপদ ঘটায় । সত্যের জোরকে গায়ের জোরের দ্বারা যত প্রবলভাবেই আমরা মেলাতে চেষ্টা করি, একদা তত প্রবলভাবেই তাদের বিচ্ছেদ ঘটে । মধ্য-এশিয়ার বান্ধির রিপাব্লিকের ( Bashkir Republic ) একজন চাষী বললে, “আজও আমার নিজের স্বতন্ত্র ক্ষেত আছে, কিন্তু নিকটবৰ্ত্তী ঐকত্রিক কৃষিক্ষেত্রে আমি শীঘ্রই যোগ দেব। কেননা দেখেছি স্বাতন্ত্রিক প্রণালীর চেয়ে ঐকত্রিক প্রণালীতে ঢের ভালো জাতের এবং অধিক পরিমাণে ফসল উৎপন্ন করানো যায়। যেহেতু প্রকৃষ্টভাবে চাষ করতে গেলেই যন্ত্র চাই, ছোটো ক্ষেতের মালিকের পক্ষে যন্ত্র কেনা চলে না। তা ছাড়া, আমাদের টুকরো জমিতে যন্ত্রের ব্যবহার অসম্ভব ।” আমি বললুম, “কাল একজন উচ্চপদস্থ সরকারী 8 ♚-२ কৰ্ম্মচারীর সঙ্গে আলাপ হ’ল। তিনি বললেন, মেয়েদের এবং শিশুদের সর্বপ্রকার স্বযোগের জন্যে সোভিয়েট গবমেন্টের স্বারা যেরকম সব ব্যবস্থা হয়েচে এরকম আর কোথাও হয় নি। আমি তাকে বললুম, তোমরা পারিবারিক দায়িত্বকে সরকারী দায়িত্ব করে তুলে হয়ত পরিবারের সীমা লোপ করে দিতে চাও। তিনি বললেন, সেটাই যে আমাদের আশু সঙ্কল্প তা নয় –কিন্তু শিশুদের প্রতি দায়িত্বকে ব্যাপক করে দিয়ে যদি স্বভাবতই একদা পরিবারের গগুী লোপ পায় তা হ’লে এই প্রমাণ হবে সমাজে পারিবারিক যুগ সঙ্কীর্ণতা এবং অসম্পূর্ণত বশতই নবযুগের প্রসারতার মধ্যে আপনিই অন্তৰ্দ্ধান করেছে । যা হোকৃ, এ সম্বন্ধে তোমাদের কি মত জানতে ইচ্ছে করি । তোমরা কি মনে করো যে তোমাদের একত্রীকরণের নীতি বজায় রেখে পরিবার বজায় থাকতে পারে ?” সেই যুক্রেনিয়ার যুবকটি বললে, “আমাদের নূতন সমাজব্যবস্থা পারিবারিকতার উপর কি রকম প্রভাব বিস্তার করেচে আমার নিজের দিক থেকে তার একটি দৃষ্টাস্ত দিই। আমার পিতা যখন বেঁচেছিলেন শীতের ছয় মাস তিনি শহরে কাজ করতেন আর গরমের ছয় মাস ভাই বোনদের নিয়ে আমি ধনীর চাকরি নিয়ে পশুচারণ করতে যে তুম। বাবার সঙ্গে আমাদের দেখা প্রায়ই হ’ত না, এখন এরকম বিচ্ছেদ ঘটে না । শিশুবিদ্যালয় থেকে আমার ছেলে রোজ ফিরে আসে, রোজই তার সঙ্গে দেখা হয় ।” - একজন চাষী-মেয়ে বললে, “শিশুদের দেখাশোনা ও শেখানোর স্বতন্ত্র ব্যবস্থা হওয়াতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝণটি ঢের কমে গেছে । তা ছাড়া, ছেলেদের সম্বন্ধে দায়িত্ব যে কতখানি তা বাপ মা ভালো করে শিখতে পারচে ” একটি ককেশীয় যুবতী দোভাষীকে বললে, “কবিকে বলো, আমরা ককেশীয় রিপাব্লিকের লোকেরা বিশেষ করেই অনুভব করি যে, অক্টোবরের বিপ্লবের পর থেকে আমরা যথার্থ স্বাধীনতা এবং সুখ পেয়েছি । আমরা নতুন যুগ স্বষ্টি করতে প্রবৃত্ত, তার কঠিন দায়িত্ব খুবই