পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

אלפי প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড চলিয়াছ সেইদিকে যদি মুখ বা পিছন করিয়া আমরা দাড়াইয়া থাকি তো তুমি দেখিবে আমরা খাড়াইএ, চড়ড়ায় ঠিক আছি, তবে একেবারে চেপট হইয়৷ গিয়াছি, পেটে পিঠে প্রায় ঠেকিয়া গিয়াছে। সময়ের দিক দিয়াও আমরা অদ্ভুত পরিবর্তন সব দেখিব। পৃথিবী হইতে দেখিব এরোপ্লেন মধ্যে তোমার নড়াচড়ার গতিবিধি খুব টিমেচালে চলিতেছে— বেড়াইতেছ টুক্‌টুক্‌ করিয়া ধীরপদবিক্ষেপে, হাই তুলিতে ই করিয়া আছ তো আছই, মুখের বিড়ি শেষই আর হয় না। অবশু তুমি বলিবে-আরে, আমি যে তোমাদের সম্বন্ধে অবিকল ঐ রকমই দেখিতেছি । সময়ের দিক দিয়াও আইনষ্টাইনের আপেক্ষিক-তত্ত্ব হইতে এমন সব মজার মজার কথা আসিয়া পড়ে যাহা শুনিতে একেবারে রূপকথা ভিন্ন আর কিছুই মনে হইবে না। মনে কর,একখান এরোপ্লেন করিয়৷ বহুদিনের জন্য খাবার জিনিষপত্র লইয়া শূন্তপথে তুমি যাত্রা করিলে ; তোমার এরোপ্লেন যাইবে আলোর বেগ অপেক্ষ কিছু কম বেগে ; ঘড়ি তোমার সঙ্গে আছে । তোমার ঘড়ির পাচ বৎসর কাল অবধি সটান চলিয়া বাড়ীমুখে রওনা হইলে এবং দশ বৎসর পরে এই পৃথিবীতে তোমার বাসস্থানে ফিরিলে । যাত্রার সময় তোমার এই অভিযান লইয়া কাগজে খুব সরগরম পড়িয়া গিয়াছিল, তুমি ভাবিয়াছিলে ফিরিবামাত্রই টাউন হলে তোমাকে এক বিরাট সভায় এক প্রকাগু অভিবাদন দেওয়া হইবে, থবরের কাগজের পাতাগুলা তোমার আগমন-বাৰ্ত্তায় ভরিয়া যাইবে ; কিন্তু হরি, হরি, এ কি ! ফিরিয়া দেখিলে কেহ তোমাকে চেনে না ; তুমিও কাহাকেও চেন না, তোমার যাত্রার কথা কাহারও মনে পড়ে না ; লোকজনের রীতিনীতি, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সব বদলাইয়া গিয়াছে ; বহুকষ্টে বাড়ী ফিরিয়া আসিয়া দরজায় যে বৃদ্ধটিকে দেখিলে পরিচয়ে জানিলে *\তোমার পৌত্র। বাড়ীতে ক্যালেণ্ডার দেখিলে এই ye৮ সাল, তোমার দশ বৎসরে পৃথিবীতে ১•• বৎসর তিনিবাছে | <" এরোপ্লেনের গতি আলোর অপেক্ষা কম না হইয়া যদি আলোর সমান হয় তাহ হইলে ব্যাপারটা আরও অদ্ভূত দাড়ায়। ধর, দুই যমজ ভাই, প্রত্যেকেরই বয়স ২০ বৎসর ; একজন এরোপ্লেনে আলোর সমান গতিতে যাত্রা করিল। পৃথিবীর সময়ের পঞ্চাশ বৎসর পরে সে ফিরিয়া আসিয়া দেখিল তাহার ভাই এখন ৭০ বৎসরের বৃদ্ধ ; কিন্তু সে নিজে যে কুড়ি সেই কুড়িতেই রহিয়া গিয়াছে ; দেহে, প্রাণে, সে যে নবীন ছিল, সেই নবীনই আছে ; সময় যে চলিয়। গিয়াছে সে জানিতেও পারে নাই, তাহার নাড়ী টিক্‌টিক্‌ করে নাই, বুক দপদপ করে নাই, কাল তাহার নিকট এতটুকুও অগ্রসর হয় নাই। হে তরুণ, তুমি যদি চিরনবীন খাকিতে ইচ্ছা কর, যাত্রা কর একখানি এরোপ্লেন লইয়া, দেখিও এরোপ্লেনের গতি যেন সেকেণ্ডে ১,৮৬,০০০ মাইল হয়, তাহার পর পৃথিবীর সময়ের যতদিন ইচ্ছা ঘুরিয়া পৃথিবীতে ফিরিয়া এস, ৫০,৬০৭০ বৎসর— তুমি সেই তরুণ—দেহে, মনে, প্রাণে ; শুধু সাবধান, ফিরিয়া তোমার পূর্ব তরুণীর সহিত আলাপ করিতে যাইও না, তিনি এখন পককেশী, লোলচৰ্ম্ম, গলিতদশনা বুদ্ধ । আধপোয়া রৌদ্র ! কে একজন প্রণয়ী তাহার প্রণয়িনীর রূপ চাহিয়াছিল—এক সের চাদের আলোতে এক ছটাক ‘তিলোত্তমা’র রঙ মিশাইয়া স্বর্ণকটাহে জাল দিয়া আধপোয়া থাকিতে নামাইলে যাহা দাড়ায়। কিন্তু আইনষ্টাইনের তত্ত্ব অনুসারে অধিপোয়া রৌদ্র বলিলে আর বিশেষ দোষের কিছু হইবে না। আইনষ্টাইন দেখাইলেন শক্তি হইল পদার্থের রূপান্তরমাত্র, এবং কতখানি পদার্থ লোপ পাইলে কতখানি শক্তি পাওয়া যাইবে আইনষ্টাইন তাহাও কষিয়া দিলেন। অনেকে মনে করেন যে, সূৰ্য্য যে প্রতিনিয়ত প্রচণ্ড তাপ দিতেছে তাহার কারণ স্বৰ্য্য একটু একটু করিয়া ক্ষয় হইতেছে এবং তাহার পদার্থ শক্তিতে পরিণত হইতেছে । এই হিসাবে দেখা যায় যে, এক মিনিটে সমস্ত পৃথিবী যে রৌদ্র-কিণ্টি পায় তাহা অাধপোয় স্বৰ্য্য পদার্থ-ক্ষয়ের সমান। হুতরাং আধাপায় স্বৰ্যকিরণ কথাটা একেবারে আচল নয় | আইনষ্টাইন বলেন, এই যে আকাশ (space ) উহা সমাকার নয়—বক্রাকার—ফলে দাড়াইতেছে যে,