পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২৪ ব’লে কোনোদিন কনক ঐ রকম একটা গল্প লিখে ফেলতেও পারে তে । আচ্ছ, বাড়ী গিয়ে এবারকার এই ব্যাপারটাই একটু রং-চং দিয়ে গুছিয়ে লিখে কোনো মাসিক পত্রিকায় ছাপাবার জন্যে পাঠিয়ে দিলে তে হয় ! তাই দেবে । হয়ত এই কাগজেই দেবে। কিন্তু সম্পাদক আবার নূতন লেখকদের লেখা নেন না—শুনেছে কনক । তা সেও তো এক কনক দাস । এই তো এক কনক দাসের লেখা বেরিয়েছে দেখা যাচ্ছে, তাহ’লে তার লেখ পেলে বোধ হয় সম্পাদক বুঝতেই পারবে না যে, এ কনক দাস আবার ভিন্ন, এবং তার এই প্রথম হাতেখড়ি । যা হোক ভাবা যাবে এ বিষয়ে । চেষ্টা কবুলে কি না হয় ? মেয়েটি সহজ উত্তর এড়িয়ে গিয়ে পালটে জিজ্ঞাসা করলে, “তাই তো বলছি আপনার এ প্লট এই রকম ধরণের কোনো মেয়েকে দেখে তবেই বোধ হয় মাথায় এসেছে—কে সে মেয়েটি ? হয়ত চিনতেও পারি নাম শুনলে, তাই জিগেস করছি।” কনক একটু ভেবে নিয়ে বললে, “সে একবার আমি এই রকম ট্রেনে করে আসছিলাম এই অল্পদিন আগে । আপনারই মত একটি সহযাত্রিনী পাবার স্বযোগ আমার সে-বারও হয়েছিল,--আমার ভাগ্যটা তাহ’লে দেখতেই পাচ্ছেন, এবিষয়ে বেশ সুপ্রসন্ন। আপনার এই নিঃশঙ্ক ব্যবহার, সঙ্কোচহীন আলাপের ধরণ, সহজ কথা বলবার ভঙ্গী, সবই আমার সেবারকার সহযাত্রিনীটিকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। তাই আসছে মাসের কাগজেতে যদি ট্রেনের পথে দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশিত দেখেন তাহলে কিছু আশ্চৰ্য্য হবেন না। যাক, আপনি জানতে চান সেই মেয়েটির কথা ? ত সে বিষয়ে আমারই ভাল করে জানা নেই, তা আপনাকে আর কি বল্ব ? এই ধরুন না কেন, আপনাকে মনে করে যে গল্প লিখব মনে করছি, তা আপনার সম্বন্ধে কিছু কি জানলাম আমি ? কিছুই না। তবে আপনাকে দেখেই যে আইডিয়াটা আমি ফৰ্ম্ম করে নিয়েছি, গল্পটার ভিত্তি করতে হবে তারই উপরে তো ! অবিহি আর কিছু জানতে পারলে তো কত সময়ে কত স্ববিধেই হয়--ত সে রকম সুবিধে তো আর সকল সময়ে জোটে না। কাজেই যেটুকু পাওয়া যায় তার উপর প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩৭ SAAAAAA SAeASAJMMS JSJAM AMMASJSAJSMMAYAJJSAASAASAASAAAS [ ৩•শ ভাগ, ২য় খণ্ড কল্পনার সাহায্য নিয়েই আমাদের কাজ চালাতে হয় আর কি । তবে আপনি যদি দয়া করে—” বলতে বলতে গাড়ীর বেগ মন্দীভূত হয়ে আসছে দেখে কনক একটু চমকে বাইরের দিকে তাকাতেই দেখে যে একটা ষ্টেশন এসে গেছে। কনক অসমাপ্ত বাক্য শেষ করবার আগেই মেয়েটি উঠে গিয়ে জানলার ধারে মুখ বাড়িয়ে দাড়াল। একটি সাহেবী পোষাক-পরা কনকেরই বয়সী ছেলে এসে গাড়ীর সামনে দাড়াতেই মেয়েটি হেসে দরজা খুলে দিয়ে সরে দাডাল । ছেলেটি একলাফে ভিতরে উঠে দরজা বন্ধ করে দিলে । মেয়েটির সামনে দাড়িয়ে বললে, “আজ ট্রেনটা যেন মনে হচ্ছিল আর আসবে না। আমি যে কতক্ষণ ধরে দাড়িয়ে আছি ! থেকে থেকে কত ভাবনাও হচ্ছিল । খালি ভাবছিলাম একলা ধেতে দেওয়াটা ঠিক হয়নি। তৃতীয় ব্যক্তি যে বর্তমান সেদিকে লক্ষ্য মাত্র না ক’রে ছেলেটি মেয়েটির হাত ধরে নিয়ে গিয়ে সেই বেঞ্চিটর উপর দুজনে বসল। মেয়েটির অন্যহাতে কাগজখান। রয়েছে দেখে সেট টেনে বলল, “বাঃ, এই যে এ মাসের ‘প্রবাসী’ পেয়ে গেছ । তোমার সে গল্পটা বেরিয়েছে নাকি—সেই ‘ট্রেনের পথে ? আমি এতক্ষণ কেবলি ভাষছিলাম সেবারে তো প্রায় রোম্যান্স হবার যোগাভ— এবার আবার না জানি কি হয় ! তোমার আর কি বল - এসে দিব্যি তাই নিয়ে গল্প লিখে কাগজে পাঠিয়ে দেবে— নাম হবে কত! আর আমার এদিকে “হিংসাবিষে জর্জরিত হয় সখি এ হৃদয় । খোজ রাখছ না, ভাল ফল হবে না কিন্তু এর, তা বলে রাখছি। কই গল্পটা কই ? দেখাও না ।” মেয়েটি লজ্জিতভাবে অত্যন্ত মৃদুস্বরে বললে, ১৩৫ পাতায় ।” কনক গাড়ীর মধ্যে চারিদিকে তাকিয়ে দেখল। আড়াল করবার মত কোনো জায়গা নেই। এক মুহূৰ্ত্তে উঠে পড়ে ধণ করে গাড়ীর দরজাটি টান মেরে খুলে লাফিয়ে পড়ল প্ল্যাট্রফরমে । গাড়ী সবে চলতে আরম্ভ করেছে তখন ৷ জায়গা থাকে, সময় পাওয়া যায়, উঠে পড়বে অন্ত একটা কামরায়—ন হয় ষ্টেশনেই থাকৃবে দাড়িয়ে, পরের ট্রেনে যাবে।