পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] AASAASAASAASAASAASAASAASAASAAAS কবি ৩৩৯ কুদুরে চলিয়া গেল। একটু আগে রাত একটা বাজিবার শব্দ কানে আসিয়াছিল । জগতে যে কোন মানুষ জাগিয়া আছে তাহfও মনে হয় না । স্বপ্নের মত একটা আচ্ছন্নতা কেবল যে রাতের গায়েই লাগিয়াছে তাহ ময়, বিনয়ের মনের ভিতরও লাগিয়াছিল। বিনয়ের দিকে পাশ ফিরিয়া পরিমল মুম্বুকণ্ঠে কহিল, ‘আমি কিন্তু এখনও ঘুমোইনি বিমুদ । —‘ঘুমোও ভাই, আর জেগে না । —“কিন্তু তোমাকে একটা কথা না ব'লে ঘুম আমার কোনমতেই আসবে না ? 4% —“কিসের কথা ? ---“আমার একটি. কবিতার কথা । সেটিই আমার সবার চাইতে প্রিয় কবিতা, আমার দরিদ্র ভাণ্ডারের মাণিক্য । সেটি কবে লিখেছিলুম তুমি জানো বিহুদা ? ---*কবে ?' —"যেদিন তার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা । সেদিন এমনিতর কুল-ভাঙা জ্যোৎস্নায় পৃথিবী ভরে গিয়েছিল, হয়ত একাদশী তিথিই ; সেদিন যে জগৎটা কেমন ক’রে সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছিল বিলুদ, তা আমি আজও ভেবে পাইনে । এতদিনের চেনা-জগৎ হ’তে জাগর-স্বপ্নের কোন এক মায়ালোকে যে চ'লে গেলাম—তার পথে পথে ফুলের রেণু ছড়ানো, তার আকাশ রামকেলীর স্বরে ছেয়ে গেছে । আমার কষিতায় সে আনন্দেরই রূপ দিতে গিয়েছিলুম। —“No, I’ —‘কবিত। না লিখে তো সেদিন আমার উপায় ছিল না, মনের ভেতরটা অবধি যে তখন বীণার মত বাজছিল। জানো বিমুদা, সেই লেখাটার যাত্রারম্ভে কোন শুভচিহ্ন দেখেছিলুম ? —‘কোন শুভচিহ্ন ? —‘বললে তুমি বিশ্বেস করবে না, বিমুদ, সেদিন এই তরুণ করিটিকে কবিগুরু নিজে আশীৰ্ব্বাদ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। টেবিলের উপর মাথা রেখে সে-রাতে শকারণে ফুলে ফুলে যখন কাচি, তখন আমার মনে *'ল বিহদ, দেওয়ালে টাঙানো কবির পট হ’তে ওঁর


.....-....-.

হাতখান সজীব হয়ে এসে আমার মাথাটি স্পর্শ করে গেল। সত্যি সত্যি চম্কে উঠেছিলুম বিহুদ। সেই আশীৰ্ব্বাদ নিয়েই তো আমার কবিতাটি তৈরি, সেআশীৰ্ব্বাদই হয়েছিল আমার ছন্দ-পথের পাথেয়।’ —‘সেটিই বুঝি তোমার সবার চাইতে প্রিয় কবিতা ?’ —‘সবার চাইতে । তার ভেতরই তো বনজোংস্কার প্রথম আলো পড়েছে । সে কবিতাটির নাম কি জানে, বিমুদা ? —‘কি ? —“তার নাম দিয়েচি “প্রেম”, আমার মনের প্রেমের সেই তো স্বপ্নভঙ্গ, গুহার ভেতর বনজ্যোৎস্নার আলো পড়েছিল কি না ? বিনয় নাম শুনিয়া একবারে চমকিয়া উঠিল । সেই নামেই তো বোধ হয় একটা কবিতা আজ ফেরৎ আসিয়াছে বলিয়া পরিমলের কটি বন্ধু বলিয়া গেল। সে নিজেও তো এই প্রত্যাখ্যানে কৌতুক বোধ করিয়াছিল, কিন্তু নতুন আবেষ্টনে সে যেন এখন অন্তরূপ লইয়া আসিয়া দাড়াইল । তাহার বলিবার আর কিছুই রহিল না । - পরিমল কহিল, ‘জানো বিমুদা, কোন কবিতাই আমি কোন দিন ছাপতে পাঠাই না, যারা আমার মনের গোপন কথা, তার সঙ্গোপনেই থাকে। কিন্তু ঐ কবিতাটিকে আমি কাগজে পাঠিয়ে দিয়েছি।” একট। দীর্ঘশ্বাস গোপন করিয়া বিনয় কহিল, ওটাই বা পাঠাতে গেলে কেন পরিমল, ওরা যদি না নেয় ? আত্মবিশ্বাসের স্বরে পরিমল কহিল, 'না বিমুদ, সে ভয় নেই তোমার। ওরা নেবে এ আমার মন বলছে। আমার মনের ভিতরকার পদ্মের সবটা রূপ হয়ত ফোটেনি, তাতে কিন্তু মনের কথা বাইরে আনতে যদি কিছু পাপড়ি ঝরে থাকে, যদি কিছু গদ্ধের অপচয় হয়ে থাকে, তবু তাকে চেনা যাবে না এমন নয়, বিচুদ ! শুধু আমার ভয় কি জানো ? ‘কি ? - - —বসন্তু চলে যাবার পর দিয়েরো তুবেই আমার