পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] সমাধান HIද কোক ছিল না। এখন কিন্তু সেইদিকে তার উৎসাহ খুব বাড়িয়া গেল। লতিকা অবশু এ সকলের খবর বড় একটা পাইত না। আজকাল স্বামী-স্ত্রীতে কথাবার্তা খুবই কম হইত। টাকার নেশাট কালীমোহনকে কেন যে হঠাৎ এমন করিয়া পাইয়া বসিল, তাহ তাহার বন্ধুবান্ধব কেহ বুঝিয়া উঠিতে পারিল না। একজন জিজ্ঞাসা করিল, “কিহে ব্যাপার কি ? এত টাকার খোজে মেতে গেলে যে ? আর সব সখই যে এর তলায় তলিয়ে গেল ? মেয়ের বিয়ের ভাবনা উপস্থিত হয়েছে না কি এরই মধ্যে ?” কালীমোহন বলিল, “সময় থাকৃতে প্রস্তুত হওয়া ভাল ত ? মেয়ের মায়ের যে রকম পছন্দ, হয়ত রাজ ব। জমিদার ছাড়া আর কাউকে পছন্দই হবে না, তাদের থাই মেটাবার ব্যবস্থা এখন থেকে করতে হবে ত ?” বন্ধু বলিল, “নিজে তাহলে তোমায় পছন্দ করলেন কেন ? বড়মানুষ বলে ত পুরাকালে বিখ্যাত ছিলে না ?” কালীমোহন হাসিয়া বলিল, “তিনি ত হননি ।” লোকে নানারকম কানাঘুষ স্বরু করিল। হঠাৎ এত টাকার দরকার পড়িল কেন ? বদখেয়াল-টেয়াল জুটিতেছে না কি ? লতিকার কানেও দুচার-জন শুভাথিনী আভাসে ইঙ্গিতে নানা কথা পৌছাইয়া দিতে লাগিলেন। লতিক কোমর বাধিয়া ঝগড়া করিতে চলিল । হইলই বা মূখ, নিঃসম্বল, তাই বলিয়া স্বামী যা খুনী তাই করিবে নাকি ? কালীমোহন তাহার কথায় একটু হাসিয়া বলিল, “টাকাই ত চাও? তাহলে টাকা রোজগারে মন দিয়েছি বলে চট্‌ছ কেন ?” লতিকা ঝাঝিয়া বলিল, “হ্যা গো হুঁ্যা, বিদুষী না হলেও একেবারে গাধা নই। আমাকে খুশী করবার ইন্তেই তোমার এত মাথাব্যথা পড়েছে বটে!” কালীমোহন বলিল, “জার কেউ খুশী হবার লোক স্বয়ম্বর ত দেখছি না, এক যদি আপুট হয়। তা তার টাকার মহিমা বোঝবার মত বয়স এখনও হয়নি।” স্ত্রীর ঝগড়াকে আমলই সে দিল না । ইদানীং লটারীর টিকিটও সে বার-বার কিনিতে আরম্ভ করিয়াছিল। লটারীর টাকা পাইতে প্রায় কাহাকেও শোনা যায় না, কিন্তু কেউ-না-কেউ পায় ত । হয়ত সেও পাইতে পারে। তাহার মনিব্যাগের ভিতরট গোলাপী ও নীল কাগজের টুকরায় ভরিয়া উঠিতেছিল। কোনোটা বা গল জিমখানার, কোনোট মানালের, কোনোটা বিদেশের । কথায় বলে বিড়ালের ভাগ্যে কখনও শিকা ছেড়ে । কালীমোহন হঠাৎ টেলিগ্রামে খবর পাইল যে, সে আশী হাজার টাকা পাইয়াছে। এতবড় স্বখবরেও তাহাকে বেশী বিচলিত দেখাইল না ; যেন পাইবে বলিয়া এতদিন স্থিরই ছিল। টাকা দিয়া সে কি করিবে, তাহার প্ল্যানও সব প্রস্তুত আছে । টেলিগ্রামখান কুড়াইয়া লইয়া সে ভিতরের দিকে চলিল। মাঝপথে অপুর সঙ্গে দেখা হইল। সে পা ভাঙা একটা পুতুলকে পরম বাৎসল্য সহকারে কোলে করিয়া বসিয়া ছিল। কালীমোহন জিজ্ঞাসা করিল, “অপু মা, তোমায় একটা খুব ভাল প্রেজেন্ট দেব, তোমার কি চাই বল ত ?” অপু বিন্দুমাত্র ইতস্তত: না করিয়া বলিল, “বড় छलि ।” - কন্যার উচ্চাকাঙ্ক্ষার অভাব দেখিয়া কালীমোহন হাসিয়া ফেলিল। বলিল, “আচ্ছ, তাই দেওয়া যাবে।” শয়নকক্ষে ঢুকিয়া দেখিল লতিকা মেয়ের জন্য ফ্রকে ফুল তুলিতে বসিয়াছে। স্বামীর হাতে টেলিগ্রামের হলদে কাগজ দেখিয়া ব্যস্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কার কি হ’ল আবার ? ও কাগজ দেখলেই যেন বুকের রক্ত জল হয়ে যায়।” কালীমোহন বলিল, “খালি কি খারাপ খবরই আসে ? সুখবরও জাগে চারটা।” লতিকা বিম্মিতভাবে জিজ্ঞাসা কৰিল, “ৰুি স্থখবর এল আবার "ি *