পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ ৩য় সংখ্যা] বামনদাস বসু 8e }জানা ছিল না। তিনি ১৯০৮ সালের ডিসেম্বর মাসের {"মডার্ণ রিভিউ পত্রিকায় ঐ বিষয়ে একটি প্রবন্ধ লেখেন। ”বিলাতের উগতীর প্রথম প্রথম ভারতবর্ষের লোকদের মত কাপড় ও পাড় প্রভৃতি করিতে পারিত না। তাহীদের সুবিধার জন্য ভারতের ৭০০ সাত শত রকম কাপড়, পাড়, কম্বল প্রভৃতির টুকরা কাটিয়া ১৮ ভলুম বহি প্রস্তুত হয় । এই বহি মোট কুড়ি সেট প্রস্তুত হয়। তাহার একটি সেটও প্রথম প্রথম ভারতবর্ষে রাখিবার সঙ্কল্প ছিল না । কিন্তু শেষে অন্য মতলবে ১৩ সেট ইংলণ্ডের বস্ত্রশিল্পের প্রধান প্রধান কেন্দ্রে এবং ৭ সেট ভারতবর্ষে রাখ| কিন্তু ভারতবর্মের সেটগুলি এমন অনেক জায়গায় রাখা হয় যাহা বস্ত্রশিল্পের জন্ত বিখ্যাত নহে । লক্ষ্মেীয়ে এক সেট রাখা হয় তাহা মেজর বস্তু জানিতেন। তাহাই তিনি অনাইয় এলাহাবাদ প্রদর্শনীতে দেখান । এই প্রদর্শনী খুব বৃহৎ হইয়াছিল । ইহা দেখিবার জন্ত ভারতবশ্বের বহু রাজা মহারাজা ও সাধারণ লোক নানা স্থান হইতে এলাহাবাদে সমবেত হন । আমিও সপরিবারে গিয়াছিলাম এবং বস্থভ্রাতৃদ্বয়ের গুহে অতিথি ছিলাম । কয়েক দিন ধরিয়া তাহাদের বাড়ীতে যেরূপ বহু অতিথির সমাগম দেখিয়াছিলাম, এমন আর কখনও কোথাও দেখি নাই। কয়েক দিন তাহাদের গৃহে প্রায় এক শত জন অতিথির পরিচয্যা হইয়াছিল । র্তাহীদের মধ্যে বহু মহিলা বালকবালিকাও ছিলেন । আমার যতটা মনে পড়ে, বস্থভ্রাতৃদ্বয় সেই সময়ে অতিথিদের জন্য নিজেদের বাড়ীতে যথেষ্ট স্থান না হওয়ায় অন্য বাড়ীও ভাড়া লইয়াছিলেন । র্তাহীদের মাতার, তাহদের এবং বাড়ীর মহিলা ও ছেলেমেয়েদের আতিথেয়তা সুবিদিত । অন্যান্ত বৎসরেও, বিশেষতঃ পূজার ছুটি, মাঘমেলা ও কুম্ভমেলার সময়, তাহদের বাড়ীতে পরিচিত অপরিচিত বহু অতিথির সমাগম দেখিয়াছি। বস্থভ্রাতৃদ্বয়ের সৌজন্য অমুকরণীয়। র্তাহারা ছোট ছেলেমেয়েদের পর্য্যস্ত *আপনি বলিয়া সম্বোধন করিতেন । হয় । এবং বামনদাস বস্থ মহাশয় যখন চাকরি উপলক্ষ্যে উত্তরপশ্চিম সীমাস্তে ছিলেন, তখন অনেক দুরধিগম্য স্থানে গিয়া খনন করাইয়া মাটির নীচে হইতে অনেক বৌদ্ধ মূৰ্ত্তি আবিষ্কার করেন। তাহা গান্ধার শিল্পের নিদর্শন। এরূপ মূৰ্ত্তিসংগ্ৰহ মিউজিয়মে আছে, কিন্তু ভারতবর্ষের ব্যক্তি-বিশেষের এরূপ সংগ্রহ কেবল মেজর বস্থর গুহে আছে । ইহার সচিত্র বৃত্তান্ত পরলোকগত রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯২৪ সালের এপ্রিল মাসের ‘মডার্ণ রিভিউ” পত্রিকায় লিখিয়াছিলেন । পাটনা মিউজিয়ামের জন্ত পরলোকগত অধ্যাপক যোগীন্দ্রনাথ সমাদার ইহা তিন হাজার টাকা মূল্যে কিনিতে চান, কিন্তু বস্থ মহাশয় দেন নাই । তিনি একবার কৌশাম্বী দেখিতে গিয়া এক মুদির দোকানের বারাণ্ডায় উঠিবার ধাপে প্রাচীন লিপিযুক্ত একখানি প্রস্তর-ফলক দেখিতে পাইয়া তাহা তৎক্ষণাৎ কয়েক আনা মূল্যে ক্রয় করেন । এই আবিষ্কারের ংবাদ পাইয়া রাখালবাবু এলাহাবাদ গিয়া তাহার ছাপ তুলেন এবং পাঠ করেন। ইহার লিপি অতি প্রাচীন। রাখালবাবু একশত টাকা দিয়া ইহা কিনিতে চাহিয়াছিলেন । কিন্তু বামনদাস বাবু দেন নাই। ইহা তাহাদের বাড়ীতে আছে। প্রাচীন মুদ্র সংগ্রহে তাহার খুব উৎসাহ ছিল ; অনেক দুষ্প্রাপ্য মুদ্রা সংগ্ৰহ করিয়াও ছিলেন । র্তাহার দাদা যখন ১৮৯৯ খৃষ্টাব্দে চাকরি উপলক্ষ্যে কাশীতে ছিলেন, তখন এই সকল মুদ্রণ সেখানে তাহাদের বাড়ীতে ছিল । দুঃখের বিষয় তাহা চুরি হইয়া যায়। মেজর বসু সাধারণতঃ সাৰ্ব্বজনিক কণৰ্য্যে যোগ দিতেন না, নিজের লেখা ও পড়া লইয়া থাকিতেন । ভারতীয় ঔষধ সংগ্রহ ও তদ্বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন করায় তিনি একবার নিখিল ভারতীয় আয়ুৰ্ব্বেদ কনফারেন্সের লাহোর অধিবেশনের সভাপতি মনোনীত হন। একবার পরলোকগত বিচারপতি সারদাচরণ মিত্র মহাশয়ের FfxVI s í HC ACAF ( Convention of Religions ) সহযোগী সম্পাদক হন, এবং একবার শ্রদ্ধামন্দ স্বামী প্রতিষ্ঠিত গুরুকুলের বার্ষিক উৎসবে সভাপতির কাজ করেন। তিনি বঙ্গীয় ধনবিজ্ঞান পরিষদের সভাপতি ছিলেন এবং এই পরিষদকে তাহার এতদ্বিষয়ক সমুদয় লেখী-সংগ্ৰহ দান করিয়াছেন ।