পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○b〜 স্থানকালাতীত, লাভ-ক্ষতির হিসাবের উপরকার, এই জাতীয়তার অভিযানেই তাই স্মৃৰ্ত্তি লাভ করিয়াছে। এ শুধু রাষ্ট্ৰীয় আন্দোলন নয়, সমগ্র জাতীয় জীবনের মঙ্গলবোধন–কিন্তু বাংলা ভাষায় তাহার সাড়া পাওয়৷ যায় কি ? একমাত্র স্বদেশীযুগের সাহিত্যে ও প্রাকৃস্বদেশী সাহিত্যে এই বৃহৎ সত্য স্বীকৃত হইয়াছিল । তাহার পর হইতে সাহিত্য সাহিত্যিক’ হইয়া উঠিয়াছে, ‘বিশ্ব ও ‘নিত্যকালের’ ছড়াইতেছে। এযুগের জাতীয় জীবনের সঙ্গে এ ভাষা ও সাহিত্যের সম্বন্ধ কোথায় ? সত্য বটে, সাময়িক সাহিত্যের—অর্থাৎ দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রের পাতায় বাংলার ও ভারতের এই জাতীয় জাগরণের প্রতিধ্বনি বাজিতেছে,—এমন কি যতটা উগ্র তাহার অপেক্ষ বেশী চড়া সুরেই বাজিতেছে । কিন্তু যে-ভাষায় ইহা লিখিত তাহা কি বাংলা ? সেখানেও ফাকি সুস্পষ্ট । ইংরেজী না জানিলে কি উহা বোধগম্য হয় ? আর আজ কি আমরা আমাদের এই জীবনের ও প্রয়াসের কথা শুধুমাত্র বাংলা দৈনিক ও বাংলা সাময়িক পত্রের মারফতে বলিয়া আমাদের উদ্দেশ্রসিদ্ধি করিতে পারি ? বাংলা ভlয কি ংলার দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাটুকুও বলিয়া উঠিতে পারিতেছে ? এই জন্যই বোধ হয়, সস্তা বাংলা দৈনিকপত্র ছাডিয়া বাঙালী এত ইংরেজী ভাষার জাতীয়ভাবাপন্ন সংবাদপত্র কিনিতেছে । আসলে সংবাদংগ্রহের দিক হইতে ৪ বাংলা ভাষা যথেষ্ট নয়, জাতীয় ভাবপ্রচারের উল্লেখে ইহাকে একমাত্র পু জি করা চলে না | অবখ একট। কারণ আছে । জাতীয় আন্দোলন এক গু করিষ্ঠ বাঙালীরই জিনিস নয়, উহ। সমগ্র ভারতবসের সাপনা। বাঙালী স্থন জাতীয়তার ভেরী নিনাদিত করিতে যায়, তখন সে সমগ্র ভারতের দিকে চাহিয়া সমগ্ৰ ভারতকে আহবান করে সেই আহবান-বাণী নাই বালায় হয় না,– ভবিষ্যতে হিন্দী হইবে কিনা জানি ন}, কিন্তু বৰ্বমানে এষ্ট ‘স্বদেশী’র বাহন বিদেশী ভাষা । মাতৃয়ের কৰ্ম্মজীবনের মল কথা জীবিকা । ধোয়া 3 ! বাঙালীর প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, য় খণ্ড জীৱিকার ভাষা কি বাংলা ? প্রাচীন পদ্ধতির ব্যবসাপত্রে বাংলা ভাষার অধিকার এখনও অক্ষুঃ আছে ; কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্যের নূতন নূতন পখ প্রতিদিন খুলিতেছে, সেখানে বাংলা ঢুকিতে পায় না। টাইপ - রাইটার, শর্টহ্যাণ্ড-এর সহায়তা না পাইলে ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার পরাজয় অবশুম্ভাবী । অথচ রাজ্যবিস্তার ও ভাষা-বিস্তার অনেক সময়েই বণিকূ-শ্রেণীর দ্বারা সাধিত হয়। বাঙালী বণিকই বা কয়জন আছেন ? চিরদিনের ঘরোয়া কথা ছাড়া অন্য কথা বাংল। ভাষা কতটা কহিয়া উঠিতে পারে, তাহার পরীক্ষণ এখনও হয় নাই । তবে বাংলা ভাষা যে চিন্ত জগতের বা জ্ঞান-জগতের প্রবেশ-দ্বার খুজিয়া পাইতেছে না, তাই স্পষ্ট । কথাটা বিশদ করিবার প্রয়োজন নাই । বাংলাভাষার ও বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনা যাহাদের সাধনা হইয়াছিল, অন্তত তাহদের বাংলা প্রীতিতে সন্দেহ করা চলে না । শ্রীযুক্ত দীনেশচন্দ্র সেন মহাশয় তাহার বঙ্গভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসের ইংরেজী অনুবাদ প্রকাশ করিতে বাধ্য হইয়াছেন ; কিন্তু তাহার ইংরেজীতে রচিত বঙ্গ ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক প্রায় এক ডজন গ্রস্থের বাংলা অল্পবাদ প্রকাশ করিবার প্রয়োজনও হয় নাই । অধ্যাপক সুনীতিকুমার bū’īājià Moto, “Origin and Development of Bengali Language” atzīst zrzii sila nges পাণ্ডিত্যপূর্ণ ইতিহাস প্রণয়ন করিয়াছেন । ‘বাংলাভাষা ও বাঙালী জাতির গাড়ার কথা’ নামক একটি বড় বাংল। প্রবন্ধে ( সবুজপত্র, ভাদ্র, আশ্বিন, তিনি বাংলাভাষায় উহার সারকথা পৰ্ব্বাহ্লে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন, ‘বাংলা ভাষার ও বাংলা সাহিত্যের কথা’ নামক একটি ক্ষুদ্র প্রবন্ধে সম্প্রতি ছাত্র-সাধারণের জন্য উহার সারমৰ্ম্ম পুন:-বিবৃত করিয়াছেন । কিন্তু বাংলা ভাষায় বাংলা ভাষার ইতিহাস শুনিবার মত আগ্রহ কোথাও লক্ষিত হয় নাই। হয়ত এইরূপ গ্রন্থ বিশেষজ্ঞদের উদ্দেশ্রে লিখিত হয় ; কিন্তু বাঙালী কি নিজ ভাষা সম্বন্ধেও সাধারণ জ্ঞানে তৃপ্ত রহিবে, বিশেষ জ্ঞান লাভ করিতে চাহিবে না ? నిరిని )