পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

880 শ্রেণীর প্রথম স্থান অধিকার করিয়াছিলেন বলিয়৷ বিশ্ববিদ্যালয় তাহাকে মন্মথনাথ ভট্টাচাৰ্য্য স্বর্ণপদক ও সোনামণি রৌপ্যপদক দান করিয়াছেন। ংখ্যালঘিষ্ঠদের সম্বন্ধে ব্যবস্থা ইউরোপের কোন কোন দেশে—যেমন গত মহাযুদ্ধের পর নবগঠিত স্বাধীন কতকগুলি রাষ্ট্রে-সংখ্যাভূয়িষ্ঠ ও সংখ্যায় নুন ভিন্ন ভিন্ন জাতির লোক বাস করে । তাহাদের ভাষা স্বতন্ত্র । এই সংখ্যানুনদের সংখ্যা নিতান্ত কম হইলে তাহাদের জন্য কোন স্বতন্ত্র ব্যবস্থার বনেণবস্ত লীগ অব নেশুন্স করেন নাই। তাহদের সংখ্যা কিছু বেশী হইলে-যেমন মোট অধিবাসী সংখ্যার শতকরা ২০২৫–লীগ অব নেশুন্স, কর্তৃক প্রণীত কতকগুলি বিধি অনুসারে তাহাদের রাষ্ট্ৰীয় অধিকার আদি নিয়মিত হয় । সমগ্র ভারতবর্ষের এবং ভারতের ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের সংখ্যামৃন লোকসমষ্টি-সমূহের অধিকার লীগ অব নেশুন্সের এই সকল বিধি অনুসারে ব্যবস্থিত হইলে ভাল হয় । ভারতবর্ষে ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্মাবলম্বী ও ভিন্নভাষী অনেক লোকসমষ্টি থাকায় ইংরেজ গবন্মেটি ভেদনীতি প্রয়োগ দ্বারা নিজের ক্ষমতা স্বপ্রতিষ্ঠিত রাখিতে সমর্থ হন, ইংরেজ সরকারের এই বদনাম আছে । লীগ অব নেশুন্সের দ্বারা ইউরোপের পূৰ্ব্বোক্ত দেশগুলিতে সংখ্যানু্যনদিগের সম্বন্ধে ব্যবস্থ৷ যে-যে বিধি অনুসারে হইয়াছে, ভারতীয় সংখ্যাভূয়িষ্ঠ ও সংখllনূ্যনদের মতভেদের মীমাংস৷ তদনুসারে হইলে গবন্মেণ্টের ঐরূপ নিন্দার কোন কারণ ঘটে না । সমগ্র ব্রিটিশশাসিত ভারতবর্ষের ভিন্ন ভিন্ন জাতির সম্বন্ধে ব্যবস্থা এক সঙ্গে একই নিয়ম অনুসারে হওয়া উচিত । বাংলা দেশের দুজন হিন্দু তথাকথিত প্রতিনিধি আগা খার মধ্যস্থতায় বাংলার সমস্যার আলাদা সমাধানের যে প্রস্তাব করিয়াছেন, বাংলা দেশের হিন্দুর তাহা অগ্রহ করিবে । প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড মিছিল সভাসমিতি ও পুলিস কমিশনার কলিকাতার বড়বাজারের রাস্তায় পাচজন মহিলা “ঝাণ্ড উচা রহে হামারা” ( "আমাদের পতাকা উদ্ধে উডীন রন্থক” ) এই হিন্দী গান করিয়া বেআইনী মিছিল করিয়াছেন, এই অভিযোগে তাহদের সশ্রম কারাদণ্ড হয় । হাইকোটে আপলে প্রধান বিচারপতি স্যার জর্জ র্যাঙ্কিন এবং বিচারপতি এস সি মল্লিক তাহাদিগকে বেকসুর থালাস দিয়াছেন, অধিকন্তু রায়ে এই মত প্রকাশ করিয়াছেন, যে, অনির্দিষ্ট কালের জন্য কলিকাতায় সব মিছিল সভাসমিতি বন্ধ করিবার হুকুম দিবার ক্ষমতা কলিকাতার পুলিস কমিশনারের নাই ; সুতরাং তাহার যেহুকুম অমান্য করার জন্য মহিলাদের দণ্ড হইয়াছিল তাহ আইনসঙ্গত নহে, অতএব তাহ অমান্ত করিলে কাহারও কোন অপরাধ হয় না ; এবং যদি তাহ আইনসঙ্গত হইত ত{হা হইলেও কেবল তাহ অমান্য করিলেই অপরাধ হয় না— দেখাইতে হইবে, যে, আদেশ অমান্য করাতে সৰ্ব্বসাধারণের অসুবিধা হইয়াছে, শান্তিরক্ষার বাধা ঘটিয়াছে বা ঘটিবার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু বৰ্ত্তমান মোকদ্দমার সাক্ষ্য হইতে তদ্রুপ কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না ; অতএব অভিযুক্ত মহিলার দণ্ডনীয় হইতে পারেন না । হাইকোর্টের রায় হইতে বুঝা যাইতেছে, পুলিস কমিশনার আইন জানেন না, কলিকাতার যে-যে ম্যাজিষ্ট্রেট এইরূপ আরও অনেক মামলায় বহু মহিলা ও পুরুষকে শাস্তি দিয়াছেন, তাহারাও আইন জানেন না, এবং যে বাংলা গবন্মেণ্টের অমুমোদন অনুসারে এই সব ব্যাপার ঘটিতেছে সেই গবন্মেণ্টও আইন জানেন না ; অথচ ইহারাই হইলেন আইনের মৰ্য্যাদার রক্ষক এবং শান্তি ও শৃঙ্খলার মা বাপ ! যাহা হউক, পুলিস কমিশনারের বে-আইনী হুকুম অমান্ত করার অভিযোগে আরও যে-সব ভদ্রলোক ও মহিলা জেলে পচিতেছেন তাহাদিগকে অবিলম্বে স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া খালাস দিলে বুঝা যাইবে, যে, এবিষয়ে বাংলা গবন্মেণ্টের ন্যায়পরায়ণতার উদ্রেক হইয়াছে।