পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8むbー YASAJJSAAA HSMJASASJSJeeSHGJASMMAMSJSAASAASAASAASAASAAAS গৃহিণী মেয়ে দেখার দিন স্থির করিয়া পত্র লিখিতে বসিলেন । মঙ্গলাহাটীর ভট্চাজ বাড়ী হইতে পাত্রের মাতুল আসিয়া কন্যার বিশেষ প্রশংসা করিয়া জলযোগান্তে ফিরিয়া গেলেন ; বাড়ী গিয়া মেয়েদের সঙ্গে পরামর্শ করিয়া পত্র দিবেন। শিবতলার রায়-বাড়ীর লোক মেয়ে দেখিয়া গেল। পাকা কথা হইল না। বঁাশকুডুলের চৌধুরী বাড়ী হইতে পাত্র স্বয়ং বন্ধুবান্ধবসহ দেখিতে আসিল ; বাজন৷ শুনিয়া মৃদুস্বরে একটু বাহবাও দিয়া গেল। রামহরিবাৰু গোপনে পত্রিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “বাবাজী তা হ’লে—” ছেলেটি বিনয়ী । মাথা নীচু করির কহিল, “আঞ্জে ম! সব আপনাকে লিখবেন । আমি ফিরে গিয়েই তাকে বলব ।” এইরূপে রামহরিবাবু কিছুদিনের মত গৃহিণীর উৎপাত হইতে রক্ষা পাইলেন । এদিকে গৃহিণী দিনকয়েক তাহার ভবিষ্য-জামাতৃবর্গের অভিভাবকগণের পত্রের প্রতীক্ষা করিয়া তাহার পর জোড়া পোষ্টকার্ড লেখা আরম্ভ করিলেন । ক্রমে ক্রমে জবাব আসিতে লাগিল। মঙ্গলাহাটীর পাত্রের পিতার অসুখ, শিবতলার পাত্রের পরীক্ষার বৎসর, ইত্যাদি । বাশকুড়ুল হইতে যেপত্ৰখানি আসিল সেটা একটু স্পষ্ট। পাত্রের মাতা লিখিয়াছেন, কন্যাটি ট্যারা ;--ছেলের পছন্দ হয় নাই । পত্র পাইয়া গৃহিণী ক্ষেপিয়া উঠিলেন ; চিঠিখান হাতে করিয়া যেখানে রামহরিবাবু বসিয়া বীণার সেতার বাজনা শুনিতেছিলেন সেখানে গিয়াই উপস্থিত হইয়া কহিলেন, “কেমন হ’ল তো ! গুণে সব ঢাকবে না । দেখ !” বলিয়। রামহরিবাবুর নাকের ডগায় চিঠিখানা ছুড়িয়া ফেলিয়৷ কন্যার দিকে ফিরিয়া কহিলেন, “যে রূপের ছিরি, তার জাবার গান বাজনা ! যা ঘুটে দিগে যা ” বীণা সেতার রাখিয়া নীরবে উঠিয়া গেল। ইহার পর পিতা ও মাতার কি কথাবার্তা হইল তাহ বীণ। শুনিতে পাইল না, কিন্তু সমস্ত দিন ধরিয়া মাতা অবিরত থলিতে লাগিলেন, "আহ রূপ! চোখ নয় স্ত নাটার বিচি !” প্রবাসী—মাঘ, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড মাতা দ্বিপ্রহরে ঘুমাইতেছিলেন, সেই অবসরে বীণা আরশী লইয়া বসিল। এতদিন চোখে পড়ে নাই,-আজ দেখিল বাস্তবিকই ডান চোখট অত্যন্ত ট্যারা । নিজের মুখ আরশীতে দেখিতে নিজেরই লজ্জা করিতে লাগিল । নানা রকম করিয়া আরশী ধরিয়া দেখিল ; কোনো দিক হইতেই মুখখানিকে স্বত্র দেখা গেল না। তখন আরশী ফেলিয়া দুই হাতে মুখ ঢাকিয় বেচারী বসিয়া রহিল। সেইদিন হইতেই বীণার বয়স যেন সহস৷ বাড়িয়া গেল। পিতা স্কুল হইতে ফিরিয়া আসিয়া যখন ডাকিলেন, তখন সে তাড়াতাড়ি জলের ঘট লইয়া আসিল বটে, কিন্তু তাহার মুখের দিকে চাহিতে পারিল না। রামহরিবাবু কন্যার ভাবাস্তর লক্ষ্য করিলেন । কথা কহিলেন না । এদিকে গৃহিণীর পিতৃপুরুষকে নরকের দিকে আরও কয়েক পা অগ্রসর করাইয়া দিয়া আরও দুটি বৎসর চলিয়া গেল । ইতিমধ্যে বীণার প্রকৃতিতে একটি বিশেব পরিবর্তন দেথা গেল। সে মুখ নীচু করিয়া কথা বলা আরম্ভ করিল। বাধ্য হইয়। কখনও মুখ তুলিতে গেলে চোখের পাতা আপন হইতেই মুদিয়া আসে–পাছে কেহ ট্যারা চোখটি দেখিয়া ফেলে । রামহরিবাবুর ওবসর ছিল না ; ছুটি হইলেই গৃহিণীর তাগিদে সম্ভব অসম্ভব পাত্রের সন্ধানে গ্রাম-গ্রামাস্তরে ছুটিয়া বেড়াইতেন । ফিরিয়া আসিয়া আবার সেই স্কুলের কাজ। সাহস করিয়া আর বীণার বাজনা শুনিতেও চাহিতেন না। সেতারের ঝঙ্কারের সঙ্গে সঙ্গে গৃহিণীও ঝঙ্কার দিয়া উঠিতেন। বীণাও সেতার ফেলিয়া উঠিয়া যাইত। মাঝে মাঝে সম্ভাবিত কোনও পাত্র আসিলে সেদিন আর বীণার লাঞ্ছনার অবধি থাকিত না। তাহার চোখের সহিত নাটার বিচি হইতে আরম্ভ কয়িয়া পৃথিবীর যাবতীয় গোলাকার বস্তুর তুলনা চলিতে থাকিত এবং কোনও মতে বিদায় হইয়া গেলেই যে পিতামাতার পিতৃপুরুষ নরক হইতে পরিত্রাণ পাইতে পারেন তাস্থাও বীণা মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে উপলব্ধি করিত। সেদিন গৃহিণীর মেজাজ অত্যন্ত রুক্ষ ছিল। প্রভাতে নূতন একটি পাত্রের অভিভাবক মেয়ে দেখিয়া যাইগার সময় স্পষ্ট ভাষায় মেয়ে না-পছন্দ করিয়া গিয়াছেন ।