পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] ট্যার 8ჯyS) سیمای مهم “ভাড়াতাড়ি কিসের বলিস নে বাছা, আমার বিয়ে হয়েছিল আট বছরে—” এ কথা স্বকুমার পূৰ্ব্বেও শুনিয়াছে, জানিত গৃহিণীর নিজের বিবাহের কাহিনী অন্ততঃ ঘণ্টাখানেকের পূৰ্ব্বে শেষ হইবে না। তাড়াতাড়ি বাধা দিয়া হুকুমার কহিল, “পাত্র এক রকম দেখেই রেখেছি মাসী-ম, ব্যস্ত হবেন না। সামনের পরীক্ষাট হয়ে গেলেই ঠিক করব ।” বলিয়া সে আঙ্গিনায় আসিয়া উপস্থিত হইল, গৃহিণী ঘরের মধ্য হইতেই কহিলেন, “পাসফাশে কাজ নেই বাছ, যেমনতেমন একটা দেখে-শুন—” হুকুমার যাইতে যাইতে জবাব দিল, "বীণাকে যদি ফেলে দিতেই হয় মাসীম তবে না হয় আমাকেই-- দেবেন’ বলিয়াই সে বাহির হইয় গেল। কথা কয়টি স্বকুমার খেয়ালের মুখেই কহিয়া গেল এবং কি কহিল পথে যাইতে তাহা চিস্তাও করিল না। অথচ এই কথায় রামহরিবাবুর ক্ষুদ্র গৃহস্থালী তুমুল আন্দোলিত হইয়া উঠিল । গৃহিণী বাঞ্জনের কড়াইট ধুপ করিয়া নামাইয়। রাখিয়া খস্তি হাতে করিয়াই রামহরিবাবুর নিকট উপস্থিত হইয়া কহিলেন, “হঁ্যাগী ! সুকুমার যেন কি ব’লে গেল।” রামহরিবাবু সহসা উত্তর দিতে পারিলেন না, গলাটা অত্যস্ত ধরিয়া আসিয়াছিল, রি-দুই কাশিয়া কহিলেন, “শুনতে তো পেলে ! আমি আর—” গৃহিণী খস্তিখানা রামহরিবাবুর গালে ঠেকাইয় আদর করিয়া কহিলেন, “বলই না শুনি, আমার যে গ কেমন কেমন করছে।” রামহরিবাবু বলিলেন, “বললে যে মেয়ে ফেলে দিতে হ’লে তাকেই দিতে। এখন যাও জল আন, মুখটা তো এটো করে দিয়েছ।” গৃহিণী হাসিতে হাসিতে চলিয়৷ গেলেন । বীণা মুকুমারের কথা শুনিয়া আশ্চৰ্য্য হয় নাই। বিধাতার চোখে সে যে স্বকুমারেরই স্ত্রী এ কথা হকুমারের মুখেই সে সহস্রবার শুনিয়াছে, কিন্তু সকলের সম্মুখে মুকুমার এই কথা কহিয়া গেল দেখিয় তাহার আর লজ্জার পরিসীমা রছিল না। সে-রাত্রে আর সে কাহারও সম্মুখে বাহির হইল না, থাইতে ডাকিলেও উঠিল না। রামহরিবাবু কহিলেন, “থাক, ডেকো নালজ্জা পেয়েছে !” সেদিন রাত্রে মৃদুগুঞ্জনে স্বামী-স্ত্রীর পরামর্শ চলিল এবং দিন-দুই পর একদিন পাজি দেখিয়া রামহরিবাবু স্বকুমারের বাড়ীতে গিয়া উপস্থিত হইলেন। নানা কথার পর স্বকুমারের বিবাহের কথা পাড়িতেই তাহার পিতা ব্ৰজদুলালবাবু কহিলেন, “ছেলের বিয়েতে আমার কোনো হাত নেই। ছেলের মত হ’লেই হ’ল। জানেন ত আজিকালকণর ছেলে ।” কথা শুনিয়া রামহরিবাবু আশ্বস্ত হইলেন এবং অনেক বিনীত অনুরোধ সহকারে স্বকুমারের পিতাকে কন্যা দেখিবার নিমন্ত্ৰণ করিয়া আসিলেন। ব্ৰজদুলালবাৰু মুখে কিছু বলিলেন না, রামহরিবাবু চলিয়া গেলে অন্তঃপুরে যাইয়া হুকুমারের মাতাকে সমস্ত কহিতেই তিনি দুই চক্ষু কপালে তুলিয়া কহিলেন, "ওমা ! সে কি কথা! রামহরি মাষ্টারের মেয়ের সঙ্গে !” তাহার আর কথা যোগাইল না। ব্ৰজদুলালবাবুর সাংসারিক অভিজ্ঞতা অত্যন্ত প্রখর ছিল। রামহরিবাবুর পরিবারের সহিত স্বকুমারের হৃদ্যতা ছিল একথা তিনি জানিতেন । সুকুমারের মাতাকেও তাহা জানাইয়া দিলেন । সুকুমারের মাতা সকল কথাগুলি শুনিয়া পাত্রী দেখিতে আপত্তি করিতে পারিলেন না। কিন্তু সমস্ত দিন মুখ ভার করিয়া রহিলেন। বীণা নিবিষ্ট হইয়া স্বকুমারকে একখানি পত্র লিখিতেছিল ; মাতা আসিয়া কহিলেন, “লেখাপড় থাক না আজ,সাবান মেখে স্বান করে নে। তোকে দেখতে আসবে।” কিছুদিন হইতে বীণা নিৰ্ভয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলিত ; চিঠির কাগজখানি উন্টাইম্বা রাখিয়া কহিল, “আমাকে কি কেউ কোনো দিন দেখেনি মা, যে নতুন করে দেখতে আসূবে ?” কথার ঝোকটা কাহার উপর গিয়া পড়িল গৃহিণী তাহা বুঝিলেন ; বীণাকে হাত ধরিয়া টানিয়া তুলিয়া কহিলেন, “নে মা, আজ এই একটা দিন ছাড়া আর তোকে বলব না, ওঠ ! বাপেরও তো পছন্দ চাই—” বীণা গরু গৰ্ব করিতে করিতে উঠিয় গেল । বাহিরের ঘরে ব্ৰজহলাগৰাৰুহকুমারের মাতুলের সঙ্গে