পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ৷ অর্থদানে বশীভূত ক’রে মুরশিদাবাদের মসনদে বসে শীঘ্রই বুঝিতে পারলেন তার ভ্রম। রাজকোষ শূন্য, বেতন না পেয়ে সৈন্যেরা অশান্ত, কৰ্ম্মচারীরা অত্যাচারী, অর্থলোলুপ, স্বস্বপ্রধান, জমিদার বিদ্রোহী, চারিদিকে কূটনীতি ও চক্রান্ত,—সৰ্ব্বশেষে ইংরেজের কৰ্ম্মচারীদের ঔদ্ধত্য নবাবর মূল্য শীঘ্রই বুঝিয়ে দিল। অর্থ চাই, নবাব-প্রাসাদের আনন্দস্রোত ও বিলাসিত বন্ধ হয়ে গেল, দাসদাসীদের ছুটি হ’ল—সোনা রূপোর জিনিযপত্র যিত্রী করা হ’ল-সৈন্যেরা বেতন পেল-ইংরেজের দেনা কতক মিটল । মীরকাসিম তখন ইংরেজদের সহযোগিতায় চললেন বৰ্দ্ধমান, বীরভূমের বিদ্রোহ দমনে । সৈন্যদের পাশে দাড়িয়ে মীরকাসিম বুঝতে পারলেন ধে মোগল-সেনার শিক্ষা নাই, সাহস থাকলেও কেী-লে ইংরেজদের তুলনায় তারা কত তুচ্ছ । কিসের ওপর বিকাসিম নবাবীর গৌরব করবে ? অর্থ ও সৈন্য যে সুটে রাজার বল, তাইত তার নাই, তবে কেন আর খেলাঘরের নবাবী ! একদিকে অহিফেনসেবী বিলাসাল্লাহরক্ত মীরজাফরের নিশ্চেষ্টত।—অদ্যদিকে অত্যাচার-পীড়িত লাঞ্ছিত প্রজার प्रछि সামনে ভেসে উঠে বাথিত করে তুলল। মীরকাসিম প্রজার মথবুদ্ধির চেষ্টায় আত্মোৎসর্গ করতে কৃতসঙ্কল্প হলেন— অন্যের পক্ষে যাহা অসাধা, তাই সুসাধ্য করবার জন্তে জীবনপণ করে কাজে নামলেন ।

夺邓q চোখের মুর্শিদাবাদের বাইরে ইংরেজের চক্ষু হ’তে দূরে অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করার পক্ষে উপযুক্ত স্থান বিবেচিত হ’ল যুগের। দুর্গের সংস্কার হ’ল, নবাব সপরিবারে এসে মুঙ্গেরকে রাজধানী ক’রে বসলেন । চারদিক থেকে কারিগর এনে বন্দুক ও বারুদের কারখানা স্থাপিত হ’ল - সেদিনকার মতি, মীরন ও দীপন দারুদগরের বংশধরদের কারখানা আজও কাশিমবাজারে বর্তমান । রাজমহলের চকুমকি পাথরে ও ছোট নাগপুর ও মুঙ্গেরের লোহার এমন সব বন্দুক গোলা তৈরি হতে লাগল য। সেদিনের পক্ষে সত্যই আশ্চৰ্য্য * গুরগন থ}, মার্কার, সমরু নবাবের চাকরি গ্রহণ করলেন,—সৈঙ্কদের

  • Brooms Rise of Bengal Army, Vol II.

যুগের দুর্গ 8ፃፃ ইউরোপীয় যুদ্ধীতি ও কৌশল শিখাতে লাগলেন। পাটনার দেওয়ান রামনারায়ণের মত অসাধু, অত্যাচারী কৰ্ম্মচারী - র্যার নবাবের অর্থে আপনাদের সমুদ্ধি ও প্রতিপত্তি বাড়িয়েছেন, তাদের মুঙ্গেরে ধরে এনে কতক অর্থ আদায় করলেন । বাংলায় আবার অশাস্তির ঘোর কেটে আশার আলো দেখা দিল—নবাব রাজকাৰ্য্যে মন দিলেন। দু-দিনেই নবাব বুঝলেন যে আলিবর্দী, সিরাঞ্জের সময় যে- ২রাজ দেখেছিলেন সে-ইংরেজ নেই ; ইংবেজের মূৰ্ত্তি বদলে গেছে। সেলিন ইংরেজ বাংলার পথে ঘাটে শহরে সাবধানে সঙ্কোচের সঙ্গে চলাফেরা করত, একটু অন্যায়ু করলেই তাদের জেলখানায় আটক থাকতে হ’ত। আজ নবাব-কৰ্ম্মচারীরা ইংরেজ দেখলেই সঙ্কে চে ও স ভয়ে চলে, কথায় কথায় নবাবের লোককে ইংরেজের হাতে লা স্কৃত ও অপমানিত হ’তে হয়। যারা একজনে নবাবী কেড়ে নিয়ে অনুকে নবাব করতে পারে তারাই যে দেশের কৰ্ত্ত একথা কাউন্সিলের হতে প্রত্যেক ইংরেজ কৰ্ম্মচারীই বুঝত। কোম্পানীর বাণিজ্য-করা সম্বন্ধে যা সুবিধা ছিল, সেই সুবিধা নিয়ে প্রত্যেকে বিনা করে ব্যবসা করে বড়লোক হতে লাগল, তাদের অল্পপৃহীত এদেশীয় ব্যবসাদাররাও ইংরেজ-কুঠীর কৰ্ম্মচারীর দস্তক নিয়ে কর ফাকি দিতে লাগল,— নবাবের কৰ্ম্মচারীরা বাধা দিতে গিয়ে লাঞ্ছিত ও ইংরেজ-হস্তে নির্যাতিত হ’তে লাগল। ব্যবসা-বাণিজ্য নষ্ট হতে চলল, নবাব-ভাণ্ডার কোষশূন্ত হ’ল, কিন্তু সৰ্ব্বোপরি বার-বার মীরকাসিমের আত্মমর্যাদায় আঘাত ক’রে তাকে ক্ষিপ্ত করে তুলল । গভর্ণর ভ্যানসিটার্ট মুঙ্গের দুর্গে এসে নবাবের সঙ্গে এক বোঝা-পড়া করলেন, কিন্তু কলিকাতার কাউন্সিল ত’তে মত দিল না । বিবাদ বেড়েই চলল, কখন যুদ্ধ বাধে তার ঠিক নেই, তাড়াতাড়ি নবাব ইংরেজবন্ধু জগং শেঠ বংশীয় শেঠ-ভ্রাতাদের মুঙ্গেরে আনালেন, পাছে ইংরেজ এদের কাছে টাকা পায় । কিন্তু কিছুতেই কিছু হ’ল না। পাটন-কুঠার কৰ্ত্ত এলিস সাহেব অতর্কিতভাবে পাটনা শহর দখল ক’রে যুদ্ধ বাধিয়ে সভা