পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

む>8 দেখলে, কি যেন একটা সে বুঝতে পেরে উঠচে না । পরে একবার আমার দিকে অবাক চোখে চেয়ে দেখলে, যেন আমাকে এর আগে আর কখনও দেখেনি, এইমাত্র যেন ঘুম ভেঙে উঠে দেখচে, তারপরই একট। অক্ষুট আওয়ায় করে তাড়াতাড়ি উঠবার চেষ্টা করতে গিয়েই মূচ্ছিত হয়ে পড়ে গেল । আমি বললুম এতে রীতিমত রূপকথা । সন্ন্যাসীমশায় তারপর তারপর কি হ’ল ? সন্ন্যাসী-মশায় বললেন—শেষটুকু রূপকথার মত নয় । শুতুন তারপরে। আমি তো মূচ্ছিতা মেয়েটিকে ছেড়ে কোথাও যেতেও পারিনে, কাউকে খবর দিতেও পারিনে । কলসীর জল মেয়েটির চোখে মুখে দিচ্চি, সেই সময় তেঁতুল-জঙ্গলের আড়ালে অনেক লোকের গলার আওয়াজ কানে গেল—সঙ্গে সঙ্গে তার বার হয়ে এল—আট দশজন লোক । পেছনে একটা পান্ধী, একটি ত্রিশ-বত্রিশ বছর বয়সের যুবক, আর একটি পয়ষটি বছরের বৃদ্ধ ভদ্রলোক । অামি তাদের চীৎকার করে ডাক দিলুম। তারা ছুটে এল । মেয়েটির অবস্থা দেখে বৃদ্ধটি তো ছেলেমামুষের মত কেঁদে উঠলেন—সকলে মিলে ধরাধরি করে মূচ্ছিতা মেয়েটিকে নিয়ে গিয়ে পাল্কীতে তুললে। বৃদ্ধ ভদ্রলোকটির মুখে ব্যাপার যা শুনলুম তা সংক্ষেপে এই । যুদ্ধের নাম রামনারায়ণ চৌধুরী, শুভরত্নপুরের জমিদার। মেয়েটি তার বড় পুত্রবধু । সঙ্গের যুবকটিই ওর স্বামী। গত কাৰ্ত্তিক মাসের শেষে বৃদ্ধের পাচ বছর বয়সের একমাত্র পৌত্র কলেরায় মারা যায়। মাসখানেকের মধ্যে ভেবে ভেবে পুত্রবধুটির মস্তিষ্কবিকার ঘটে। দিনমানে কিছুই না, বেশ সহজ মাচুৰ্য, রাত হবার সঙ্গে সঙ্গে তিনি একেবারে উন্মাদ হয়ে উঠতেন, যা তা বলতেন, ছুটে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যেতে প্রবাসী-মাঘ, ১৩৩৭ চাইতেন। আরও বার-দুই এইভাবে পালিয়ে গিয়েছিলেন [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড বলে তাকে আটকে রাখা হত। ( বেঁধে রাখার কথা । স্পষ্ট কিছু বললেন না অবশ্ব ) । কাল রাত্রে কি ভাবে কখন ' চলে এসেচেন ত কেউ জানে না, রাত তিনটার সময় ঘটনাট ধরা পড়ে। তখন থেকেই সবাই খুজতে বার হয়েচে । আরও দুবার এর আগে এই শ্মশান থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাই সষাই এই শ্মশানেই আগে এসেচে খুঁজতে । আমি আগ্রহের স্বরে বললুম-তারপর ?. —তারপর আর কিছুই না, তার ওঁকে নিয়ে চলে গেল। —আমি সেকথা জিগ্যেস করিনি। তারপর মেয়েটির হ’ল ? এ কতদিন আগের ঘটনা বলচেন ? —প্রায় আঠার-উনিশ বছর আগেকার কথা । —তারপর আর আপনি বাজিতপুরে যাননি ? মেয়েটির কথা আর কিছু জানেন না ? সন্ন্যাসী মৃদু মৃদু হাসিমুখে চুপ করে রইলেন। খানিকক্ষণ পরে শাস্তমুরে বললেন—তিনিই তো এখন এই বুড়ো ছেলের মা, তিনিই তো দেখ চেন শুনচেন । এই নবান্ন উৎসবে সেখানে গিয়েছিলুম, মা কি ছেড়ে দিতে চান ? দু-মাস ধরে রাখলেন । আহা, মা আমার । –আচ্ছা, এখন তিনি— এখন তিনি বাজিতপুর জমিদার বাড়ীর অন্নপূর্ণ। পাচটি ছেলেমেয়ের মা, ঘরের সর্বময়ী কত্রী। অল্পবয়সের সে রোগ অনেকদিনই সেরে গিয়েচে অবশু। কিন্তু মন্ট কে এখনও ভুলতে পারেন নি—এখনও মাঝে মাঝে নাম করেন । কথা শেষ করে সন্ন্যাসী ঠাকুর অন্যমনস্ক দৃষ্টিতে সামনের বঁাশঝাড়ের মাথার দিকে আবার চেয়ে চুপ করে রইলেন । কি 餐憑 পGCS