পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ぐ。 এদিক বিহবলভাবে চাহিয়ু দেখিতে লাগিলেন—সময়টা সকাল কি সন্ধ্য। কিছুই ঠাওর করিতে পারিলেন না । অক্ষুট স্বরে তিনবার আওড়াইলেন—“দুঃস্বপ্নে স্মর গোবিন্দ ।” এইবার তাহার মনে হইল মধ্যাহ আহারের পর দিবানিদ্রা দিতেছিলেন – এখন সকাল নয়, সন্ধ্যা । উঃ, কি দুঃস্বপুই না দেখিয়াছেন—তাহারই চোখের সম্মুখে গুণ্ডার বাসষ্ঠীকে ধরিয়া লইয়া গেল। তিনি কিছুই করিতে পারিলেন না। এমন কি • চীৎকার করিতে গেলেও গলা আটকাইয়া আসে। স্বপ্ন, তাই রক্ষা—যদি সভাই হইত তাহা হইলে বুক চাপড়াইয়। মর ছাড়া এই বয়সে আর কি-ই বা করিতে পারিতেন। তাহার সেই সংবাদপত্রের দিকে নজর পড়িল । এই কাগজগুলাই তো রোজ রোজ নারীর প্রতি অত্যাচারের কথা কত রকমে লিপিবদ্ধ করিয়া লোকের মাথা খারাপ করিয়া দেয় । কই আগে এত বাড়াবাড়ি দেখা যাইত না তো ! এসব সম্পাদকের কারসাজি-কাগজের কার্টুতি বাড়াইবার ফিকির । রসলি গল্প ফণদিয়া হৈ চৈ করাটাই ইহাদের পেশা ! তাহার দুঃস্বপ্ন দেথিবীর হেতু এইবার তাহার উপলব্ধি হইল এবং যত রাগ গিয়া পড়িল ঐ কাগজথানার উপর । তিনি তুলিয় খণ্ড খণ্ড করিয়া ছিড়িয়! ফেলিয়! রছিলেন । জানালার বাহিরে তাকাইয়া দেখিলেন—তখনও ছেলের সেইটি হাতে গুম শ্লষ্টয়; বসিয়া দল সম্মুখের মাঠে হুটোপটি করিতেছে, উল্লাসেব যেন তাহাদের অস্ত নাই । কি জানি কেন তাহার রাগ ঘুরিয়া ফিরিয়া গিয়া পড়িল সেই ছেলের দলের উপর । মনে মনে ভাবিলেন—কি সব ছেলে বাবা ? সারাদিন হৈ হৈ রৈ রৈ—এদিকে ‘গজ’ শব্যের রূপ করিতে গেলে মুষ্ঠি যায় । দাড়া ও কাল মজ। দেখাচ্ছি তোমাদের —বেতিয়ে পিঠের ছাল তুলে দেব। আর হেড " | | মাষ্টারটিও তেমনি । কড়। হুকুম—ছেলেদের বেত মারতে পারবেন না । মিষ্টি কথায় কি সায়েস্ত হয় ওরা । হঠাৎ কি মনে করিয়া পাজি লইয়। পণ্ডিত মহাশয় জানালার নিকট পাজি খুলিয়া আলোকে যাইয়। বসিলেন । পঞ্চমী । ক্ষীণ দেখিলেন—সেদিন তারপর প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড স্বপ্রফলের পৃষ্ঠাটি বাহির করিয়া দেখিলেন+/শুক্ল পঞ্চমীর স্বপ্ন অতি সত্বর সিদ্ধ হয় । সৰ্ব্বনাশ ! তাহার বুকে হাতুড়ির ঘা পড়িতে লাগিল—হাত হইতে পাজিট স্থলিত হইয়া সশব্দে নীচে পড়িয়া গেল । হেডমাষ্টার লাইব্রেরীর কক্ষে আলে| জালাইয়া বই লইয়া বসিয়াছিলেন– পণ্ডিত মহাশয় শুল্কমুখে সেইখানে আসিয়া দাড়াইলেন। হেডমাষ্টার মুখ তুলিতেই পণ্ডিতের চেহারা দেখিয়া হাসিয়া উঠিলেন, কহিলেন, —বাঃ এ দশা কে করলে আপনার ? পণ্ডিত মহাশয় হাত কচলাইতে কচলাইতে কহিলেন – আজ্ঞে একটা দুঃস্বপ্ন দেখে মনটা বড় খারাপ হয়ে গেল । হেডমাষ্টার নব্য যুবক, এখনও অবিবাহিত দুঃস্বপ্নের – কথা শুনিয়াই একটা আন্দাজ করিয়া লইলেন, কহিলেন, – দুঃস্বপ্ন দেখেছেন, কিন্তু সারা গায়ে মাথায় তুলে। পণ্ডিতের সেদিকে হুস ছিল না— এখন মাথায় ৭ বুঝিতে পারিলেন বাদ গায়ে হাত বুলাইতেষ্ট ব্যাপারটি হায় ! এমন সময়ে তাহার সাধের বালিশটিং সাধিয়াছে । তিনি মুখ কাচুমাচু করিয়া কহিলন— বালিশটি ছেড়া কি না । আর কেই ব দেখাশোনা করে এখানে, ছিড়েছে তো ছি ড়েই চলেছে। হেডমাষ্ঠীর সহাস্তে কহিলেন–কিন্তু বালিশটি নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ না করলে তে। এমন অবস্থা হতে পারে ন। কোন ছেলের সাম্নে পড়েন নি তো ? এই বিদ্রপে পণ্ডিতের ক্রোধের উদ্রেক হইল, কি স্থ উপায় নাই । তিনি নম্ৰমুরে কহিলেন--স্বপ্নের ঘোরে কি করেছি খেয়াল নাই মশায় । তারপর কিন্তু কিন্তু করিয়া কহিলেন-চার দিনের ছুটি দিতে হচ্ছে মাষ্টার মশায়, একবার বাড়ী থেকে ঘুরে আসি । হেড মাষ্টার কহিলেন—বলেন কি পণ্ডিত মশায় ? এই তো মাসখানেক হ’ল পূজোর ছুটির পর বাড়ী থেকে এসেছেন, আবার কিছুদিন পরেই বড়দিনের ছুটি । এর মধ্যে আবার বাড়ী যাওয়ার প্রয়োজন আপনার ? না, আপনি হাসালেন দেখছি । 3. হ’ল