পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫৬২ সমাজ আমাদের অতিরিক্ত আদব-কায়দার চাপে স্মৃত্তিহীন ; আর জীবন আমাদের মোট বিলাসিতীয় পরিপূর্ণ। ধৰ্ম্ম-বোধ আমাদের অন্তহিত : ধৰ্ম্ম-ভীতিরনিবিড় অন্ধকারে আমরা দিশেহার । এমনি দুর্দশার দিনে গঙ্গাজলে গঙ্গা-পূজার মত ওয়ার্ডসওয়ার্থ-এর ভাষায় ওয়ার্ডসওয়ার্থকে ডেকে বলতে ইচ্ছে করছে,--- “Wordsworth, Muslim hath need of thee, কেন-না, তার মত একজন দৃষ্টিমান ঋষি হয়ত দরদীর মতো আমাদের জীবনের স্থূলতার নিন্দ ক’রে অ’থাপিগকে কিছুটা প্রকৃতি স্পশাহুরাগী করে তুলতে *将び芝;II কিন্তু, দুঃখ এই যে ওয়ার্ডসওয়ার্থ-এর মত লোক হয়ত আমাদের সমাজে টিকে থাকতে পারবেন না । কারণ, সমাজের দোষ-ত্রুটি সম্বন্ধে অতৃপ্তির স্বর আমরা মোটেই সহ কৰ্ত্তে পারিনে, সমাজের সাফাই গানেওয়াল আদমীই আমাদের প্রিয় । “আমাদের সব ভাল, আমাদের সমাজ-জীবন নিষ্কলুষ, এহেন অহমিকাপূর্ণ বাণীর উদগীতাকেই আমর। নেতৃস্থানীয় বলে বরণ ক’রে নিই। কিন্তু এ সমস্ত উক্তি যে আমাদের উপকারের চাইতে সৰ্ব্বনাশই করছে বেশী, সেদিকে আমাদের খেয়ালই নেই। এই ঘুম-পাড়ানি গানের মাদকতাগুণেই আজও আমরা সুখে দিবানিদ্রা যাচ্ছি। ‘আমাদের যা আছে তাই যথেষ্ট, আমাদের সমাজের পরিবর্তন অনাবশ্বক, এই অহঙ্কারবোধই আজ আমাদের প্রগতির পথে বাধা হ’য়ে দাড়াচ্ছে । নিজের সমাজের গুণ গাইতে গিয়ে অন্য সমাজের নিন্দা-প্রচারেও আমরা পঞ্চমুখ । পর-দোষালোচনায় আত্ম-সংশোধন হয় না, আত্ম-দোষালোচনায়ই হয়, এই সাধারণ সত্যটুকু বুঝবার মত শক্তিও আমাদের নেতাদের নেই-এমনি দৃষ্টিহীন হ’য়ে পড়েছি আমরা ! ধৰ্ম্মান্ধতার কড়া মদ পান করিয়েই নেতৃবর্গ সহজে আমাদের বাহব লাভে সক্ষম ; সুতরাং সমাজের জন্য, কি মানসিক কি শারীরিক, সৰ্ব্বপ্রকারের কষ্ট-সাধ্য কৰ্ম্ম হ’তেই &R föß Necessity is the mother of invention অভাবই নব স্বাক্টর জনয়িত্রী ; কিন্তু প্রবাসী—মাঘ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড আমাদের অভাব-জ্ঞানই নেই, সুতরাং নবহুষ্টির আশাও স্বদূর পরাহত। আমার মনে হয়, বৰ্ত্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের এই যে অতিরিক্তি সস্তুষ্টি, এই আমাদের ভবিষ্যৎ উন্নতির অন্তরার হ’য়ে দাড়াবে। কিন্তু, দুঃখ এই যে, বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু পীড়া অনুভব করেন, এহেন ব্যক্তি আজ আমাদের সমাজে খুবই বিরল। আমাদের জীবনের রসহীনতার প্রতি ইঙ্গিত ক’রে সেখানে সরসতার নিঝর বহতে পারেন এহেন ব্যক্তি আজ পর্য্যস্ত আমাদের সমাজে আবিভূত হন নি। হ’লে বোধ হয় সমাজের চেহারা অন্য রকম হ’ত । তরুণদের মধ্যে কেউ কেউ এদিকে দৃষ্টি দিয়েছিলেন, কিন্তু সমাজের নিকট থেকে তারা কি প্রকার সম্ভাষণ পেয়েছেন, এক শ্রেণীর মাসিক ও সাপ্তাহিকের পাত ওন্টালেই তা সহজে বুঝতে পারা যায়। তাই ব’লে সমাজের বিপক্ষতায় ভীত হ’য়ে তাদের বসে থাকূলে চলবে না । leveller, আর দুর্গতি আমাদের যখন চরমে এসে পৌছেছে, তখন যত শক্তিহীনই হই না কেন আমর, আমাদের স্বীয় কাজটুকু ক’রে যেতেই হবে , শক্তিমানদের আগমনের অপেক্ষায় থাকলে শুধু সময় ক্ষেপই হবে। Co-Ri, Public calamity is a neighty v3) নীরসতাই নিষ্ঠুরতার জন্মভূমি, আর আমাদের জীবনে ষে নিষ্ঠুরতার লীলা চলছে, নীরসতাই যে তার মূলে রস জুগিয়ে আসছে সে কথা বলা বাহুল্য। যত ভাল বীজই উপ্ত হোক না কেন, রসহীন শুষ্ক ভূমি কখনও কিছু উৎপাদনক্ষম নয়। আমাদের জীবনে শিক্ষার বীজ কোনো ভাল ফল ফলাতে পারছে না, একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারা যাবে, চিত্ত-ভূমির রসহীনতাই তার প্রধান কারণ । আমাদের উৎসগুলি আনন্দহীন । বৎসরে দু-বার ঈদ আমাদের দুয়ারে এসে হাজির হয়। কিন্তু এক জিহবার রস ছাড়া আর কোনো রসই তারা ক্ষরণ করতে পারে না। আর করবেই বা কি করে, সমাজের যার