পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা | পড়ে যায় । তাই কো-অপারেটিভের যোগে অন্য দেশে যখন সমাজের নীচের তলায় একটা স্মৃষ্টির কাজ চলচে, আমাদের দেশে টিপে টিপে টাকা ধার দেওয়ার বেশি কিছু এগোয় না। কেন-ন ধার দেওয়!, তার স্বদ কষ, এবং দেনার টাকা আদায় করা অত্যস্ত ভারু মনের কাছেও সহজ কাজ, এমন কি ভীরু মনের পক্ষেই সহজ, তাতে যদি নামতার ভুল না ঘটে তাহলে কোনো বিপদ নেই । বুদ্ধির সাহস এবং জনসাধারণের প্রতি দরদ-বোধ এই উভায়র অভাব ঘটাতেই দুঃখীর দুঃখ আমাদের দেশে ঘোচানো এত কঠিন হয়েচে ; কিন্তু এই অভাবের জন্য কাউকে দোষ দেওয়া যায় না । কেন না কেরাণী তৈরির কারখানা বসাবার জন্তেই একদা আমাদের দেশে বণিক-রাজত্বে ইস্কুলের পত্তন হয়েছিল । ডেস্ক-লোকে মনিবের সঙ্গে সাযুজ্যলাভই আমাদের সদগতি । সেই জন্তে উমেদারীতে অকৃতার্থ হলেই আমাদের বিদ্যাশিক্ষা ব্যর্থ হয়ে যায় । এই জন্যেই আমাদের দেশে প্রধানত দেশের কাজ কংগ্রেসের পাণ্ডালে এবং থবরের কাগজের প্রবন্ধমালায় শিক্ষিত সম্প্রদায়ের বেদন উদোষণের মধ্যেই পাক খাচ্ছিল । অামাদের কলমে বাধা হাত দেশকে গড়ে তোলবার কাজে এগোতেই পারলে না । ঐ দেশের হাওয়াতেই আমিও তো মানুষ, সেই জন্যেই জোরের সঙ্গে মনে করতে সাহস হয়নি যে বহু কোটি জনসাধারণের বুকের উপর থেকে অশিক্ষা ও অসামর্থ্যের জগদ্দল পাথর ঠেলে নামানো সম্ভব । অল্পস্বল্প কিছু করতে পারা যায় কি-না এতদিন এই কথাই ভেবেচি। মনে করেছিলুম সমাজের একটি চির-বাধাগ্রস্ত তলা আছে সেখানে কোনো কালেই সুর্য্যের আলে৷ সম্পূর্ণ প্রবেশ করানো চলবে না, সে জন্যেই সেখানে অন্তত তেলের বাতি জালাবার জন্যে উঠে পড়ে লাগা উচিত কিন্তু সাধারণত সেটুকু কৰ্ত্তব্যবোধও লোকের মনে যথেষ্ট জোরের সঙ্গে ধাক্কা মারতে চায় না, কারণ যাদের আমরা অন্ধকারে দেখতেই পাইনে, তাদের জন্যে যে কিছুই করা যেতে পারে একথা স্পষ্ট করে মনে আসে না। এই রকম স্বল্পসাহস মন নিয়েই রাশিয়াতে এসেছিলুম, শুনেছিলুম এখানে চাষী ও কৰ্ম্মকদের রাশিয়া সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের পত্রাবলী ぐ。 > ح ع- م. همه ۹عربیعی هیات برخ মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের পরিমাণ অনেক বেড়ে চলেচে। ভেবেছিলুম, তার মানে ওখানে পল্লী পাঠশালায় শিশুশিক্ষার প্রথম ভাগে বড়-জোর দ্বিতীয় ভাগ পড়ানোর কাজ সংখ্যায়, আমাদের চেয়ে বেশী হয়েচে । ভেবেছিলুম ওদের তথ্যতালিকা নেড়েচেড়ে দেখতে পাব ওদের কজন চাষী নাম সই করতে পারে আর কজন চাষীর নামত দশের কোঠা পৰ্য্যস্ত এগিয়েছে । মনে রেখো, এখানে যে বিপ্লবে জারের শাসন লয় পেলে সেটা ঘটেচে ১৯১৭ খৃষ্টাব্দে । অর্থাৎ তের বছর পার হ’ল মাত্র । ইতিমধ্যে ঘরে বাইরে এদের প্রচণ্ড বিরুদ্ধতার সঙ্গে লড়ে চলতে হয়েচে । এরা একা, অত্যন্ত ভাঙাচোরা একটা রাষ্ট্র-বাবস্থার বোঝা নিয়ে। পথ পূৰ্ব্বতন দুঃশাসনের প্রভূত আবর্জনায় দুর্গম । যেআত্মবিপ্লবের প্রবল ঝড়ের মুখে এর নবযুগের ঘাটে পাড়ি দিলে সেই বিপ্লবের প্রচ্ছন্ন এবং প্রকাশু সহায় ছিল ইংলণ্ড এবং আমেরিক । অর্থসম্বল এদের সামান্ত— বিদেশের মহাজনী গদিতে এদের ক্রেডিট নেই। দেশের মধ্যে কলকারখান। এদের যথেষ্ট পরিমাণে না থাকাতে অর্থ-উৎপাদনে শক্তিহীন । এইজন্যে কোনো মতে পেটের ভাত বিক্রি করে চলচে এদের উদ্যোগপৰ্ব্ব । অথচ রাষ্ট্র-ব্যবস্থায় সকলের চেয়ে যে-অমৃৎপাদক বিভাগ—সৈনিক বিভাগ—তাকে সম্পূর্ণরূপে সুদক্ষ রাখার অপব্যয় এদের পক্ষে অনিবাৰ্য্য। কেন না আধুনিক মহাজনী যুগের সমস্ত রাষ্ট্রশক্তি এদের শত্রুপক্ষ এবং তারা সকলেই আপন আপন অস্ত্রশালা কানায় কানায় ভরে তুলেচে। মনে আছে এরাই লীগ অফ নেশনসে অস্ত্রবর্জনের প্রস্তাব পাঠিয়ে দিয়ে কপট শাস্তিকামীদের মনে চমক লাগিয়ে দিয়েছিল । কেন-ন নিজেদের প্রতাপ বৰ্দ্ধন বা রক্ষণ সোভিয়েটুদের লক্ষ্য নয়—এদের সাধন হচ্চে জনসাধারণের শিক্ষা স্বাস্থ্য অল্পসম্বলের উপায় উপকরণকে প্রকৃষ্ট প্রণালীতে ব্যাপক ক’রে গড়ে তোলা, এদেরই পক্ষে নিরুপদ্রব শাস্তির দরকার সব চেয়ে বেশি। কিন্তু তুমি তো জান, লীগ অফ নেশনসের সমস্ত পালোয়ানই গুণ্ডাগিরির বহুবিস্তৃত উদ্যোগ