পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৬৪ রাঘব দূত সোই শৈতানু । মায়া অলাউদ্দীন সুলতানু ॥ প্রেমকথা এহি ভাতি বিচারন্থ। বুঝি লেহু জো বুঝৈ পারস্থ । —“সপ্ত পাতাল সপ্ত স্বৰ্গ রূপ চোঁদ ভূবন যাহা কল্পিত হইয়াছে ঐ সমস্তই দেহঘটেই বিদ্যমান ( যাহা নাই ভাণ্ডে তাহা নাই ব্ৰহ্মাণ্ডে )। মহুষ্য দেহই চিতোর, ইহার রাজা মন বা রতন সেন। চিত্ত-কমল সিংহলদ্বীপ— যাহা হইতে পদ্মিনী-রূপী বুদ্ধির উদ্ভব। শুক (হীরামন তোত ), মার্গ দশক গুরু। গুরু বিন জগতে কে নিগুৰ্ণ পরব্রহ্মকে পাইতে পারে ? নাগমতী ( পদ্মাবতীর সপত্নী ) এই দুনিয়ার ধাধা বা সংসারাসক্তি ; যাহার চিত্ত ইহার নাগপাশে বাধা পড়ে নাই, সে-ই রক্ষ পাইয়াছে। রাঘবদূত যে পদ্মিনীর রূপ বর্ণনা করিয়া আলউদ্দীনকে চিতোর আক্রমণে প্ররোচিত করিয়াছিল, সে-ই শয়তান বা মার । মায়াই সুলতান আলাউদ্দীন—যিনি পদ্মিনী-রূপী বুদ্ধি বা শুদ্ধাভক্তিকে আবিল ও কলুষিত করিবার জন্য সৰ্ব্বদা সচেষ্ট । এই প্রেম-কাহিনী এরূপই বিচাৰ্য্য ; যিনি পারেন বুঝিয়া লইবেন ।” জ্যায়সী যদি আজ কবর ছাড়িয়া টডের রাজস্থান পড়িতে পারিতেন, তবে নিশ্চয়ই বলিতেন “হায়! উন্ট বুঝিল্লি রাম।” রাজপুতানার চারণ-ঐতিহাসিকদের মধ্যে পদ্মিনী উপাখ্যান সম্পূর্ণ বর্জন করিয়া ইতিহাস লিখিয়াছেন বুদীর চারণ ও সভাকবি মিশন স্বরজমল । হাড়ারাজ্য বুদী ও কোটার “খ্যাত” হইতে তাহার সুবৃহৎ গ্রন্থ সঙ্কলিত হইয়াছে : “তারিখ-ই-ফিরিশতা” প্রভৃতি প্রধান প্রধান মুসলমান ইতিহাসও তিনি পড়িয়াছিলেন । কোটা বুদীর খাতে পদ্মিনী-উপাখ্যানের উল্লেখ থাকিলে তিনি যে কোনো ইঙ্গিতমাত্র করিবেন না, এরূপ অকুমান করা কঠিন । র্তাহার বর্ণনার কোনো কোনো অংশে ভ্রমপ্রমাদ থাকিলেও উহা বিশেষরূপে সমালোচিত হইবার যোগ্য । বংশ-ভাস্কর পাঠে জানা যায়, রন্থমভোর দুর্গ আল উদ্দীন কর্তৃক বিজিত হইবার পর রাও হস্বীর চৌহানের পুত্র রতন সিংহ মিবার-রাজ লক্ষ্মণ সিংহের আশ্রয় গ্রহণ করেন । লক্ষ্মণ সিংহ রতনসিংহকে তাড়াইয়া দিতে কিংবা প্রবাসী—ফাল্গুন, ১৩৩৭ AASAASAASAASAASAASAAMMSAASAASAASAASAASAASAAMA AMAMAAAS AAASASAAAMMAMMA AMMAMS [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড শক্রহস্তে সমর্পণ করিতে অস্বীকার করিলে মুসলমান-সেনা চিতোর আক্রমণ করে । হাড়ারাজ সমরসিংহ ভয়ে সুলতানকে বহু উপহার ও ভোজন-সামগ্ৰী দিয়া তাহার শরণাগত হয়। বহু হিন্দুরাজা বাধ্য হইয়া মুসলমানসেনার সাহায্যার্থ আসিয়াছিল ; উহার মধ্যে ৮৪ জন মারা যায়। তিন বর্ষ পর্য্যন্ত লক্ষ্মণ সিংহ ঘোরতর রণে সবংশে নিহত হইয়াছিলেন ; কেবলমাত্র অজয়সিংহ শত্রুবুহ ভেদ করিয়া পলায়ন করেন । এ যুদ্ধে কুমার অরিসিংহ হিঙ্গলু হাড়, ও বল্লন নামক ক্ষত্রিয়বীর অনেকবার নৈশ আক্রমণ করিয়া অসীম শৌর্য্য দেখাইয়াছিলেন । ইহাতে পদ্মিনীর নামমাত্র নাই ; ভুলীর গল্পও নাই । বংশ-ভাস্করের “বল্লন”ই বোধ হয় বাদলসম্বন্ধীয় জনশ্রুতির মূল । গোরার নাম ইহাতে নাই । টড-কথিত জনশ্রুতি অনুসারে গোরা ভিন্ন রাজ্যের লোক ; জ্যায়সীর মতে মিবারের সামন্ত । বংশভাঙ্গরের হিঙ্গলু গহলোৎ কিংবা চিতোরের সামন্ত নহেন ; তিনি হাড়-বংশী সাহায্যকারী সর্দার । চিতোর-দুর্গের উপর হিঙ্গলু আহাড়ার মহল বিশেষ প্রসিদ্ধ। ভাটের আহাড়াকে হাড় বলিয়া ভুল করায় বুন্দীর বংশাবলীতে উহার নাম ঢুকাইয়া দেওয়া হইয়াছে। বাস্তবিকপক্ষে ‘আহাড়া মিবারের পূর্ব রাজধানী আহাড় নামক স্থানোৎপন্ন গহ লোং বংশের এক শাখা-যাহা এখনও ডুঙ্গরপুরে রাজত্ব করিতেছে। হিঙ্গলু (হিংগেলো) আহাড়। ডুঙ্গরপুরের সর্দার ছিলেন ; মহারাণা কুম্ভকর্ণের সময় রাও যোধার সহিত যুদ্ধে মারা যান ; তাহার ছত্রী যোধপুরের নিকট বালসমন্দ সরোবরের উপর এখনও অবস্থিত আছে * হিংগোলোর বীরত্ব বোধ হয় গোর-সম্বন্ধীয়-কথার স্বষ্টি করে নাই। গেীর নামে একজন বীরপুরুষ বি. ১৫৪৫ (১৪৮৯ খৃঃ) অর্থাৎ পদ্মাবত-রচনার প্রায় ৫০ বৎসর পূৰ্ব্বে রাণা বুপ্তের পুত্র রায়মলের রাজত্বে উদ্ভূত হইয়াছিলেন। কুম্ভের অপর পুত্র পিতৃহন্ত "উদা”র প্ররোচনায় মালবের স্থলতান গিয়াসউদ্দীন খিলজী চিতোর অবরোধ করেন । এই যুদ্ধে বীরত্বর গেীর এক দুর্গশৃঙ্গ হইতে প্রত্যহ মুসলমানদিগকে

  • (Jjha, ii. 560.