পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७१० ●धंशांजौ--कांग्लन, ७७७१ ७०* उां★, २ग्न थ७ পারিবে, তাহাকে কখনই সে বিবাহ করিবে না, ইহা সে মনে মনে স্থির করিয়া রাখিয়াছিল ; দশ হাজার টাকা দিলেও না। আজকাল সকলে যে মেয়েকে লেখাপড়া শিখায়, গান বাজনা শিখায়, তাহা সে জানিত, ইহাতে তাহার আপত্তি ছিল না, কিন্তু এগুলিকে খুব বেশী প্রয়োজনীয়ও সে বোধ করিত না। সবই ত পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য ? কিন্তু যে-মেয়ে কালো কুৎসিং, সে হাজার শিক্ষিত হইলেও তাহার কিই বা মূল্য ? এই ছিল তাহার মোটের উপর ধারণা। অবশু কোনো শিক্ষিত মেয়ের সহিতই সে এ পর্য্যস্ত মিশিবার স্থযোগ পায় নাই । কিন্তু এই মেয়েটি স্বন্দরী না হইলেও অনঙ্গের দৃষ্টিকে বড় বেশী আকর্ষণ করিতে লাগিল । তাহার নাম ধাম পরিচয়, সবই দুই চারি দিনের ভিতর সে সংগ্ৰহ করিয়া ফেলিল। মেয়েটির নাম মৈত্রেয়ী রায়, থার্ড ইয়ারে পড়ে। তাহার পিতা অথিলচন্দ্র রায়, ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন, এখন পেন্সন লইয়াছেন। বয়স তত হয় নাই, কিন্তু শরীর অসুস্থ । তাহার পত্নীও অসুখে ভূগিতেছেন। ছেলেটির নাম সন্তোষ, সে ফোর্থ ক্লাসে পড়ে, হেয়ার স্কুলে। তাহার সঙ্গে অনঙ্গ চট্‌ করিয়া ভাব করিয়া লইল । মৈত্রেয়ীর বয়স অনঙ্গের সমানই হইবে, কিন্তু সে এক ক্লাস উপরে পড়ে জানিয়া অনঙ্গের মনটা প্রথমে একটু পীড়িত হইয়া উঠিল। তাহার পর নিজেকেই সাধনা দিল যে মেয়েদের ত দিনরাত বই মুখে করিয়া বসিয়া থাকা ভিন্ন কৰ্ম্ম নাই, বাহিরের জগতের সঙ্গে সম্পর্কই বা কি তাহাদের ? স্বতরাং মুখস্থ বিদ্যার জোরে চটুপটু পাস করিবে সে আর আশ্চর্য্যের বিষয় কি ? ছেলেরা সারাদিন রাত অত পড়িতে পারে না। কিন্তু জেনারেল নলেজ নিশ্চয়ই মৈত্রেয়ীর চেয়ে অনঙ্গের বেশী আছে। মৈত্রেয়ীর সঙ্গে আলাপ করিয়া নিজের বিদ্যাবুদ্ধির পরিচয় দিয়া তাহাকে বিস্মিত করিয়া দিবার ইচ্ছাট ক্রমেই অনঙ্গের প্রবল হইয়া উঠিতে লাগিল । আলাপ পরিচয় হইতেও খুব বেশী দেরি হইল না। সন্তোষের সঙ্গে অনঙ্গ এমন ভাব জমাইয়া তুলিল বে, সে চব্বিশ ঘণ্টাই দিদি এবং মা বাবার কাছে অনঙ্গবাবুর গল্প করিতে লাগিল। অনঙ্গকে তাহারাও অবশু লক্ষ্য করিয়াছিলেন, কারণ তাহার চেহারাট। বাঙালী ঘরের ছেলের পক্ষে একটু অতিরিক্ত রকম ভাল ছিল। মৈত্রেয়ী প্রায়ই দেখিত সে যখন গান গায় কিংবা সন্তোষকে লইয়া বারান্দায় পড়াইতে বসে, তখন অনঙ্গ কোনো একটা ছুতায় নিকট দিয়া কেবলই যাওয়াআসা করে। ক্রমে মৈত্রেয়ীরও অভ্যাস হইয়া গেল, গাহিতে বসিলেই সে একবার তাকাইয়া দেখিয়া লইত অনঙ্গ কাছে আছে কি না । এ অবস্থায় যাহা স্বাভাবিক তাহাই ঘটিল। মৈত্রেয়ী দেখিল সে এই অপরিচিত যুবক সম্বন্ধে বড় বেশী সচেতন হইয়া উঠিয়াছে। তাহার কেমন ভয় করিতে লাগিল । কে এ, কোথায় এর ঘরবাড়ি, কি উদ্দেশ্বে এখানে আসিয়াছে, কিছুই সে জানে না। কেন সে জানিয়া শুনিয়া এমন বেদনার পথে পা বাড়াইতেছে ? সে স্বন্দরী নয়, অনঙ্গ রূপবান, সে কি কখনও মৈত্রেীকে হৃদয়ে স্থান দিতে পরিবে ? মৈত্রেয়ীর মা বাবা জানিতে পারিলে কি মনে করিবেন ? মৈত্রেী নিজেকে ধিকার দিল । চিরদিন সে অহঙ্কার করিয়া আসিয়াছে যে, বিবাহ করিয়া বসিয়া বসিয়া স্বামীর অন্ন ধ্বংস করা তাহার আদর্শ নয়, সে নিজেকে সৰ্বরকমে গড়িয়া তুলিবে, নিজের কাৰ্য্যের পথ নিজে খুজিয়া লইবে । এখন সে কি না সামান্য প্রলোভনেই পথভ্রষ্ট হইতে চলিল ? তাহার আরও লজ্জা করিতে লাগিল এইজন্য যে, অনঙ্গের দিক হইতে কোনো উৎসাহই প্রকাশ পায় নাই, সে-ই কি নারী হইয় প্রথমে হৃদয়দান করিয়া বসিবে ? প্রতিদানে হয়ত অপমান ভিন্ন কিছুই জুটিবে না । মৈত্রেয়ী প্রাণপণে নিজেকে সংযত করিতে চেষ্টা করিতে লাগিল । অনঙ্গের আগ্রহ কিন্তু দিন দিন প্রবল হইয়া উঠিতেছিল। মৈত্রেয়ীকে সেও ভালবাসিতে আরম্ভ করিয়াছিল কি-না বলা শক্ত, তবে তাহার সঙ্গে পরিচিত হইবার, তাহার হৃদয়জগতে স্থান পাইবার একটা অদম্য আকাঙ্ক্ষা তাহাকে পাইয়া বসিতেছিল। এতদিন তাহার জীবনে নারীর কোনো স্থান ছিল না, তাহারা কেবল