পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংখ্যানূ্যন সমষ্টিসকলের মনে এই সন্দেহ জাগাইয়া রাখা হইবে, যে, তাহদের স্বদেশবাসী সংখ্যাভূমিষ্ঠ লোকদের চেয়ে বিদেশী লোকেরা তাহাদের অধিক হিতকাজী। বাস্তবিকই সরকারী বিদেশী লোকের তাহদের বেশী হিতাকাজী হইলে সে-কথা স্বীকার করিতে আমাদের আপত্তি হইত না । কিন্তু তাহা সত্য নহে । সুতরাং বিদেশীর হাতে তাহদের অধিকার রক্ষার ভার দিয়া আমরা নিশ্চিন্ত হইতে চাই না, এবং পরোক্ষভাবে ভেদবুদ্ধির ও ভেদনীতির প্রশ্রয় দিতে চাই না । আর্থিক বিষয়ের দায়িত্ব ব্রিটিশ প্রধান মন্ত্রী ভারতবর্ষের আর্থিক ব্যাপার সম্বন্ধেও কাৰ্য্যতঃ বড়লাটের হাতেই প্রায় সব ক্ষমতা রাখিতে চান । তাহা না করিলে না-কি জগতের বাজারে ভারতবর্ষের বাজারসম্ম থাকিবে না । ইহা আমরা বিশ্বাস করি না। আসল কথা এই যে, গ্রেট ব্রিটেনের লোকদের এবং ইংরেজ গবন্মেণ্টের স্বার্থরক্ষার জন্যই এরূপ প্রস্তাব করা হইতেছে । গবন্মে মেণ্ট ভারতবর্ষের নামে অনেক শত কোটি টাকা ঋণ করিয়াছেন । অধিকাংশ ঋণের মহাজন ইংরেজ । গবন্মেণ্টের ভয় এই যে, ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভার হাতে আর্থিক ক্ষমতা গেলে ভারতীয়েরা এই সব ঋণ অস্বীকার করিয়া বসিতে পারে। সব ঋণই অস্বীকার করা হইবে এরূপ আশঙ্কা অমূলক। কংগ্রেস পক্ষ হইতে ইহাই বলা হইয়াছে, যে, কোন কোন ঋণ বাস্তবিকই ভারতবর্ষের মঙ্গলের জন্য করা হইয়াছে, তাহ কোন নিরপেক্ষ বিচারকমণ্ডলী দ্বারা নিৰ্দ্ধারণ করা হউক । ইহা ন্যায্য কথা । যাহা হউক, গবষ্মেন্ট যাহাই করুন, শীঘ্র বা বিলম্বে এরূপ বিচার হইবেই, এবং যে ঋণ ন্যায়তঃ ভারতের পরিশোধ্য নহে, তাহ ভারতব অস্বীকার করিবেই। বিনিময়-নীতি, সরকারী ঋণগ্রহণ প্রভৃতি বিষয়ও বড়লাটের হাতে রাখিবার প্রস্তাব হইয়াছে, আমরা ইহার বিরোধী। ভারতবর্ষের প্রধান প্রধান অর্থনীতিজ্ঞেরা বলিয়াছেন, যে, এক টাকা ১৮ পেনী মান গবন্মেণ্ট

    • \,\aസഹസഹ-l.--l-്....സ്.

bుస్చిన বিনিময়ের এই হার স্থির করিয়া দেওয়ায় ভারতীয়দের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি এবং ইংরেজদের লাভ হইয়াছে। এই কারণে, মহাত্মা গাড়াও এই দাবি করিয়াছেন, যে, টাকাকে ষোল পেনীর সমান বলিয়া হার ধার্য্য করা হউক। প্রায় দশ বৎসর পূৰ্ব্বে "রিভাস কাউন্সিল্স” দ্বারা ভারতবর্ষের অনূ্যন চল্লিশ কোটি টাকা ক্ষতি হইয়াছিল। বিস্তর ক্ষতি যে হইয়াছিল, তাহ পালামেণ্টে স্বীকৃতও হইয়াছিল। সরকারী ঋণগ্রহণের ক্ষমতা বড়লাটের হাতে থাকিলে, অতীত কালের মতই, ভবিষ্যতেও ভারতবর্ষের হিত ও প্রয়োজন অপেক্ষ ব্রিটেনের স্বার্থসিদ্ধি ও স্বার্থরক্ষার জন্যই প্রধানত: বা মধ্যে মধ্যে ঋণগ্রহণ অনিবাৰ্য্য হইবে। প্রধান শাসকের হাতে ক্ষমতা রক্ষা প্রধান মন্ত্রী বলিতেছেন, দেশের প্রধান শাসকের হাতে কতকগুলি ক্ষমতা সব স্বাধীন দেশেই আছে, এবং ভারতীয়েরা নিজের যদি ভারতবর্ষের জন্ত মূল রাষ্ট্রবিধি রচনা করিতেন, তাহ হইলে তাহারাও প্রধান শাসকের হাতে এরূপ ক্ষমতা রাখিতেন । ইহা সভ্য কথা, কিন্তু আংশিক সত্য মাত্র। স্বাধীন দেশ-সকলের যেসব মূল রাষ্ট্রবিধি রচিত হইয়াছে, তাহা তথাকার লোকের নিজে করিয়াছে, সুতরাং অনাবশুক কোন ক্ষমতা তাহার প্রধান শাসকের হাতে দেয় নাই। ভারতীয়দিগকে তাহাদের রাষ্ট্রবিধি রচনা করিবার ক্ষমতা দেওয়া হউক। তখন তাহারাও কেবল প্রয়োজনীয় ক্ষমতাই প্রধান শাসকের হাতে রাখিবে । আর একটি কথা স্মরণ রাখিতে হইবে। স্বাধীন দেশ-সকলের প্রধান শাসকের নাম রাজ, সম্রাট, প্রেসিডেন্ট ( দেশপতি ) বা অন্য যাহাই হউক, তিনি তাহদের স্বদেশবাসী ও. স্বজাতীয় । অন্ত কোন দেশের স্বার্থচিন্তা বা স্বার্থরক্ষা উাহার পক্ষে অনাবগুক, স্বতরাং তিনি ভুল করিলেও স্বদেশের জন্যই ভুল করেন। ভারতবর্ষকে যে কন্সটিটিউশন দেওয়া হইতেছে, তাহাতে বড়লাট ইংরেজই হইবেন ; ভবিষ্যতে যদি কখন কোন ভারতীয়কে বড়লাট করা হয়, এমন লোককে করা হইবে যিনি ইংরেজের খুৰ