পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 চলিল। তাহার বড়ভাই রতন সাহ—যিনি এযাবৎ চ্চত্রসালকে “লোভাং, উদ্বাহুরিব বামনঃ’ বলিয়া কুপা ৪ অবজ্ঞার চক্ষে দেখিতেন, তিনি এবং আরও দু-একজন বাদশাহী মনসব ছাড়িয়া এ দলে যোগ দিলেন । খৃষ্টাব্দে ধামোনীর ফৌজদার রণদৌল থ ( রুহুল্ল ?) এবং যশোবন্ত সিংহ বুন্দেল ছত্রসালকে দমন করিবার জন্য আদিষ্ট হইলেন , কিন্তু কৃতকাৰ্য্য হইতে পারিলেন না । প্রাকার-বেষ্টিত শহর ও প্রধান দুর্গগুলি ছাড়া বুন্দেলখণ্ড ও মালবের কিয়দংশে মোগলশাসন একেবারে লোপ পাইল । এই বৎসর সম্রাঢ় ঔরঙ্গজেব জিজিয়া-কর প্রবর্তন করিয়। অগ্নিতে ঘৃতাহুতি দিলেন । মন্দিরধ্বংস, হিন্দু ব্যবসায়ীর উপর দ্বিগুণ বাণিজ্য-শুদ্ধ ধায্য ( শতকরা ৫ ), হিন্দু দেওয়ান ও পেশকারদের শতকরা ৫০ জনের পদচ্যুতি ও তাহাদের স্থানে মুসলমান নিয়োগ ইত্যাদি ব্যবস্থার পর এই মুগু-কর হিন্দুদের মধ্যে অসস্তোষ আরও বাড়াইয়া দিল । মিবারের রাণ হইতে দরিদ্র কুযক পৰ্য্যন্ত কেহই এ কর দান হইতে অব্যাহতি পাইল না । বাদশ হিন্দুদিগকে “হাতে ও ভাতে” মরিবার জোগাড় করিতেছেন দেখিয় তাহারা প্রকাশে অ প্রকাশে বিদ্রোহীদের করিতে লাগিল । যাহারা মুণ্ড-কর দিতে পারিল না তাহারা মুসলমান হইয়া গেল ; যাহার গোয়ার (যথা-মালবের রাজপুত ইত্যাদি) তাঙ্গার জিজিয়া-আদায়কারী নিরপরাধ কাজীদের দাড়ি গোফ ছিড়িয়া লড়াই করিতে প্রস্তুত হইল । ১৬৮১ খৃষ্টাব্দে সম্রাট হিন্দুস্থান হইতে শেষ বিদায় লইয়। দক্ষিণাত্য বিজয়ে চলিলেন । চোরাবালিতে পড়িয়া উঠিবার করিলে লোকের ষে অবস্থা ঔরঙ্গজেবেরও ঠিক সেই অবস্থা হইল । মারাঠা, আদিল শাহ ও কুতবা শাহর সহিত যুদ্ধ-বিগ্রহে তিনি এতই ব্যস্ত রহিলেন যে, ছত্রসালের বিরুদ্ধে কোন বৃহৎ অভিধান পাঠাইবার স্তবিধ পাইলেন না। পূৰ্ব্ববং মালবের ফৌজদার তাহাকে বাধা দিবার কথঞ্চিং চেষ্টা করিতে লাগিল । শের অফ কন খা নামক রানোডের ফৌজদার ছত্রসালকে ১৬৯৯ এবং ১৭০০ খৃষ্টাব্দে দুইবার সম্মুখ-যুদ্ধে \ છ વbr সহায়তা (52. ३%, প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড পরাস্ত করেন এবং গাগরেণ পরগণ অধিকার করেন গৃহভেদই বোধ হয় ছত্রসালের পরাজয়ের কারণ এ সময় ছত্রমুকট বুন্দেল নামক সর্দার তাহার দল ছাড়িয়। মোগলদের সঙ্গে যোগ দেন । ছত্রসাল সাময়িক ভাগ্য-বিপৰ্য্যয়ে নিরুৎসাহ হইলেন না ১৭০১ খৃষ্টাবে ধামোনীর ফৌজদার পায়ের আন্দেশ ? কালিঞ্জর দুর্গ অবরোধ করিয়া ব্যর্থমনোরথ হইলেন এই সময়ে গন্দোয়ানায় দেবগড়ের রাজ বপত বুলন গন্দ বিদ্রোহী হওয়ায় ছত্রসালের শক্তি আরও বাড়িয় গেল। ১৭০৩ খৃষ্টাব্দে ছত্রসাল মারাঠা-সেনাপতি নাম সিন্ধিয়াকে নৰ্ম্মদ পার হইয়া মালব আক্রমণ করিতে উৎসাহিত করেন । ১৭০৫ খৃষ্টাব্দে ঔরঙ্গজেব প্রসিদ্ধ তুরানী সেনাপতি ফিরোজ জঙ্গকে মালব ও বুন্দেলথ:ে প্রেরণ করিলেন । ফিরোজ জঙ্গ নীম। সিন্ধিয়াকে পরাজিত করিয়া বিতাড়িত করিলেন ; কিন্তু ছত্রসালেং ক্ষমতা মুদৃঢ় দেখিয় তাহার সহিত একটা আপোঠ করিবার জন্ত বাদশাহকে অতুরোধ করিলেন ৪-হাজারী মনসবদার হইয়া ফিরোজ জঙ্গের মধ্যস্থতায় ঔরঙ্গজেবের সহিত দেখা করিতে গেলেন । মনসবে লোভে তিনি বশ্রাতা করেন নাই ; ৩৩ বৎসর যুদ্ধের পর কিছুদিনের জন্ত শান্তিলাভ তাহার পথে নিতাস্ত প্রয়োজনীয় হইয়াছিল। ছত্রসাল বুঝিয়াছিলেন, মোগল-সাম্রাজ্যের নাভিশ্বাস উপস্থিত হইয়াছে এবং সম্রাটের জীবন-প্রদীপও নিৰ্ব্বাণোন্মুখ ; সুতরাং ভাব সঞ্জার্ম ও বিপ্লবের জন্য বলসঞ্চয় আবশ্বাক । শিবাজী, শস্তুজী, রাজারাম মরিলেন, শাহু ধুত্ব হইল, সাতারা পান্‌হাল সিংহগড়ে মোগলের বিজয় পতাকা উড়িল, মহারাষ্ট্রভূমি তৃণবৃক্ষশূন্য শবাস্থি-শুশ শ্মশানে পরিণত হইল ; তবুও মারাঠা জাতি মরিল না বরং তাহার এখন বৃদ্ধ সম্রাটুকে জগতের অন্নদাতা জ্ঞান করিয়া উহার দীর্ঘ জীবন কামনা করিতে লাগিল, এবং প্রতি সপ্তাহে বাদশাহী রাজ্য লুটের কিয়দংশ তাহা মঙ্গলার্থ মিষ্টান্ন বিতরণ ও কাঙ্গালী-ভোজনে ব্যয় করিত। কেন-ন লুটের বাজার যখন একটু নরম পড়িয়াছিল, তখন তিনি বিজাপুর ও গোলকুণ্ড ধ্বংস করিয়া তাহদের স্বীকার