পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సె ఈ কাপড়, ইত্যাদি। আমি নিজে দুখীন কাপড়ের উপরে অীক পট কিনলুম। এরা যখন এদের জিনিস-পত্ৰ আমাদের দেখাবার জন্য ভূইয়ের উপর সাজিয়ে রেখে বসেছিল, তখন একটা জিনিস লক্ষ্য করলুম,—আমাদের ডচ বন্ধুর কোনও কিছু জিনিস দেখিয়ে তার দর জিজ্ঞাসা করবার কালে পা দিয়ে জিনিসটা দেখাচ্ছিল – এটার দাম কত, ওটার দাম কত । আমরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে সামনে উপবিষ্ট এই পসারিণীদের সঙ্গে কথা কইছিলুম-মাটীতে রাখা কোন কিছু হাত দিয়ে দেখাতে গেলে ঝুকে নীচু হ’য়ে দেখাতে হয়, পা দিয়ে দেখানোতে আর ঝুঁকতে হ’চ্ছিল না । আমার কিন্তু এই ধরণটা মোটেই ভালো লাগ ছিল না, বরঞ্চ অত্যন্ত পীড়া দিচ্ছিল। যার বিক্ৰী ক’রতে এসেছে, এতে ক’রে তাদের প্রতি তো একটা অবজ্ঞা আর অশিষ্টত প্রকাশ করা হ’চ্ছিল-ই ; তবে তারা স্থানীয় অশিক্ষিত ব| গরীব শ্রেণীর ‘নেটিভ স্ত্রীলোক মাত্র, তাদের সম্বন্ধে অতটা চিন্তা করার দরকার ছিল না ; কিন্তু কুন্দর শিল্প দ্রব্যগুলি, যেগুলি পরম পদার্থ ব’লে কিনে নিয়ে যাবার জন্য সকলেই ব্যগ্র, সেইগুলির প্রতি ; আর যে শিল্পী বা রূপকারের জিনিসগুলি বানিয়েছে, তার সাক্ষাৎ উপস্থিত না থাকূলেও তাদের হাতের কাজ জিনিসগুলি যেন তাদের প্রতিভূ হ’য়ে আমাদের সামনে বিদ্যমান,--তাদেরও প্রতি যেন অশ্রদ্ধা আর অপমান প্রদর্শন করা হ’চ্ছিল, এইরূপে পা দিয়ে জিনিস দেখানোর স্বারা । এই প্রসঙ্গে আমার তখনি একটী ঘটনার কথা মনে হ’ল, তাতে এসব বিষয়ে একটা etiquette বা ভব্যতা শেখানোর যে দরকার অাছে তা বেশ প্রতীয়মান হবে। বিলেতে অবস্থান কালে, লগুনে আমার প্রেসিডেন্সী কলেজের অধ্যাপক পূজ্যপাদ শ্ৰীযুক্ত এইচ এম পার্সিভাল মহোদয়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে সাক্ষাৎ করতে যে তুম । শ্ৰীযুক্ত পার্সিভাল সাহেব তখন অধ্যাপনা কাৰ্য্য থেকে অবসর গ্রহণ ক’রেছেন বছর দশেক পূৰ্ব্বে, লগুন প্রবাসী হ’য়ে আছেন। তার শেষ ছাত্রদলের মধ্যে অন্যতম ছিলুম আমি, আর তার বিশেষ স্নেহ লাভের সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। পার্সিভাল প্রবাসী-কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড সাহেব আমাদের বাঙলা দেশেরই লোক, ফিরিঙ্গিজাতীয়। নানা বিষয়ে আলাপ করে এর কাছে প্রচুর শিক্ষা আর আনন্দ লাভ ক’রতুম। একদিন সাহেবের ঘরে ব’সে র্তার সঙ্গে কথা কইছি। তাকে একখানি বই এগিয়ে দেওয়ার দরকার হ’ল । বেখানে আমি ব’সেছিলুম, সেখান থেকে তাকে বইখানি দিতে গেলে আমার বা হাতে ক’রে বইখানি নিয়ে বা হাতে ক’রেই দেওয়া সুবিধের ছিল, কিন্তু অভ্যাস-মতন বা হাতে বই খানি তুলে নিয়ে, তাকে দেবার সময়ে উঠে দাড়িয়ে একটু ঝুকে ডান হাতে ক’রে ধীরে বইখানি এগিয়ে দিলুম। তিনি এবিষয় চুপ করে লক্ষ্য করলেন ; বলা বাহুল্য, আমার কিছুই মনে হয় নি। এর খানিক পরে একখান। বাজে কাগজ ফেলে দেবার দরকার ছিল, কাগজট নিয়ে মুঠোয় ক’রে কুণ্ডলী পাকিয়ে, ঘরের ভিতরে অগ্নিকুণ্ডে আগুন জ’লছিল সেই আগুনের দিকে তাগ ক’রে ছুড়ে ফেলে দিলুম, কিন্তু কাগজের কুণ্ডলীট। ঠিক আগুনের মধ্যে গিয়ে প’ড়ল না, অগ্নিকুণ্ডের লোহার রেলিং-এ লেগে ঠিকৃরে ফিরে এসে আমার পায়ে কাছে প’ড়ল । সেইখান থেকে পায়ের লাথি দিয়ে ছুড়ে দিলেই ওটা আগুনে গিয়ে প’ড়ত, তা ন ক’রে অভ্যাস-মতন ডান হাতে ক’রে পাকানো কাগজটা তুলে নিয়ে তার পরে উঠে একটু এগিয়ে গিয়ে হাতে ক’রেই আগুনে ছুড়ে ফেলে দিলুম, এবার আগুনে ঠিক প’ড়ল । পার্সিভাল সাহেব এটাও লক্ষ্য করলেন । তার পরে তিনি হঠাৎ উঠে দাড়িয়ে আমায় ব’ললেন—বেশ একটু বিচলিত না হ’লে তিনি এরকম দাড়িয়ে উঠতেন না— “দেখ সুনীতি, আমাদের দেশের সভ্যতার প্রকৃতি অনুসারে অনেক পুরুষের শিক্ষা আর সদাচারের ফলে সাধারণ ভব্যত বা শালীনতা সম্বন্ধে যে-সব ধারণা গড়ে উঠেছে, সেগুলি অতি সুন্দর, যে কোনো দেশের etiquette বা ভদ্র রীতির চেয়ে সেগুলি খারাপ নয় - সেগুলিকে প্রাণপণে বজায় রাখবার চেষ্টা ক’রবে ; আমাদের সভ্যতার, দুনিয়ার আর মানুষের সম্বন্ধে আমাদের attitude বা মনোভাবের পরিচায়ক হচ্ছে আমাদের এই-সব বাহ চাল-চলন, ধরণ-ধারণ। এই যে তুমি বইখানি