পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ম সংখ্যা ] AMAMAMAMAMAAASAAAA হইতে তাহার খাওয়া দেখিতেছেন। একবার মুখ তুলিয়া চাহিয়া দেখিতে তিনি সরিয়া আসিলেন। খুব সুন্দরী মহিলা, তাহার মায়ের অপেক্ষ বয়স অনেক—অনেক কম। তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন—তোমার বাড়ী কোথায় ? অপু ঘাড় না তুলিয়া বলিল—মনসাপোতা—অনেক দূর এথেন থেকে— —বাড়ীতে কে কে আছেন ? —শুধু মা আছেন, আর কেউ না । —তোমার বাবা বুঝি—ভাইবোন ক’টি তোমরা ? —এখন আমি একা—আমার দিদি ছিল—সে সাত আট বছর হ’ল মারা গিয়েচে— কোনো রকমে তাড়াতাড়ি পাওয়া সারিয়া সে উঠিয়। আসিল । শীতকালেও সে যেন ঘামিয়া উঠিয়াছে ! পরদিন সকালে অপু বাড়ীর ভিতর হইতে খাইয়া আসিয়া দেখিল বছর তেরো বয়সের একটি সুন্দরী মেয়ে ছোট একটি খোকার হাত ধরিয়া বাহিরের ঘরে দাড়াইয়া আছে। অপু বুঝিল সে কাল রাত্রের পরিচিত মহিলাটির মেয়ে। অপু আপন মনে বই গুছাইয়া স্কুলে যাইবার জন্য প্রস্তুত হইতে লাগিল, মেয়েটি একদৃষ্টে চাহিয়া দেখিতেছিল। হঠাৎ অপুর ইচ্ছা হইল, এ মেয়েটির সামনে কিছু পৌরুষ দেখাইবে—কেই তাহাকে বলিয়া দেয় নাই, শিখায় নাই, আপন আপনি তাহার মনে হইল। হাতের কাছে অন্য কিছু না পাইয়া সে নিজের অঙ্কের ইন্‌ষ্ট্রমেন্ট বক্সটা বিন কারণে খুলিয়। প্রোটেক্টর, সেটুস্কোয়ার, কম্পাসগুলোকে বিছানার উপর ছড়াইয়া ফেলিয়া পুনরায় সেগুলা বাক্সে সাজাইতে লাগিল। কি জানি কেন অপুর মনে হইল এই ব্যাপারেই তাহার চরম পৌরুষ দেখান হইবে । মেয়েটি দাড়াইয়া দেখিতে লাগিল, কোনো কথা বলিল না। কেহই কোনো কথা বলিল না । আলাপ হইল সেদিন সন্ধ্যায়। সে স্কুল হইতে আসিয়া সবে দাড়াইয়াছে, মেয়েটি আসিয়া লাজুক চোখে বলিল—আপনাকে মা খাবার খেতে ডাকচেন আসন পাত,—পরোটা বেগুন ভাজা, আলু চচ্চড়ি, অপরাজিত Գ:Տ -- চিনি। অপু চিনি পছন্দ করে না, গুড়ের মত জিনিস নাই, কেন যে ইহার এমন সুন্দর গরম গরম পরোটা চিনি দিয়া খায় ?••• মেয়েটি কাছে দাড়াইয়াছিল। বলিল-মাকে বলব, আর দিতে ?. —না ; তোমরা চিনি খাও কেন ? গুড় তো ভাল— মেয়েটি বিষ্মিতমুখে বলিল-কেন, আপনি চিনি খান ন। ?... —ভালবাসিনে–রুগীর খাবার-খেজুরের গুড়ের মত কি আর খেতে ভাল ?...মেয়েটির সামনে তাহার আদৌ লাজুকত ছিল না, কিন্তু এই সময়ে মহিলাটি ঘবে ঢোকাতে অপুর লম্বা লম্বা কথা বন্ধ হইয়া গেল । মহিলাটি বলিলেন –ওকে দাদা বলে ডাকৃবি নিৰ্ম্মল, কাছে বসে খাওয়াতে হবে রোজ ! ও দেখছি যে রকম লাজুক, এ পর্য্যন্ত তো আমার সঙ্গে একটা কথাও বল্পে না—না দেখলে ও আধ-পেট থেয়ে উঠে যাবে। অপু লজ্জিত হইল। মনে মনে ভাবিল ইহাকে সে মা বলিয়৷ ডাকিবে। কিন্তু লজ্জায় পারিল না, সুযোগ কোথায় ?.এমনি খামক মা বলিয়া ডাক—সে বড়— সে তাহ পারিবে না। মাস খানেক ইহাদের বাড়ী থাকিতে থাকিতে অপুর কতকগুলি নতুন বিষয়ে জ্ঞান হইল। সবাই ভারী পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, আটপৌরে পোষাক পরিচ্ছদও স্বদৃশ্ব ও মুরুচিসম্মত। মেয়েদের শাড়ী পরিবার ধরণটি বেশ লাগে, একে সবাই দেখিতে স্বত্র, তাহার উপর স্বদ্ৰষ্ঠ শাড়ী সেমিজে আরও স্বন্দর দেখায়। এই জিনিষটা অপু কখনও জানিত না, বড়লোকের বাড়ী থাকিবার সময়ও নহে, কারণ সেখানে ঐশ্বৰ্য্যের আড়ম্বরে তাহার অনভ্যস্ত চক্ষু ধণধিয়া গিয়াছিল—সহজ গৃহস্থ জীবনের দৈনন্দিন ব্যাপারের পর্য্যায়ে তাহাকে সে ফেলিতে পারে নাই । • অপু যে সমাজে, যে আবহাওয়ায় মানুষ—সেখানকার কেহ এ ধরণের সহজ সৌন্দৰ্য্যময় জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত নয়। নানা জায়গায় বেড়াইয়া নানা ধরণের