পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سرا ذخ প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড স্বামী-বিহীন জীবন হয়ত তিনি কল্পনাও করিতে পারিতেন না। প্রেম মৃত্যুঞ্জয়ী বলিয়া শোনা যায়, কিন্তু সত্যই মৃত্যুকে জয় করিবার ক্ষমত মানুষের ভালবাসার আছে কি ? চিরদিনের মত যে চোখের আড়াল হইয়া গেল, জীবনের বিচিত্র লীলার মধ্যে কোথাও যাহার সঙ্গে যোগস্থাপনের সম্ভাবনা রহিল না, তাহাকে মনের মধ্যে কতক্ষণ মানুষ ধরিয়া রাখিতে পারে ? তাহার বিয়োগে যে দারুণ শূন্ততার স্বষ্টি হয়, নিজের অজ্ঞাতে কখন তাহ আবার পূর্ণ হইয় ওঠে, মানুষ জানিতেও পারে না। মায়ার মুখের দিকে চাহিয়া তাহার জ্যাঠাইমা বোধ হয় বুঝিতে পারিয়াছিলেন যে, সে কি চিন্তা করিতেছে। একটু মান হাসি হাসিয়া বলিলেন, “আমার দশা দেখে মুখ কাল করছিস্ মা ? ঘরে ঘরেই ত এই। তোর সব মুখে থাকৃ, তোদের দেখে মরতে পারলেই আমাদের ঢের। অজয়ট কেমন আছে ? একথানা চিঠিও কি দিতে পারে না ?” মায়া বলিল, “তার কথা আর বোলো না জ্যাঠাইমা । বলে বলে হায়রান হয়ে যাই, ছেলের কানেই ওঠে না কথা। বলে রোজ নাইছি, খাচ্ছি, ঘুমচ্ছি, এ আর কত লিখব ? অজয়ের মা বলিলেন, “নিজে ছেলের বাপ হলে তবে বুঝতে পারবে, তার আগে আর পারবে না। সস্তান ভাল আছে এই খবরটুকু জানবার জন্যেই যে মা-বাপের প্রাণ কত ছট্‌ফটু করে, তা আর বলে কি বোঝাব ? শরীর কেমন তার ?” মায়া চুলের কাটা খুলিতে খুলিতে বলিল, “শরীর ত বেশ ভালই দেখি, অসুখবিসুখ একদিনও হয়নি। এখানকার চেয়ে মোটা হয়েছে খানিকটা । আচ্ছা জ্যাঠাইমা, জয়ন্তীর শ্বশুরবাড়ী এখান থেকে কত দূর ? তোমার কাছে আসে না ?” জ্যাঠাইমা বলিলেন, “বেশী আসতে আর পারে কই ? শাশুড়ীটা বড় দঙ্গাল, সারাক্ষণ পেছনে লেগে থাকে। তার উপর কোলে কচিমেয়ে । তোর পিসীর অমুখ শুনে একদিন এসেছিল, আজ তুই আস্বি বলে ত খবর পাঠিয়েছি, দেখি আসে কি না। ত্ত্বোদের দেখে সত্যি হিংসে হয়, বেশ আছিস বাছা । মেয়েগুলোর বিয়ে দিয়ে শুধু শুধু ভোগ বাড়ান। তখন যদি পড়াতে পারতাম, তাহলে এত তাড়াতাড়ি বিয়ে দেবার কোনো দরকার হত না । তা ওঁর মত হল কই ?” স্নানাহার করিতে অনেক সময় কাটিয়া গেল । তাহার পর মায়া গিয়া ইন্দুর ঘরে বসিল। তাহার তখন একটু তন্দ্রার মত আসিয়াছে, পাশে বসিয়া একজন ঝি তাহাকে বাতাস করিতেছে। মায়া ঝিটাকে উঠিয়া যাইতে ইঙ্গিত করিয়া, নিজে পাখা হাতে করিয়া বসিল । খানিক পরে চোখ খুলিয়া মায়াকে দেখিয়া, ইন্দু একটু হাসিয়া বলিল, “কতক্ষণ বসে আছিস্ ?” মায়া বলিল, “এই মিনিট পাচ হবে বড়-জোর। আজ তুমি কেমন আছ পিসীমা ?” ইন্দু বলিল, “একই রকম ত লাগে। এখানে এসে প্রথম কয়েক দিন বড় বাড়াবাড়ি হয়েছিল, এ যাত্রা টিকব বলে কেউ আর ভাবেনি। যাক, না টিকলেই বা কি ? মেজদা কোথায় ?” মায়া বলিল, “খেয়ে-দেয়ে ছোটকাকার সঙ্গে কথা বলছেন। এখনি আসবেন তোমার কাছে। ভালর দিকে যখন যাচ্ছে, তখন নিশ্চয়ই সেরে উঠবে। কিই বা তোমার বয়েস যে এখনি টিকবে না ?” ইন্দু বলিল, “বয়েসে কি এসে যায় রে ? তোর মায়ের কত বয়েস হয়েছিল ? দাদারই বা কি এমন বয়েস হয়েছিল ? যার যখন ডাক পড়ে।” মায়া বলিল, “ও সব কথা রাখ এখন, তাড়াতাড়ি করে সেরে ওঠ, তোমার সঙ্গে আমার ঢের পরামর্শ আছে । একবার গ্রামে যেতে হবে, সেখানে মেলা কাজ।” * ইন্দু হাসিয়া বলিল, “গ্রামে আবার তোর কি কাজ ? তা কাজ থাক বা নাই থাক, চল একবার। সবাই তোকে দেখতে কত ব্যস্ত, দেখলে খুব খুসি হবে।” মায়া বলিল, “আমি আর এমন একটা কি আজব চিজ যে সবাই আমাকে দেখতে এত ব্যস্ত ? দেখেছে उ cछब्रई ।” * ইন্দু বলিল, “তুই কি আর সেই আগের মানুষ