পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Yvbe ( ૨૬ ) সপ্তাহখানেক কাটিয়া গিয়াছে। ইন্দু অল্পে অল্পে পারিয়া উঠিতেছিল । তবে এখনও নাড়ানাড়ি করিবার মত অবস্থা হয় নাই। নিরঞ্জনের পক্ষে আর বেশীদিন কাজকৰ্ম্ম ফেলিয়া বলিয়া থাকা কঠিন হইয়া উঠিতেছিল। মায়াকে রাখিয়া তিনি চলিয়া যাইতে পারেন, কিন্তু তাহাকে আবার পরে লইয়া যাইবে কে ? আবার ইন্দু ভাল করিয়া সারিয়া উঠিবার আগেই যে যার নিজের পথে চলিয়া যাওয়া ভাল দেখায় না । গ্রামে আর তাহাকে রাখিবার ইচ্ছা নিরঞ্জনের নাই। রেজুনে যদি সে নিতান্তই না যাইতে চায়, তাহা হইলে কলিকাতায় তাহার থাকিবার ব্যবস্থা করিতে হইবে । দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর সকলে মিলিয়া কথা হইতেছিল। মায়ার জ্যাঠাইমা বলিতেছিলেন, “এরই মধ্যে কি আর যাওয়া হয় ? কতদিন পরে বলে এলে । ঠাকুরপো না থাকতে পার, মায়াকে রেখে যাও। ঠাকুরঝি ভাল করে সেরে উঠক, তারপর ও যাবে এখন। তোমরা আসার পর থেকেই দেখছ না কেমন তাড়াতাড়ি সেরে উঠছে ?” - নিরঞ্জন বলিলেন, “ত যেন রেখে গেলাম, এরপর ও যাবে কার সঙ্গে ?” তাহার বৌদিদি বলিলেন, “ও মা, নিয়ে যাবার লোকের আবার ভাবনা । ছোটঠাকুরপোই নিয়ে যেতে পারে। বিজুও বৰ্ম্ম দেখবার জন্যে নাচছে কতদিন থেকে ৷” মায়া বলিল, “তাই দিনকয়েক থাকি না হয় বাবা । কেউ না নিয়ে গেলেই বা কি ? জাহাজে একলা যেতে কিছু মূলি নেই।” এখনি চলিয়া গেলে তাহার গ্রামে যাওয়া বা আর কিছু করা ঘটয়া উঠিবে না । প্রবাসী—বৈশাখ, OLLණු [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড নিরঞ্জন বলিলেন, “তা ঠিক। তবে একলা যাবার দরকার হবে না। আমি গেলেই শিবচরণ আসবে, ছেলেকে receive করতে, তাদের সঙ্গেই যেতে পারবে ।” বাণীর ভবিষ্যদ্বাণী স্মরণ করিয়া মায়ার হাসি পাইল । জোগাড় হইয়া উঠিতেছে সেই রকমই বটে। দেবকুমারের সঙ্গে একত্রে রেজুনে গিয়া নামিলে তাহার সঙ্গিনীরা আর রক্ষ রাখিবে না। তাহার হাড় জালাতন করিয়া খাইবে । মায়ার জ্যাঠাইমা বলিলেন, “জয়ন্তী ত ক’দিন এসে থাকবার জন্তে অস্থির হয়ে উঠেছে । মায়ার সঙ্গে একটু সেদিন ভাল করে কথাও বলতে পারল না। আমি ত বললে বেয়ান-ঠাকুরুণ কথা কানেই নেননা। ঠাকুরপো যদি বেহাইকে একখানা চিঠি লিথে গাড়ী পাঠিয়ে দাও, তাহলে এখনি মেয়েট আসতে পায় । তোমায় তারা খুব খাতির করে।” নিরঞ্জন হাসিয়া বলিলেন, “আচ্ছ, তা না হয় দিচ্ছি। আমার কথা ত তখন তোমরা কেউ শুনলে না, এখন দেখ ছ ত মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কত স্বগ ?” জয়ন্তীর মা বলিলেন, “বিয়ে না দিয়েই বা করি কি ভাই ? তোমার মেয়ের মত শিক্ষা দিতে পারতাম ত বিয়ে না দেওয়া চলত। এদিকও না ওদিকও না, শুধু শুধু বসিয়ে রেখে লাভ কি ?” নিরঞ্জন বলিলেন, “ধাক্, যা হয়ে গেছে তা হয়েই গেছে। . এখন জামাই বাবাজী যদি রোজগার করতে পারেন ভাল করে তবেই । নইলে ছেলেপিলে নিয়ে চিরকাল কষ্ট পাবে।” ক্রমশঃ