পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাওতালী নৃত্য—জীরমেন্দ্রনাথ চক্রবত্তী যুধিষ্টরের ধ্যান, অন্ত ভ্রাতৃগণের মানসিক অবসাদ ও নৈরাঙ্গ, দ্রৌপদীর উৎকণ্ঠা, দুর্গম পথে পঞ্চপাণ্ডবের স্থিরলক্ষ্যভাবে, যাত্রা, দ্রৌপদীর পতন এবং সৰ্ব্বশেষে সারমেয় ও যুধিষ্ঠিরের দূরে বিলীন হওয়া ; হিমালয়ের অভ্রলেহী চূড়া মণ্ডিত ভীষণ তুষার মরু এবং সম্মুখে বিরাট অতিপ্রাচীন দেবদারুরূপ জীবিতজগতের শেষ পরিচয়, এই সকল স্বম্পষ্টভাবে জীবন্ত চিত্রে পরিণত করা— নন্দলালেরই পক্ষে সম্ভব। চিত্রের প্রথা জাপানী হইতে পারে, কিন্তু ইহার প্রত্যেক রেখায় প্রাচীন ভারতের পৌরুষ ও দৃঢ়সঙ্কল্পের ভাব জাগ্রত রহিয়াছে। আর্ট স্কুল প্রদর্শনীর অন্যান্য চিত্রাবলীর মধ্যে ঐযুক্ত যামিনী রায়ের ‘বাণী ইজিপ্টের চিত্রের কথা স্মরণ করাইয়া দেয়, কিন্তু ইহার রচনা এদেশের রীতি অন্তৰ্যায়ী। শ্ৰীযুক্ত রমেন্দ্র চক্ৰবৰ্ত্তীর কাঠখোদন প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড পদ্ধতির চিত্রাঙ্কণ ক্রমেই খ্যাতি লাভ করিতেছে। এই প্রদর্শনীতে , তাহার কলাকৌশলের নিদর্শন কয়েকটি ছিল, যথা, “সাওতালী নৃত্য” । শাস্তিনিকেতন কলাভবনের ছাত্র শ্ৰীযুক্ত সোভাগমল গেহলোট অঙ্কিত “নীড়রাজি’ স্বন্দর চিত্র। শ্ৰীযুক্ত রেণু রায়ের “বীর হনুমান” চিত্র তাহার পরিকল্পনা ও রচনার নূতনত্বের পরিচায়ক। শ্ৰীযুক্ত ইন্দু রক্ষিতের “রেলের কামরার আর এক ধার”-ও ঐ হিসাবে প্রশংসনীয়। যে-সকল, চিত্রের উল্লেখ করা হইল তাহা হইতে ইহাও সুস্পষ্ট যে নূতন পদ্ধতিই এই বৎসরের চিত্রাবলীর রেলের কামরার আর এক ধার-শ্ৰীইন্দু রক্ষিত একমাত্র উল্লেখযোগ্য গুণ নহে। বিষয়বৈচিত্র্যও এখানে যথেষ্ট আছে। কেবল মাত্র দুঃখের বিষয় এই যে, এদেশের প্রাচীন ঐতিহাসিক যুগ এখনও আমাদের শিল্পীদিগের মন আকৃষ্ট করিতে পারে নাই ।