পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

YSU AASAASAASAA AAAS ইহাতে সন্মতি প্রকাশ করেন। রাজপুতের নিকট মুসলমানকে কন্যাদান মৃত্যুতুল্য অপমানজনক ; তবে রাঠোর এবং কচ্ছবাহের এ অপমান কতকটা সহিয়া গিয়াছিল ; তাই মিবারের কবি আক্ষেপ করিয়া বলিতেছেন, “কলি যুগ প্রমাণ কবি মান কহি কমধজ কচ্ছবাহা কুমতি”, অর্থাৎ কলিযুগে অনাচারের প্রমাণ কুমতি রাঠোর ও ও কচ্ছবাহ । এই ঘৃণ্যপ্রস্তাবে ভ্রাতা সম্মতি প্রকাশ করিয়াছেন জানিয়া রূপকুমারী অন্নজল ত্যাগ করিলেন। রাজপুতবালিকার দুঃখ ও অভিমান কবি সুন্দরভাবে বর্ণনা করিয়াছেন ; নিম্নে কবিতার কয়েক ছত্র উদ্ধৃত করা গেল । করুণা-করতে ইহ বিধি করা, অব অাকুর-গেহ তিয়া অমরী। গুরু সংকট তে মুহি কোন গইে, কুননস্তি সৰ্থীজন মংঝ কহে ॥ গিরি শৃঙ্গ উতংগনি তে য়ু গিরু কুল কজ্জ হলাহল পান করু ॥ জরতে ঝর পাবক-কুন্ত জরু , - বরিইো সুর আস্থর হে1ন বরু ॥ জিন অনিন রূপ লংগুর জিসে, পল সৰ্ব্ব ভথে সুর সে। যুগ সে। করুণাময় ! তোমার কি বিধান ! অমরী এখন অস্থরগৃহে বন্দিনী ; আমায় এ ঘোর সঙ্কট হইতে কে উদ্ধার করিবে ? কুমারী সথিজনমধ্যে এরূপ বিলাপ করিতে লাগিলেন। উত্তর গিরিশৃঙ্গ হইতে লম্ফ প্রদান কৰিব ; কুল-কাৰ্য্য হলাহল পান করিব, জলস্ত অগ্নিকুণ্ডে ঝাপ দিব, তবুও অস্বরকে আত্মদান করিব না,—স্বরকেই বরণ করিব । যাহার মুখাকৃতি বাদরের ন্যায়, যে সৰ্ব্ব-মাংস ভক্ষণকারী, সে কি স্বরস্ত্রীর যোগ্য হইতে পারে ? রূপকুমারী মহারাণ। রাজসিংহের কাছে এক বিনয়পত্রিকা প্রেরণ করিলেন, ভূমি ও স্ত্রী ভাগ্যক্রমেই মিলে ; গৃহাভিমুখী লক্ষ্মীকে কে উপেক্ষা করে ? (মহি মানিনী জানি দসারু মিলে ; ঘর আবত লচ্ছিয় কোন ঠিলে ) ; শিশোদিয়া কুলের শরণার্থিনী রাঠোর-দুহিতাকে উদ্ধার করিবার জন্য তিনি চিতোর হইতে সসৈন্ত রূপনগর যাত্রা করিলেন । মহারাণ স্বয়ং উপযাচক হইয়ু, তাহার ভগ্নীকে গ্রহণ করিতে আসিয়াছেন , তাহাকে কন্যাদান না করিম। ঔরঙ্গজেবকে দিবে—এরূপ ভয় ও নীচতা কোনো রাজ প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড পুতের থাকিতে পারে না। রূপনগরবাসী মিবার-বাহিনীকে বরযাত্রীভাবে সংবৰ্দ্ধনা করিল ; বিবাহান্তে মানসিংহ বহুমূল্য যৌতুকসহ রূপকুমারীকে মহারাণার সঙ্গে উদয়পুরে প্রেরণ করিলেন। রূপনগরে কোন মোগলসৈন্যের উপস্থিতি কিংবা তাহাদের সহিত মহারাণার সংঘর্ষের কথা রাজবিলাসের এ অধ্যায়ে নাই। নবপরিণীতা রাণীর রক্ষার্থ মিবারের রক্ত-পতাকাতলে শিশোদিয়াসামস্তমণ্ডলীর যুদ্ধোদ্যম, ইত্যাদি যাহা আমরা টডের রাজস্থানে পড়িয়াছি তাহা সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্ত। এই বিবাহের অন্ততঃ আঠার-উনিশ বৎসর পরে ঔরঙ্গজেবের সহিত মহারাণার বিবাদের সূচনা হইয়াছিল। ১৬৫৪ খৃষ্টাব্দের অভিজ্ঞতার পর মহারাণ রাজসিংহ সম্রাট শাহজাহানের সহিত আর বিবাদ করিতে সাহসী হন নাই। দিল্লীশ্বর শাহজাহানের এক ভুজ ছিল দারা শুকো, অন্য ভুজ ঔরঙ্গজেব ; ভ্রাতৃদ্বয় যেন তাহার দ্বিমুৰ্ত্তি ; তাহারই চরিত্র-চিত্রের আলো ও ছায় । জীবনের অপরাহ্লে যখন র্তাহার জরাকম্পিত হস্ত রাজদণ্ডধারণে অক্ষম হইয়া পড়িতেছিল, তাহার পুত্রত্ৰয় দারার সৌভাগ্যে ঈর্ষাপ্রজলিত হইয়া অসিবলে ভাগ্যপরীক্ষায় বদ্ধপরিকর হইলেন। দারা জীবনের অধিকাংশ ভাগ হিন্দুদর্শন আলোচনায় এবং হিন্দু পণ্ডিত ও সন্ন্যাসীর সাহচর্য্যে কাটাইয়াছিলেন। তিনি তাহার প্রপিতামহের মত উদারচরিত্র, পরমত-সহিষ্ণু ছিলেন ; এবং বিপন্ন হিন্দুর পক্ষে যেন বিধাতার আশীৰ্ব্বাদ । ঔরঙ্গজেব সৰ্ব্ববিষয়ে ইহার বিপরীত ; শরিয়তের চাকে ইনি নিখুৎ মৌলামা-মডেলে তৈয়ারী। তিনি সবুলবিশ্বাসী মুসলমান, যুক্তিতর্ক বিচারের অধিকার তিনি দাবী করিতেন না ; তাহার ছায়-অন্যায়ের মাপকাঠি ছিল কোরাণ হদিস । নবী ও র্তাহার পরবর্তী পুণ্যশ্লোক খলিফ চতুষ্টয়ের অনুস্থত পথ অবলম্বন করিয়া মোগল-সাম্রাজ্যকে খাটি খিলাফতে পরিণত করাই ছিল তাহার জীবনের মোহন স্বপ্ন । ঔরঙ্গজেবের মত চরিত্র সৰ্ব্বদেশে সৰ্ব্বকালে গোড়া সমাজ কর্তৃক আদর্শভাবে পূজিত হইয়া থাকে ; মুসলমান হইয়া তিনি হিন্দুর মন্দির ধ্বংস করিয়াছেন ; হিন্দু হইলে তিনি ভবভূতির রামচন্দ্রের মত শূদ্রতপস্বীর মাথা কাটিতেন