পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] মরুচারিণী ఫ్చిరి రి মধ্যে সহরে আসিয়া তাহার সাংঘাতিক পীড়া হইয়া গেছে। মৃন্ময়ী তাহাকে খুব সাবধানে রাথিয়াছেন। নিত্য নিয়মিত পথ্য ছাড়া আর কিছুই ইচ্ছামত নীরদ খাইতে পাইত না । কিন্তু পেয়ারায় বিশেষ নিষেধ ছিল না। নিষেধ না থাকিলেও পেয়ারা পাড়িয়া দিবে কে ? সমস্তার সমাধান হইয়া গেল। হিরণ বোধ হয় বাজার করিতে গিয়াছিল । বাড়ী প্রবেশ করিতেই দেখিল, নীরদ পেয়ারা গাছের তলে একান্তমনে উপরের ডালের দিকে চাহিয়া দাড়াইয়া আছে। অাস্তে আস্তে তরি-তরকারী-ভরা চুপড়িটি নামাইয়া পা টিপিয়া টিপিয়৷ আসিয়া নীরদের পিছনে দাড়াইল । বলিল –কি গে। নীরদ বাবু, পেয়ারা খাওয়া হচ্ছে বুঝি। —হঁ্যা, হচ্ছে বৈ কি ! কি, মিথ্যা কথা বলতে শিখেছিস্ তুই- কই, কোথায় পেয়ার দেখা দেখি ! —দাড়াও, খুড়িমাকে বলে দিচ্ছি—থেয়ে ফেলে এখন চালাকি হচ্ছে ! - —বা, বেশ ত, আমি ত গাছতলায় দাড়িয়ে আছি — পেয়ার খেলাম কখন ?—মিথ্যা দোষ দেওয়ায় নীরদ ভয়ানক রাগিয়া উঠিল - একবার রাগিয়া উঠিলে তাহার মুখ দিয়া কথা বাহির হইত না। শুধু মুখটা লাল হইয়া উঠিত। নাকের ডগাটি মাঝে মাঝে র্কাপিয়া উঠিত। হিরণ তাহার উদেশ্ব সিদ্ধ হইয়াছে বুঝিয়া নীরদকে খুশী করিতে সচেষ্ট হইল। বলিল,—আহা থাক থাকৃ— আর রাগতে হবে না নীরদবাবু! পেয়ার চাই ত— আমি পেড়ে দিচ্ছি এখনই । - তাহার পর সে আঁচলখানি এক নিমেষে কোমরে জড়াইয়া লইল—দ্রুত গতিতে পেয়ার গাছের ডাল বাহিয়া ছোট কাঠবিড়ালীটির মত সৰ্ব্বোচ্চ শাখায় উঠিয়া পড়িল । মটু করিয়া একটি ডাল ভাঙিয়া পেয়ার দু'টি সংগ্ৰহ করিয়া নীচে ক্ষিপ্রগতিতে নামিয়া পড়িল। হাপাইতে ইপিাইতে পেয়ারা দু’টি নীরদের হাতে দিয়া বলিল— হয়েছে ত! এইবার খাও । নীরদ ঈপ্সিত বস্তুটি পাইয়া মহা খুশী হইয়া উঠিল। বলিল—তুই একটা নিবি নে ! — না, আমি আর নেব না ; তুমিই খাও ভাই — বলিয়া হিরণ তরকারির চুপড়িটি छूनिग्रा जहेब्र दाऊँौद्र ভিতর চলিয়া গেল । এমনি করিয়া আরও কয়েক বৎসর সহরে কাটিয়া গেল । নীরদের পড়াশুনা বেশ নিৰ্ব্বিবাদে চলিতে লাগিল । একদিন নীরদের পিতা মাধবচন্দ্র সহরের বাসায় আসিলেন। তাহার মুগে হিরণ শুনিল যে, বাড়ীতে তাহাদের মহা দুরবস্থা। হিরণের মা-ও থাটিয়া থাটিয়া শয্যা লইয়াছে। শশীও সেই অবস্থায় শয্যাশায়ী আছে। হিরণকে বাড়ী যাইতে হইবে । 峻 মাধবচন্দ্র হিরণকে কিছু টাকা দিয়া দিলেন। যাইবার সময় হিরণ বলিল—চয়াম নীরদবাবু, তুমি বিদ্বান হ’য়ে গায়ে যাবে ত ? আমি অনেক দোষ করেছি, কিছু মনে করো না ভাই ! হিরণের জন্য নীরদের বড় দুঃখ হইতে লাগিল । ঝি হইয়াও সে ঠিক ঝি ছিল না । তাহার' সঙ্গে নিত্য ঝগড়া-ঝণটির মধ্য দিয়াও এমন একটি প্রীতির সম্বন্ধ হইয়াছিল যে, তাহা ভুলিবার নহে ৷ ‘ নীরদের নিজের ভগ্নী ছিল না। স্কুলের ছুটির পর বাড়ী আসিয়া ঝগড়ঝণটি মারামারি করিয়া আবার ভাব করিতে একমাত্র হিরণ-ই ছিল তাহার সাথী ৷ মেয়েটি তাহার অপরূপ চাঞ্চল্য ও অদ্ভুত হাসি-তামাশার লীলার মধ্য দিয়া নীরদের কিশোর চিত্তে একটি আনন্দ-মুখের রেখাপাত করিয়া গিয়াছিল। তাই তাহাকে ষ্টেশনে উঠাইয়া দিয়া আসিয়৷ নীরদের চোখ দুটি ছল-ছল করিতে লাগিল। কিন্তু সে বেশীক্ষণের বা বেশী দিনের জন্য নহে। পরীক্ষা ও পড়াশুনার মোহে নীরদ সব ভুলিয়া গেল। নিবিষ্টচিত্তে বিদ্যা-সাধনায় তন্ময় হইয়া উঠিল---সাফল্য ও স্বাস্থ্যের আনন্দ-হিল্লোলের মধ্য দিয়া নীরদ কৈশোরের শেষ সোপানে আসিল । যৌবন-সুৰ্য্যের প্রথম রশ্মিরেখা তাহার জ্ঞানোজ্জল ললাটে একটি নবীন আশা-স্বপ্নের দীপ্তি আনিয়া দিল। নীরদ সে-সহর ছাড়িয়া আর এক সহরে অধ্যয়ুনের জন্ত চলিয়া গেল । চৈত্র-সন্ধ্যা। দূর-প্রসারিত মাঠখানির উপর একটি বিষয় ছায়া ধীরে ধীরে ঘনাইয়া আসিতেছে। আশে