পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૦8 প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSASAS SS SS --- ------۔--.مے--- পাশের গ্রামগুলি স্পষ্ট দেখা যায় না। কাজল-ঘন তরুবীথির উপর গোধূলি-শেষের গ্রাম-ধূমপুঞ্জ একখানি শুভ্র মেঘ-ভ্ৰান্তরণের মতো ভাসিয় বেড়াইতেছে। মাঠ তৃণহীন। পথের ধূলি পাশের উষর জমিগুলির উপর গরুর ক্ষুরে ক্ষুরে আচ্ছন্ন হইয়া রহিয়াছে। সেই ধূলি-ধূসর পথ বাহিয়া হিরণ ষ্টেশন হইতে বাড়ী চলিতেছিল। ধূলায় ধূলায় পরণের কাপড়থানি গেরুয়া রং ধারণ করিয়াছে—তাহারই উপর পশ্চিমের এক ঝলক তরল রক্তরাগ তাহার যৌবন-স্বন্দর দেহখানিকে বেষ্টন করিয়া প্রতিপদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে তাহার অপরূপ মন্থর গতিভণীকে স্বযমান্বিত করিয়া তুলিতেছিল। মাঠের পথ শেষ করিতেই স্বনিবিড় অশ্বখ-ছায়া-ণের গ্রাম-পথ । সেই পথে পা দিতেই হিরণের মনে হইল এইবার সে দেশে আসিয়াছে। দেশে আসার আনন্দের সঙ্গে সঙ্গেই তাহার মনে একটা সঙ্গীহীন নিঃসম্বল দীনতা রাত্রির বাদুড়ের মতে কালো ডান প্রসারিত করিয়া আনন্দের রেশটুকু ঢাকিয়া ফেলিল । বাড়ীতে শয্যাশায়ী মা-ভাই—প্রতিদিনের অল্প-সংস্থানের ব্যবস্থাই বোধ হয় নাই। কি করিয়া যে কি হইবে ভাবিতে ভাবিতে তাহার মন ব্যতিব্যস্ত হুইয়া উঠিল । মানসিক চঞ্চলত গতিকেও চঞ্চল করিয়া তুলিল – শ্লথ পদবিক্ষেপ দ্রুত হইল। হিরণ প্রায় বাড়ীর কাছাকাছি আসিয়া পড়িল । সেখানে কতকগুলি পাতিলেবুর গাছ এক সঙ্গে বাড়িয়া উঠিয়া প্রায় পথের উপর শাখা প্রসারিত করিয়া দিয়াছে। . হিরণ দেখিল, সেই গাছগুলির নীচে ঢালু জমির উপর দুই-তিনজন লোক বসিয়া বসিয়া তামাকু সেবন ও গল্প করিতেছে । হিরণকে আসিতে দেখিয়া একজন উঠিয়া দাড়াইল । গাছের তল হইতে গুড়ি মারিয়া বাহিরে আসিয়া একেবারে হিরণের সম্মুখে দাড়াইল। তীক্ষ দৃষ্টিতে হিরণকে আপাদমস্তক দেখিতে দেখিতে লোকটি বলিয়া উঠিল—আরে, এ যে হিরণ—সহর থেকে এলে ? ভালো ছিলে ত ? ● হিরণ তাহার কোনো কথার উত্তর না দিয়া আরও দ্রুতগতিতে বাড়ীর দিকে চলিয়া গেল। লোকটি তাহার সঙ্গীদের কাছে ফিরিয়া গেলে, একব্যক্তি বলিল,—জারে যতন, ও যে তোর কোনো কথারই উত্তর দিলে না— সহরে থেকে কি রকম দেমাক বেড়েছে দেখেছিস । যতনচন্দ্র কোনো কথা বলিল না। গম্ভীরভাবে হাত বাড়াইয়া হু কাটি লইয়া তামাক টানিতে লাগিল । হিরণ তাড়াতাড়ি বাড়ী ফিরিয়া বেড়ার আগলটি নিজেই সরাইয়া ভিতরে আসিয় দাড়াইল । তখনও চাদ উঠে নাই—পূৰ্ব্ব দিগন্তে একটু আলোর আভাস দেপা দিয়াছে মাত্র। কিন্তু সেইটুকু আলো-রেখাকে বিরিয়া খিরিয়া কয়েকটি ছোট ছোট পাণীর সে কি আনন্দ-নৃত্য ! হিরণ মাথার উপরে সেইদিকে চাহিয়া চাহিয়া একটু শান্তি পাইল ; উঠানের এক কোণে বাঘা কুকুরট। তা’র বিচিত্র বর্ণের দেহখানি আঁকাইয়া বাকাইয়া এতক্ষণ শুইয়াছিল-কে একজন বেড়ার আগল খুলিল, সে তাহ দেখিয়াছে—সবেগে উঠিয় দাড়াইয়া ঘেউ ঘেউ করিতে লাগিল । হিরণ ভিতরে আসিয়া বলিল—‘ওরে থামৃ থাম্—আমি এয়েছি—আয়, আয় ? আর কিছুই বলিতে হইল না। বাঘ তিন লম্ফে হিরণের পায়ের কাছে আসিয়া লেজ নাড়িতে লাগিল ; কোথা হইতে একটি দুধের মতে শাদা বিড়াল লাফাইতে লাফাইতে ছুটিয়া আসিল—সে আসিয়া একেবারে হিরণের পায়ের চারি পাশে ঘুরিয়া ঘুরিয়া অবশেষে লুটাইয়৷ পড়িল—তাহার কণ্ঠ দিয়া এক প্রকার অবিশ্রাম ঘর্ঘর শব্দ উঠিতে লাগিল । ঘরের মধ্য হইতে শশীর কণ্ঠস্বর শোনা গেল‘এলি রে, হিরণ—এত দিন পরে এলি ? হিরণের ম৷ আজকাল কিছুই শুনিতে পায় নাহিরণ ঘরে আসিলে তাহাকে ভালো করিয়া দেখিতে পাইল না। শুধু বিড় বিড় করিয়া কি কতকগুলা কং বলিয়া গেল। হিরণ আসিয়া তাহার চিরক্কল্প ভা শশীর শিয়রে বসিল । ছোট্ট পুটলিটি খুলিয়া সামা কিছু ফলমূল, একটু মিছর-- যা সে সহর হইতে লই আসিয়াছে—শশীকে সে সব খাওয়াইল । মার কাে আসিয়া মাকেও কিছু কিছু খাওয়াইল—তারপর খাব জল ঢালিতে গিয়া দেখে, কলসীতে মোটেই জল নাই শশী বলিল,- জল কি আর আছে, দিদি ! আমি এ